Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
নজরে শালবনি

ভোটকর্মীদের ‘যত্নে’ রাখতে ‘তৎপর’ তৃণমূল

দুপুর তখন ১টা। মাঝ চৈত্রের গনগনে রোদের আঁচে সেদ্ধ হওয়ার জোগাড়। তার মাঝেই শালবনির শাঁখাশোল ভোটকেন্দ্রের অদূরে গাছের ছায়ায় অপেক্ষা করছিল তৃণমূলের গুটিকয়েক কর্মী। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাহারায় সেই সময় গাড়ি থেকে নামলেন কয়েকজন ভোটকর্মী।

খড়িকাশুলির একটি বুথে ঢুকছেন ভোটকর্মীরা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা।

খড়িকাশুলির একটি বুথে ঢুকছেন ভোটকর্মীরা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
শালবনি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৬ ০১:০২
Share: Save:

দুপুর তখন ১টা। মাঝ চৈত্রের গনগনে রোদের আঁচে সেদ্ধ হওয়ার জোগাড়। তার মাঝেই শালবনির শাঁখাশোল ভোটকেন্দ্রের অদূরে গাছের ছায়ায় অপেক্ষা করছিল তৃণমূলের গুটিকয়েক কর্মী। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাহারায় সেই সময় গাড়ি থেকে নামলেন কয়েকজন ভোটকর্মী।

তাঁদের দেখেই এগিয়ে এলে কয়েকজন তৃণমূল কর্মী বলেই ফেললেন, ‘‘বাইরে থেকে এসেছেন। কিছু প্রয়োজন হলে আমাদের বলতে পারেন। আমরা ব্যবস্থা করে দেব।’’ ও সব কথায় অবশ্য তেমন পাত্তা না দিয়ে এগিয়ে গেলেন ভোট কর্মীরা। যা দেখে তৃণমূল কর্মীরাও পিছু হঠলেন। একইভাবে, মঙ্গলপাড়া, খড়িকাশুলির মতো ভোটগ্রহণ কেন্দ্রেও দেখা গেল, ভোটকর্মীদের সঙ্গে সখ্যতা তৈরিতে ব্যস্ত তৃণমূলের কর্মীরা।

এ তো গেল ভোটকেন্দ্রের চিত্র। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, শনিবার বিকেল ৪টের সময় প্রথম দফার ভোটের প্রচার শেষ হয়ে গিয়েছে। যদিও রবিবার দুপুরেও তৃণমূল বাড়ি বাড়ি প্রচার করছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। এ সব অভিযোগকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ শালবনির তৃণমূল প্রার্থী শ্রীকান্ত মাহাতো। তিনি বলছেন, ‘‘এ সব বিরোধীদের অপপ্রচার, কুৎসা। মানুষ তাঁর জবাব দেবেন। এখনও প্রচার করব কেন?’’ পরক্ষণেই তাঁর বক্তব্য, ‘‘পরিচিতদের বাড়িতে গল্প করতে যাওয়াও নিষেধ না কি!’’

চন্দ্রকোনা রোডে পথচলতি একজনকে ভোট নিয়ে প্রশ্ন করতেই তাঁর সংক্ষিপ্ত উত্তর, “ভোট হচ্ছে। ঠিকই আছে।” কাকে ভোট দেবেন, কার দিকে পাল্লা ভারী? আর কোনও উত্তর দেওয়ার ঝুঁকি নিলেন না তিনি। মাথাটা নাড়িয়ে তড়িঘড়ি এগিয়ে গেলেন তিনি। শালবনিতেও একজনকে এই প্রশ্ন করাতে তিনি কোনও উত্তর দিতে চাননি। মানুষের এই নীরবতা নিয়ে অবশ্য চিন্তিত নয় তৃণমূল। তাঁদের ব্যাখ্যা, রাজ্যের মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছেন। যদিও বিরোধীরা অবশ্য এই নীরবতার মধ্যেই আশার আলো দেখছে। এক সিপিএম নেতার কথায়, মানুষ যদি নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন, তবে তৃণমূল বুঝতে পারবে বাস্তবটা ঠিক কী।

গতবার পরিবর্তনের নৌকোয় সওয়ার হয়ে দিব্যি জিতেছিলেন শ্রীকান্তবাবু। এ বার লড়াইটা একটু কঠিন, তা মানছেন দলের একাংশ নেতাও। দলের এক সূত্রে খবর, গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে চিন্তায় নেতৃত্ব। তাছাড়া শালবনির প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানা না হওয়ায় কিছু মানুষের ক্ষোভও রয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, সুষ্ঠু ভোট হলে বিধায়কের মুকুট রক্ষা কঠিন। তাই ‘ভোট করানোর’ কথা বলছেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা।

অভিযোগ, সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়েও হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল। সাফ জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, “ভোট দিতে যাওয়ার দরকার নেই।” শালবনির সিপিএম প্রার্থী শ্যামসুন্দর পাণ্ডের অভিযোগ, “বিরোধী দলের এজেন্টরা যাতে বুথে বসতে না পারে, সে জন্য এজেন্টদেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে!” ভোটের দিন কমিশন কড়া নজরদারি না চালালে অবাধ নির্বাচন অসম্ভব বলেই মনে করছেন শ্যামসুন্দরবাবু।

রবিবার সারাদিন নিজেদের দলীয় কার্যালয়েই হাল্কা মেজাজেই কাটালেন সিপিএম প্রার্থী শ্যামসুন্দরবাবু বা বিজেপি প্রার্থী ধীমান কোলে। রাজনীতিতে তাঁদের দু’জনের অবস্থান দুই মেরুতে। যদিও ভোটের চব্বিশ ঘণ্টা আগে তাঁদের গলাতেও একই কথা, ‘‘কমিশন যদি ভোটারদের নিজের ভোট নিজে দেওয়ার পাকা

অন্য বিষয়গুলি:

shalbani tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE