থমথমে: ঘাটাল কলেজের গেটে পুলিশের গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
এবিভিপি-কে ঠেকাতে সামাজিক মাধ্যমকে হাতিয়ার করে ছাত্রছাত্রীদের মন জয়ের চেষ্টা শুরু করল টিএমসিপি।
শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ ইউনিটের পক্ষ থেকে একটি হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে। গ্রুপের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ টিএমসিপি কমপ্লেন বক্স’। ওই গ্রুপের একটি লিঙ্ক ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ-এর মাধ্যমে প্রচার করছেন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। হোয়াটসঅ্যাপ করেও পাঠানো হচ্ছে পড়ুয়াদের। লিঙ্ক-এ ক্লিক করলেই গ্রুপে যোগ দেওয়া যাবে। ওই গ্রুপে রাজ কলেজের ছাত্রছাত্রীরা যে কোনও সমস্যা এবং অভিযোগের কথা জানাতে পারবেন। কলেজ সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ে আলোচনা করাও যাবে ওই গ্রুপে। ফেসবুকে গ্রুপের প্রচার-পোস্টে টিএমসিপি-র পক্ষ থেকে লেখা হয়েছে, ‘ছাত্রছাত্রীদের যে কোনও অভিযোগের বিষয়ে জরুরিকালীন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধীর কোনও ক্ষমা নেই, সে যেই হোক না কেন’।
প্রচার পোস্টের এই শব্দবন্ধকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তাঁদের মতে, লোকসভা ভোটের পর থেকে দলের সমস্ত শাখা সংগঠনকে সক্রিয় করার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠান বিরোধী আন্দোলনে নামার ক্ষেত্রেও যে ছাড়পত্র মিলবে তেমন ইঙ্গিতও দেওয়া রয়েছে। হয়ত এ সব কথা চিন্তা করেই লেখা হয়েছে, ‘অপরাধীর কোনও ক্ষমা নেই, সে যেই হোক না কেন’। যদিও টিএমসিপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা কার্যকরী সভাপতি আর্য ঘোষ জানাচ্ছেন, গেরুয়া ছাত্র সংগঠন যাতে কোনও ভাবে কলেজে ফায়দা না তুলতে পারে, সে জন্য এই গ্রুপ খোলা হয়েছে। আর্য বলেন, ‘‘কলেজ সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা যাতে সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষ অথবা সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাধান করে ফেলা যায়, সেই কারণেই এই উদ্যোগ। কলেজে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে বহিরাগতরা। সেই কারণে পড়ুয়ারা যাতে কোনও ভাবেই বিভ্রান্ত না হন সেটা দেখা হচ্ছে। পড়ুয়ারা খোলামনে অভিযোগ জানাতে পারবেন। শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখাটাও আমাদের উদ্দেশ্য।’’
কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সৌরভ চক্রবর্তী ও তৃতীয় বর্ষের শুভদীপ সেনগুপ্তকে ঝাড়গ্রাম শহর টিএমসিপি-র পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শহর ও জেলা টিএমসিপি-র নেতৃত্বরাও রয়েছেন। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সৌরভ, তৃতীয় বর্ষের শুভদীপ বলেন, ‘‘লিঙ্কে ক্লিক করলেই গ্রুপে যোগ দেওয়া যাবে। তবে কেবলমাত্র ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের ছাত্রছাত্রীদের গ্রুপে রাখা হচ্ছে। যারা পড়ুয়া নন, তাঁরা যোগ দিলে তাঁদের রিমুভ করে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিনিয়ত গ্রুপে কে কী অভিযোগ জানাচ্ছেন, তা দেখে পদক্ষেপ করা হবে। গত ১০ জুলাই থেকে গ্রুপটি চালু করা হয়েছে।’’
ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনটি বিজেপি দখল করার পরে ঝাড়গ্রাম জেলার সরকারি ও বেসরকারি কলেজগুলিতে ইউনিট খুলেছে গেরুয়া ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। শুরু হয়েছে বিক্ষিপ্ত গোলমাল। কয়েকটি কলেজে টিএমসিপি-র সদস্যদের ভাঙিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে এবিভিপি-র বিরুদ্ধে। কয়েকদিন আগে ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের বাইরে এবিভিপি-র পতাকা ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। দিন কয়েক আগে কলেজে এবিভিপি-র সমর্থক এক ছাত্রীকে চড় মারার অভিযোগ ওঠে টিএমসিপি-র কলেজ ইউনিটের এক নেত্রীর বিরুদ্ধে। পরে অবশ্য দু’জনেই মিটমাট করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। অভিযোগকারী ছাত্রীটি জানিয়ে দেন, তিনি কেবল পড়াশোনা নিয়ে থাকতে চান। কোনও ঝামেলায় যেতে চান না। এবিভিপি-র জেলা নেতা ধ্রুবকুমার মাহাতো বলেন, ‘‘কলেজে দীর্ঘদিন নির্বাচিত ছাত্র সংসদ নেই। ইউনিয়ন রুম টিএমসিপি দখল করে রেখেছে। এখন আমরা ইউনিট খোলায় ওরা ভয় পেয়ে গিয়ে এসব করছে। তবে এতে কিছু লাভ হবে না। নির্বাচিত ছাত্র সংসদের মাধ্যমেই পড়ুয়াদের সমস্যা মিটবে। সেই দাবিতে আমরা আন্দোলনে নামছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy