আদিবাসী এলাকায় বন্ধ স্কুল খুলতে রাজ্যকে নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের। শিক্ষকের অভাবে ওই স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। অবিলম্বে সেখানে শিক্ষক নিয়োগ করে পঠনপাঠন চালু করার নির্দেশ দিল আদালত। হাই কোর্ট জানায়, প্রয়োজনে বাইরের স্কুল থেকে শিক্ষক এনে আদিবাসী এলাকার ওই স্কুল চালু করতে হবে। রাজ্যও স্কুল চালুর পক্ষে আদালতে সওয়াল করে। তারা জানায়, স্কুল খুলতে সব রকম পদক্ষেপ করা হবে। ওই স্কুলে তিন জন স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। সেখানে নিয়োগ করা হবে অতিথি শিক্ষকও। আশপাশের অন্য স্কুল থেকে শিক্ষক স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।
গত বছর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের লোয়াদা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁকড়া জুনিয়র হাই স্কুলে পড়ুয়া ভর্তি বন্ধ রয়েছে। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, শিক্ষকের অভাবে পড়ুয়া ভর্তি বন্ধ রাখা হয়েছে। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, ওই স্কুলে আগে ১৫০-২০০ জন পড়ুয়া ছিল। প্রশাসন শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ করে দেয়। এখন স্কুল বন্ধ করে দিতে চাইছে। স্কুল বাঁচাতে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের সওয়াল, ওই স্কুলের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী তফসিলি জনজাতির। স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চার কিলোমিটার দূরের স্কুলে যেতে অনিচ্ছুক অনেক পড়ুয়া। এতে স্কুলছুটের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্কুলটি চালু করা না গেলে ৭০-৮০ শতাংশ আদিবাসী পরিবারের সন্তানেরা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।
আরও পড়ুন:
হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এ ভাবে স্কুল বন্ধ হলে এলাকার মানুষের উপর তার প্রভাব পড়ে। বৃদ্ধি পাবে স্কুলছুটের সংখ্যা। শিক্ষায় বিমুখ হয়ে শিশুশ্রমিকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে পারে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের কাছে শিক্ষা পৌঁছে দেওয়া দরকার। সেখানে শিক্ষকের অভাবে একটি স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে এটা মানা যায় না। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, অবিলম্বে শিক্ষক নিয়োগ করে ওই স্কুল চালু করতে হবে। যত শিক্ষক প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করতে হবে শিক্ষা দফতরকে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে সেখানে পড়ুয়া ভর্তি নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে রাজ্যকে। কোনও শিশুই যেন শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, আদালতের ওই নির্দেশের পরে পশ্চিম মেদিনীপুরের ওই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। আপাতত তিন জন শিক্ষককে সেখানে পাঠানো হচ্ছে।