প্লাস্টিক-আবর্জনা পড়ে রয়েছে দিঘায় ঝাউবনে। নিজস্ব চিত্র
দিঘা: দিঘায় ঢোকার মুখে ‘গেট ওয়ে অফ দিঘা’-র কাছে সব গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চলে। আবার ওডিশা থেকে চন্দনেশ্বর হয়ে দিঘায় ঢোকার মুখেও যানবাহন থামিয়ে তল্লাশির ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। কিন্তু তারপরেও রাজ্যের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র দিঘায় প্লাস্টিক-পলিথিন দূষণ আটকানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। অথচ দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুরের মতো সমুদ্র সৈকতে ইতিমধ্যেই প্লাস্টিক ও পলিথিনের দূষণ আটকাতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সারা বছরই পর্যটকের কমবেশি ভিড় লেগে থাকে এই তিন সৈকতে। উৎসবে বা টানা দু-তিনদিনের ছুটিতে সেই ভিড় বাড়ে। অভিযোগ, পর্যটকের ভিড় বাড়লে পাল্লা দিয়ে বাড়ে প্লাস্টিক-সহ অন্য ধরনের দূষণও। দিঘার পিকনিক স্পট-সহ ঝাউবনে, রাস্তার ধারে, এমনকী সৈকতেও পড়ে থাকতে দেখা যায় থার্মোকলের থালা, প্লাস্টিক ও পলিথিনের পাশপাশি পটাটো চিপসের ঠোঙা, আইসক্রিমের প্লাস্টিকের বাটিও। এই অবস্থায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, দিঘায় ঢোকার মুখে কড়া নজরদারির পরেও সৈকত শহরে প্লাস্টিকের রমরমা ঠেকানো যাচ্ছে না কেন?
এ বিষয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গিয়েছে ডিএসডিএ (দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ) ও দিঘায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে। ডিএসডিএ-র বক্তব্য, দিঘায় ঢোকার দু’টি মুখে (একটি ওড়িশার চন্দনেশ্বর ও অন্যটি রামনগরে কাছে) রাস্তায় নজরদারি রাখা হয়েছে। একটি বেসরকারি সংস্থাকে ওই নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দিঘায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের বক্তব্য, তাঁদের জন্য নজরদারি ব্যবস্থা হলেও দিঘায় বিভিন্ন বাজার ও দোকানে সেই নজরদারির লেশমাত্র দেখা যায় না। পুরনো দিঘায় একটি বড় বাজার রয়েছে। তা ছাড়াও রয়েছে প্রচুর দোকান। খাবারের দোকান থেকে হস্তশিল্প সবই রয়েছে। সে সব দোকানে অবাধে প্লাস্টিকে-পলিথিনের প্যাকেটে জিনিস কেনা-বেচা চলে। তা ছাড়া গোটা দিঘায় রাস্তা ঘাটে প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে তেমন প্রচার নজরে পড়ে না।
রামনগর-১ এর বিডিও অনুপম বাগ বলেন, ‘‘দিঘায় প্রবেশের মুখে সমস্ত গাড়ি চেকিং করা হচ্ছে। পলিথিন, প্লাস্টিক ও থার্মোকল থাকলে গাড়ি থেকে নামিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পলিথিন পুরোপুরি নিষিদ্ধ করতে প্রশাসনের তরফে বহু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বোপরি মানুষকে সচেতন হতে হবে।’’
পর্যটকদের আরও অভিযোগ, শীতের মরসুমে বিভিন্ন পিকনিক পার্টি দিঘায় এসে যে ভাবে দূষণ ছড়ায় তাতেও প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়। সেই সময় এ নিয়ে কোনও তৎপরতা দেখা যায় না স্থানীয় প্রশাসনের। দিঘায় মাঝেমাঝেই আসেন এমনই একজন উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের অনন্ত সেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি পুরীর সৈকতে গিয়েছি। সেখানেও অনেকে সৈকতে প্লাস্টিকের কাপ, ঠোঙা ফেলেন। কিন্তু এটাও দেখেছি, কিছু সময় পর পর তা পরিষ্কার করার লোক রয়েছে। অথচ দিঘায় এরকম কোনও ব্যবস্থা চোখে পড়েনি।’’ তিনি জানান, বর্তমানে সকলেই পরিবেশ সচেতন। দিঘা প্লাস্টিকমুক্ত হোক এটা পর্যটকেরাও চান। এর জন্য প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করলে তাকে স্বাগত জানাবেন তাঁরা।
দোকানে প্লাস্টিক-পলিথিনের ঠোঙা ব্যবহার নিয়ে স্থানীয় দোকানদার দাবি, এখানকার বাসিন্দারা তো বটেই পর্যটকেরাও জিনিস কিনতে এসে পলিথিনের ব্যাগ চান। তাই দোকানদারদের দোকানে তা রাখতে হয়।
দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের এক আধিকারিক জানান, সৈকতে প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে প্রচার,অভিযান সবই চলে। কিন্তু তার পরেও যে ভাবে দূষণ নিয়ে অভিযোগ উঠছে তাতে অভিযানের পাশাপাশি জরিমানার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। প্রয়োজনে আইন করতে হবে।
চলবে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy