Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Ghatal TMC

হারের গুঁতোয় এক টেবিলে তৃণমূলের যুযুধানেরা

জুন মালিয়া বিধায়ক থেকে সাংসদ হয়েছেন। জুন যেখানের বিধায়ক ছিলেন, লোকসভা ভোটে সেই মেদিনীপুরেই জোর ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪ ০৬:৫৬
Share: Save:

লোকসভার ফলপ্রকাশের পরে হঠাৎই দু’পক্ষের সুর নরম! পুরপ্রধান অপসারণের দাবি নেই। দলের শহর সভাপতি অপসারণের দাবিও নেই। সব কিছু দেখে তৃণমূলের একাংশ কর্মী মনে করাচ্ছেন, ‘আর কে কী দাবি করবেন! পুরপ্রধানের ওয়ার্ডে দল পিছিয়ে। শহর সভাপতির ওয়ার্ডেও দল পিছিয়ে। শুধু কি তাই! সার্বিকভাবে পুরো শহরেই তো দল পিছিয়ে। এগিয়ে বিজেপি।’ আপাতত, তাই বিভেদ ভুলে তৃণমূলের দু’পক্ষ এক টেবিলে! সাংগঠনিক পর্যালোচনায়।

রবিবার শহরে তৃণমূলের বৈঠক হয়েছে। বৈঠক শেষে রাতে ছিল খাওয়াদাওয়ার আয়োজনও। বৈঠকে ডাকা হয়েছিল দলের পুর-প্রতিনিধি, দলের ওয়ার্ড সভাপতি প্রমুখকে। তৃণমূলের দু’পক্ষই এসেছে। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে হাতে গোনা কয়েকজন পুর-প্রতিনিধি আসেননি। তৃণমূলের শহর সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডব বলেন, ‘‘সাংগঠনিক বৈঠক ছিল।’’ পুরপ্রধান সৌমেন খান বলেন, ‘‘সাংগঠনিককথাবার্তা হয়েছে।’’

জুন মালিয়া বিধায়ক থেকে সাংসদ হয়েছেন। জুন যেখানের বিধায়ক ছিলেন, লোকসভা ভোটে সেই মেদিনীপুরেই জোর ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল। মেদিনীপুর শহরে তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে ৫ হাজারের বেশি ভোটে। ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টিতে লিড পেয়েছে শাসক দল। বাকি ১৫টিতেই বিজেপি। অথচ, গত পুরভোটে শহরে বিজেপি একটি ওয়ার্ডও পায়নি। পুরপ্রধান সৌমেনের সঙ্গে ‘অম্ল- মধুর’ সম্পর্ক পুর- প্রতিনিধি তথা দলের শহর সভাপতি বিশ্বনাথের। লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগে পুরপ্রধানের অপসারণ চেয়ে সুর চড়িয়েছিলেন বিশ্বনাথের অনুগামীরা। পুরসভায়অবস্থান- বিক্ষোভও হয়েছিল।

সৌমেন জুনের অনুগামী হিসেবে পরিচিত। বিশ্বনাথ দলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার অনুগামী হিসেবে পরিচিত। সদ্য প্রাক্তন বিধায়ক, অধুনা সাংসদ জুনের সঙ্গে দলের জেলা সভাপতি সুজয়ের সম্পর্ক শীতল বলেই শোনা যায়। জুন ২৭ হাজারের কিছু বেশি ভোটে লোকসভা আসনে জিতেছেন। তবে তিনি তাঁর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সামান্য লিড পেয়েছেন। শোনা যায়, সুজয় চেয়েছিলেন দলের শহর সভাপতি বিশ্বনাথকে শহর নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক করতে। ‘অন্তর্ঘাতে’র আশঙ্কায় না কি বেঁকে বসেছিলেন জুন। তাঁর ইচ্ছায় নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছিল সৌরভ বসুকে। সৌরভ পুর- প্রতিনিধি তথা পুর- পারিষদও। এর পরপরই তৃণমূলের একাংশ নেতাকর্মী কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। শহরে ভোটের প্রচারে তাঁদের সক্রিয়ভাবে দেখাও যায়নি।

২০২১ এর বিধানসভায় মেদিনীপুর আসনটি জিতেছিল তৃণমূল। একুশে প্রায় ২৪,৩০০ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন জুন। এ বারের লোকসভায় মেদিনীপুর বিধানসভা থেকে তৃণমূলের লিড কমে হয়েছে ২,১৭০ ভোটের। বিধানসভার অন্তর্গত গ্রামাঞ্চল থেকে লিড এসেছে প্রায় ৭,২০০। আর শহরে তৃণমূল বিজেপির চেয়ে পিছিয়ে প্রায় ৫,১০০ ভোটে। পুরপ্রধান সৌমেনের ওয়ার্ড, তৃণমূলের শহর সভাপতি বিশ্বনাথের ওয়ার্ড, মহিলা তৃণমূলের শহর সভাপতি মৌ রায়ের ওয়ার্ড, দলের শহর নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক সৌরভের ওয়ার্ডে পিছিয়ে তৃণমূল। সুজয়ের স্ত্রী তথা পুর- প্রতিনিধি মৌসুমী হাজরার ওয়ার্ডে তৃণমূল এগিয়ে। অবশ্য এগিয়ে থাকার ব্যবধান খুব বেশি নয়। এই আবহে রবিবার ওই বৈঠক হয়েছে। এক জায়গায় দেখা গিয়েছে সুজয়, সৌমেন, বিশ্বনাথ, সৌরভদের।

আপাতত, হারের গুঁতোয় বিভেদ ভুলে দু’পক্ষ পাশাপাশি। ঠেলায় না- পরলে বেড়াল গাছে ওঠে না।

অন্য বিষয়গুলি:

midnapore TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy