Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

মানুষের উন্নয়নের টাকা কেটে কয়েকশো কর্মীকে বেতন দিচ্ছে ঝাড়গ্রাম পুরসভা!

ছিল ৭৩, এখন বেড়ে হয়েছে প্রায় সাড়ে চারশো! বিরোধীদের অভিযোগ, ২০১৩ সাল থেকে ঝাড়গ্রাম পুরসভায় একলপ্তে নিয়োগ করা হয়েছে কয়েকশো অস্থায়ী কর্মী। এখন ওই কর্মীদের বেতন মেটাতে গিয়ে পুরসভার নাভিঃশ্বাস উঠেছে। উন্নয়ন তহবিলের টাকা অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দিতে খরচ হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।

ঝাড়গ্রাম পুরসভা। — ফাইল চিত্র।

ঝাড়গ্রাম পুরসভা। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০২
Share: Save:

ছিল ৭৩, এখন বেড়ে হয়েছে প্রায় সাড়ে চারশো! বিরোধীদের অভিযোগ, ২০১৩ সাল থেকে ঝাড়গ্রাম পুরসভায় একলপ্তে নিয়োগ করা হয়েছে কয়েকশো অস্থায়ী কর্মী। এখন ওই কর্মীদের বেতন মেটাতে গিয়ে পুরসভার নাভিঃশ্বাস উঠেছে। উন্নয়ন তহবিলের টাকা অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দিতে খরচ হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।

ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মেয়াদ শেষ হচ্ছে ঝাড়গ্রাম পুরসভার বর্তমান তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের। পুর-নির্বাচনের নির্ঘণ্ট এখনও ঘোষণা না হওয়ায় ঝাড়গ্রাম পুরসভায় রাজ্য আপাতত প্রশাসক নিয়োগের পথে হাঁটতে চলেছে বলে প্রশাসনের এক সূত্রে খবর। প্রশাসকের দায়িত্ব বর্তাচ্ছে ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসকের উপর। পুরসভার এক সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম আমলে ঝাড়গ্রাম পুরসভায় চতুর্থ শ্রেণির ঠিকা কর্মী ছিলেন মাত্র ৭৩ জন। অভিযোগ, ২০১৩ সালে তৃণমূলের বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে কার্যত প্রতি ওয়ার্ড থেকে মুড়ি মুড়কির মতো তৃণমূল কর্মীদের অস্থায়ী কর্মীপদে নিয়োগ করা হয়েছে। এখন পুরসভার অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে চারশো।

ঝাড়গ্রাম পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা সিপিএম নেতা প্রদীপ সরকারের অভিযোগ, “বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা কেটে সেখান থেকে এই সব অস্থায়ী কর্মীদের টাকা মেটানো হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা তথ্য জানার আইনে আবেদন করে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছিলাম। পুর কর্তৃপক্ষ কোনও জবাব দেননি।” প্রদীপবাবুর দাবি, বাম আমলে প্রয়োজন ভিত্তিক ৭৩ জন ঠিকা কর্মী ছিলেন। কিন্তু তৃণমূল রাজনৈতিক স্বার্থে আরও চারশো অস্থায়ী কর্মী বহাল করেছে।

আরও পড়ুন: লালগড়ে ৭ শবর মৃত দুই সপ্তাহে

বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর দাবি, “পুরসভার এক একটি জলের পাম্প প্রতিদিন গড়ে মাত্র তিন ঘণ্টা চলে। অথচ প্রতি পাম্প হাউসে গড়ে তিন জন অস্থায়ী কর্মী আছেন।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘এক একটি ওয়ার্ডে সাফাই ও কাজ তদারকির জন্য ৮-১০ জন ঠিকা কর্মী আছেন। অথচ তাঁরা কেউই কাজ করেন না। কেবল তৃণমূলের মিছিল আর সভায় যান।” ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেস সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্যেরও কটাক্ষ, “সাড়ে চারশো অস্থায়ী কর্মী রেখেও তো গোটা শহর নরককুণ্ড।”

আরও পড়ুন: স্কুটারে মিড-ডের চালের বস্তা চাপিয়ে পালাতে গিয়ে ধরা পড়লেন প্রধান শিক্ষক!

প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, টাকার অভাবে পুজোর আগে গত তিন মাস অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দিতে পারেনি পুরসভা। পরে অন্য একটি প্রকল্পের টাকা কেটে কর্মীদের বেতন দেওয়া হয়েছে। পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন তথা শহর তৃণমূলের নেত্রী শিউলি সিংহও মানছেন, ‘‘পুজোর আগে টাকার অভাবে প্রায় তিন মাস অস্থায়ী কর্মীদের বেতন মেটানো সম্ভব হয়নি। পরে অন্য প্রকল্পের টাকা থেকে পুজোর আগে বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে ভাইস চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘পুরসভায় স্থায়ী কর্মীর অভাব। সেই কারণে জল সবরবাহ, জঞ্জাল পরিষ্কার, পুরসভার জঞ্জালবাহী ও জলবাহী গাড়ি চালানো, পথবাতি জ্বালানো ও নেভানোর জন্য অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করতে হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সকলেই কাজ করেন। কেউ বসে থাকেন না।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE