শান্তির বার্তা নিয়ে খড়্গপুরের পথে। মঙ্গলবার রামপ্রসাদ সাউয়ের তোলা ছবি।
ক’দিন ধরেই গোলমালে ছন্দপতন হয়েছে রেলশহরের। শহর জুড়ে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। এই পরিস্থিতিতে শহরে শান্তি মিছিল করল তৃণমূল। মঙ্গলবার খড়্গপুর শহরের বড়বাতি থেকে পুরতনবাজার পর্যন্ত মিছিলে ভালই লোক সমাগম হয়েছিল। পরে সভাও হয়।
এ দিন মিছিলের সময়টুকুর জন্য ১৪৪ ধারা শিথিল করা হয়েছিল। মিছিল ঘিরে ছিল অভূতপূর্ব নিরাপত্তার আয়োজন। মেটাল ডিটেক্টর থেকে ড্রোন ক্যামেরা, বাদ ছিল না কিছুই। বড়বাতিতে মিছিল শুরুর আগে একাধিক মেটাল ডিটেক্টর দরজা দিয়ে সকলকে পরীক্ষা করা হয়। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পুলিশ আধিকারিক-সহ বিশাল বাহিনী ঘিরে ছিল মিছিলটিকে। বড়বাতি থেকে পুরাতনবাজার পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে দড়ি দিয়ে ব্যারিকেট করা হয়েছিল। ড্রোন ক্যামেরা ও বিভিন্ন উঁচু বাড়ির ছাদে মোতায়েন পুলিশকর্মীরা দূরবীন দিয়ে নজরদারি চালান। মিছিল শেষে পুরাতনবাজারের জনসভায় তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “এই মিছিল প্রমাণ দিল শহরে শান্তি রয়েছে। তাই এত সুষ্ঠুভাবে মিছিল সুসম্পন্ন হয়েছে। এতে পুলিশেরও বড় ভূমিকা রয়েছে। এ জন্য জেলা পুলিশকে ধন্যবাদ।”অজিতবাবু ছাড়াও মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, বিধায়ক বিক্রম প্রধান, দীনেন রায়-সহ জেলার তৃণমূল বিধায়কেরা। এ ছাড়াও ছিলেন বিভিন্ন মঠ-মিশন, গির্জা, মসজিদের প্রধানেরা একই সারিতে হাত ধরে হেঁটেছেন। গোষ্ঠী বিভেদ ভুলে পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার, তৃণমূলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী, জেলা নেতা জহরলাল পাল, নির্মল ঘোষেদেরও একসঙ্গে হাঁটতে দেখা যায়।
গোলবাজারে ফিরছে স্বাভাবিক ছন্দ। নিজস্ব চিত্র।
এ দিন মিছিলের পরেই গত এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ হয়ে থাকা গোলবাজারও অনেকটা ছন্দে ফিরেছে। অধিকাংশ দোকানপাট খুলেছে। যদিও তৃণমূলের এই মিছিলে খড়্গপুর শহরের মানুষের উপস্থিতি ছিল কম। তৃণমূলের দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে বাসে, পিক-আপ ভ্যানে আসা কর্মী-সমর্থকেরা মিছিলে যোগ দেন। সবংয়ের তৃণমূল নেতা তাপস পাত্র যেমন বলেন, “আমরা ১৩টি অঞ্চল থেকে একটি করে বাস ও একটি করে ট্রেকারে লোক নিয়ে এসেছি।’’ দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম প্রধানেরও বক্তব্য, “আমাদের দাঁতন ব্লক থেকে চারটি বাস ও একটি গাড়িতে প্রায় চারশো লোক আনা হয়েছে।’’ এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য নেতা তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “শহরের মানুষ তৃণমূলের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। তাই বাইরে থেকে লোক আনতে হয়েছে। আর তৃণমূলের জন্যই তো শহর অশান্ত হচ্ছে।’’ একই সুরে জেলার বাম নেতা বিপ্লব ভট্টের বক্তব্য, “খড়্গপুরকে যারা অশান্ত করছে, তাদের শান্তি মিছিল শহরবাসী মেনে নেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy