প্রতীকী চিত্র।
আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে তৈরি হয়েছিল ক্ষত। এরই মধ্যে হাজির আবাস যোজনার তালিকা। আর এই তালিকায় ভোটের আকাশে সিঁদূরে মেঘ দেখছে শাসক দল।
আশঙ্কা অমূলক নয়। কারণ, স্থানীয় সূত্রের খবর আবাস যোজনা যে তালিকা এসেছে তাতে গরমিল বিস্তর। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন জায়গায় তালিকায় শাসকদলের নেতাকর্মী, ঘনিষ্ঠদের নাম রয়েছে অজস্র। এমনকি, একই পরিবারের অনেকে নাম তালিকায় থাকলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে বাদ পড়েছেন প্রকৃত গৃহহীনরা। ফলে সুর চড়াচ্ছে বিরোধীরা। অরাজনৈতিক মঞ্চ গড়েও হচ্ছে প্রতিবাদ।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে জেলার গ্রামীণ এলাকায় প্রায় ৩৩ হাজার বাড়ি হওয়া কথা। বছর আটেক আগে আর্থ- সামাজিক জাতিগত সমীক্ষার ভিত্তিতে ঠিক হয়, গৃহহীন বাসিন্দারা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাকাবাড়ি পাবেন। সেইমতো, সমীক্ষা করে গৃহহীন ও পাকা বাড়ি নেই এমন পরিবারদের চিহ্নিত করে ধাপে ধাপে বাড়ি দেওয়ার অর্থ মঞ্জুর করা হয়। বছর দুয়েক আগে করা সমীক্ষার রিপোর্টের উপর ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকা নিয়েই জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে হইচই।
আবাস যোজনা নিয়ে আমপানের মতো ঝড় ওঠার ইঙ্গিত পৌছেছে শাসকের অন্দরেও। জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে, প্রতিটি ব্লকের নেতৃবৃন্দকে সতর্ক করে বলে দেওয়া হয়েছে আমপানে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে, আবাস নিয়ে যাতে কেউ আঙুল তুলতে না পারে তা এখন থেকেই নজর রাখতে হবে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে অনেক ব্লকই। যেমন শালবনিতে দলীয় কর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সতর্ক বার্তা দিয়ে পোস্ট করা হয়েছে – ‘শালবনিবাসীদের কাছে আমাদের অনুরোধ, কোনওভাবেই কোনও জায়গায় প্রলোভিত হয়ে কাউকে আর্থিক বা অন্যান্য সহযোগিতার মাধ্যমে বাড়ি পাওয়ার জন্য কোনও উৎকোচ প্রদান করবেন না। এতে কেউ চাপ দিলে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন’।
বসে নেই প্রশাসনও। এই তালিকায় নামের তালিকা ধরে এখন আধার লিঙ্কের কাজ চলছে। আপাতত ২৪ অগস্ট পর্যন্ত আধার লিঙ্কের জন্য এই ‘কনসেন্ট ফর অথেনটিকেশন’ এর কাজ চলবে বলে জানা গিয়েছে। এরই মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। যেমন গড়বেতা ১ ব্লক প্রশাসন প্রোফর্মা ছাপিয়ে প্রত্যেক পঞ্চায়েত সদস্যকে দিয়েছে। সেই প্রোফর্মায় পঞ্চায়েত সদস্য নিজে স্বাক্ষর করে মোট কাঁচাবাড়ির সংখ্যা উল্লেখ করে স্বীকারোক্তি দেবেন এই বলে— 'আমার সংসদে যাঁদের পাকার বাড়ি আছে ও আগে যাঁরা পাকার বাড়ি পেয়েছেন, তাঁদের নাম, আধার নম্বর, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কোনওভাবে নথিভুক্ত হবে না’। সেইসঙ্গে উপভোক্তাও অঙ্গীকারপত্রে স্বাক্ষর করে লিখবেন তিনি এর আগে কোনওরূপ সরকারি গৃহ প্রকল্পের সুবিধা পাননি। উপভোক্তার অঙ্গীকারপত্রে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকেও স্বাক্ষর করার নিদান দেওয়া হয়েছে।
ঘাটাল, চন্দ্রকোনা, দাসপুরের ব্লক গুলিতেও এনিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘তালিকায় নাম থাকা সবাই যে আবাস যোজনার সুবিধা পাবেন তা নয়, এখন শুধু আধার লিঙ্ক হচ্ছে, এরপর তথ্য যাচাই করে ঝাড়াইবাছাই হবে, অযথা আতঙ্কিত বা উৎফুল্ল হওয়ার কিছু নেই।’’ (তথ্য সহায়তায়: রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য, বরুণ দে ও অভিজিৎ চক্রবর্তী)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy