জনরোষ থেকে বাঁচাতে হেলমেট পরিয়ে অভিযুক্তকে (হলুদ টি-শার্ট) নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
জুয়ার আসরে বিবাদ। বিবাদ থেকে মারামারি। তাতেই নিহত তৃণমূল কর্মী। অভিযোগ দলেরই কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে। চন্দ্রকোনা রোডের সাতবাঁকুড়া পঞ্চায়েতের সাঁইনারা গ্রামের ঘটনা।
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতের নাম হরিপদ হাজারি (৪৭)। বাড়ি সাঁইনারা গ্রামেই। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানিয়েছেন। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’’
বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনার পর শুক্রবার সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়ায় সাঁইনারা গ্রামে। গ্রামবাসীর অভিযোগ, রাতে গ্রামেরই তিনজন হরিপদকে মারধর করে গাছের ডালে ঝুলিয়ে দেয়। অভিযুক্তদের ২ জন তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। গ্রামবাসীর আরও দাবি, অভিযুক্তদের একজন তৃণমূল নেতা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধানের ভাই, আর একজনের স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্য। ওই দু’জনের বাড়ি ঘিরে এ দিন সকাল থেকেই বিক্ষোভ চলে। গ্রামের বাসিন্দা অপর এক অভিযুক্তকে আটকে খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়। ডিএসপি (অপারেশন) দুর্লভ সরকারের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী গ্রামে গিয়ে অবস্থা সামাল দেয়। জনরোষের কবল থেকে উদ্ধার করে চন্দ্রকোনা রোড পুলিশ বিট হাউসে আনা হয় ৩ অভিযুক্তকে। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সাঁইনারা গ্রামের দেশ কমিটির উদ্যোগে চব্বিশ প্রহর কীর্তনের আসর বসে। বৃহস্পতিবার ছিল শেষদিন। ওইদিন রাতে বহিরাগত শিল্পীদের নিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল পালাকীর্তনের। কীর্তনের আসর থেকে কিছুটা দূরে চলছিল জুয়ার আসর। সেই আসরে গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার মধ্যে প্রথমে বিবাদ, পরে মারামারি শুরু হয়। অভিযোগ, সেখানে মারধর করা হয় হরিপদকে, পরে তাঁকে মেরে একটি গাছের ডালে ঝুলিয়েও দেওয়া হয়। রাতেই পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ দিন সকাল থেকেই গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরাও। এক অভিযুক্তকে ধরে খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়। অপর এক অভিযুক্তের বাড়ি ঘেরাও করে রাখেন উত্তেজিত জনতা। জনরোষের কবলে পড়া এক অভিযুক্ত প্রাক্তন তৃণমূল প্রধানের ভাই অরূপ ঘোষকে বাড়ি থেকে হেলমেট পড়িয়ে বার করে গাড়িতে তোলে পুলিশ। অরূপের সঙ্গে গ্রাম থেকে তুলে আনা হয় অপর দুই অভিযুক্ত সুকুমার সেন ও প্রশান্ত মহাদণ্ডপাটকেও। পরে ৩ জনকেই গ্রেফতার করা হয়। তৃণমূল সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে অরূপ ও সুকুমার তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। প্রশান্ত একসময় বিজেপি করলেও, এখন আর কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। যদিও অভিযুক্তদের নিয়ে মুখ খুলতে চাননি চন্দ্রকোনা রোডের তৃণমূল নেতৃত্ব।
চন্দ্রকোনা রোডের তৃণমূল নেতা রাজীব ঘোষ বলেন, ‘‘যিনি মারা গিয়েছেন তিনি তৃণমূল কর্মী। দোষীদের ছাড়া হবে না।" দলের ব্লক মনিটরিং কমিটির চেয়ারম্যান নিমাইরতন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এক ব্যক্তিকে মেরে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেই ব্যক্তি গ্রামের তৃণমূল কর্মী বলে জানি। কারা জড়িত পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’’ স্থানীয় বিধায়ক রাজ্যের মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো বলেন, "গ্রামে কীর্তন হচ্ছিল। সেখানে জুয়ার আসরে মারামারির ঘটনা ঘটে। তাতেই মারা গিয়েছেন এক তৃণমূল কর্মী। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy