Advertisement
E-Paper

কুতুবের থেকে উঁচু স্তম্ভে ভূস্বর্গমুখী রেল

ইউএসবিআরএল প্রকল্পের অন্তর্গত ৩৯ নম্বর সেতুর এ হল পাঁচ নম্বর স্তম্ভ। প্রায় ৪৯০ মিটার দীর্ঘ এ সেতুটি। এই রেল প্রকল্পের ৯২৭টি সেতুর মধ্যে এ হল তৃতীয় বৃহত্তম সেতু।

কুতুব মিনার।

কুতুব মিনার। —ফাইল চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:১৮
Share
Save

কুতুব মিনারকেও উচ্চতায় হার মানাচ্ছে কাশ্মীর উপত‍্যকার গিরিখাতের বুকে মাথা চাড়া দেওয়া একটি স্তম্ভ। কুতুবের উচ্চতা ৭৩ মিটার। আর উধমপুর শ্রীনগর বারামুলা রেল লিঙ্ক প্রকল্পের (ইউএসবিআরএল) অন্তর্গত ৩৯ নম্বর সেতুর শীর্ষ বিন্দু এই স্তম্ভটি ১০৫ মিটার উঁচুতে রয়েছে। ৩২তলা বাড়ির সমান। খাস দিল্লির সঙ্গে ভূস্বর্গকে রেলপথে যুক্ত করার লক্ষে এই স্তম্ভটি ছুঁয়ে ট্রেন চলাচল নিশ্চিত করাই এখন রেল কর্তৃপক্ষের সামনে দীর্ঘ সংগ্রামের শেষ ধাপ। বানিহাল থেকে কাটরার দুর্গম পার্বত‍্য পথে রেলযোগের কঠিন লক্ষ‍্যপূরণ তবেই বাস্তব হবে।

ইউএসবিআরএল প্রকল্পের অন্তর্গত ৩৯ নম্বর সেতুর এ হল পাঁচ নম্বর স্তম্ভ। প্রায় ৪৯০ মিটার দীর্ঘ এ সেতুটি। এই রেল প্রকল্পের ৯২৭টি সেতুর মধ্যে এ হল তৃতীয় বৃহত্তম সেতু। জম্মু থেকে উত্তরে কাটরা হয়ে দুর্গম পার্বত‍্য পথ বেয়ে উপত‍্যকার প্রবেশপথে রয়েছে সেতুর উচ্চতম স্তম্ভটি। উপত‍্যকার প্রবেশদ্বার রিয়াসি স্টেশনের একাংশও ওই স্তম্ভ বহন করছে। অঞ্জি নালার উপরে তৈরি কংক্রিটের ওই অতিকায় স্তম্ভের চারপাশের পাথর আলাদা করে ইস্পাতের জাল দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়েছে। যাতে বৃষ্টি বা ধসের কারণে স্তম্ভের ভিতের মাটি আলগা না হয়ে যায়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির সঙ্গে কাশ্মীর উপত‍্যকার রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা। তার শেষ পর্বে কুতুব মিনারকে হার মানানো, ওই সুউচ্চ স্তম্ভের উপরে রিয়াসি স্টেশন দিয়ে ট্রেন চলাচল সম্পন্ন করতে হবে।

খাড়াই পাহাড়ের বুক চেরা সুড়ঙ্গের পথ বেয়েই উপত‍্যকার রিয়াসি জেলার সদরে গড়ে উঠেছে রিয়াসি স্টেশন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮০৭.৮ মিটার উঁচু। ওই তল্লাটে এখন ট্রেন চলাচলের শেষ পর্বের মহড়া চলছে। ৩৯ নম্বর সেতুটির পরেই রয়েছে এই রেল প্রকল্পের মুকুট বলে পরিচিত চেনাব ব্রিজ। চন্দ্রভাগা নদীর উপরে চেনাব ব্রিজটি রেল চলাচলের উপযুক্ত বলেই খবর। কিন্তু ওই সেতু খুলে দেওয়ার আগে রিয়াসি স্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল নিশ্চিত করতে চাইছেন রেল কর্তৃপক্ষ।

পাহাড় ঘেরা মনোরম ছোট্ট শহর রিয়াসিতে সদ‍্য গড়ে ওঠা স্টেশনে ঢোকার জন‍্য পাকদণ্ডী বেয়ে একটু উপরে উঠতে হবে। আবার ট্রেন থেকে স্টেশনের প্ল‍্যাটফর্মে নেমে শহরে ঢোকার জন্যও কিছুটা নীচে নেমে আসতে হবে। রিয়াসি স্টেশনকে ধরে রাখা ৩৯ নম্বর সেতুটি পাহাড়ি সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়ছে। প্রায় ৩৫ হাজার বর্গমিটার জুড়ে রিয়াসি স্টেশনের বসত খাড়া পাহাড় কেটে বের করা পরিসরেই।

রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে পাহাড় থেকে মাটি পাথরের ধস ঠেকাতে প্রায় ৪০ মিটার উঁচু কংক্রিটের দেওয়াল তৈরি হয়েছে। পাহাড়ের মধ্যেই ধাপ কেটে দেওয়াল তৈরি। ওই স্টেশনের মেন লাইনের প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য ৬১০ মিটার এবং লুপ লাইনের প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য ৭১৫ মিটার। নব্বইয়ের দশকে চন্দ্রভাগা নদীর উপরে সালাল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিট চালুর পরে রিয়াসি স্টেশনটিই ওই তল্লাটে বড়সড় সরকারি প্রকল্প। রিয়াসির উপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের ছাড়পত্র এলে দক্ষিণে (জম্মুর দিকে) কাটরার থেকে উত্তরে (কাশ্মীরের দিকে) সঙ্গলদান পর্যন্ত ট্রেন চলাচল সম্ভব হবে। ইতিমধ্যে বারামুলা থেকে শ্রীনগর হয়ে সঙ্গলদান পর্যন্ত ট্রেন চলছে। মাঝের কাটরা থেকে রিয়াসির অংশটিতে রেল সচল হলে গোটা কাশ্মীরই রেলপথে দেশের অন‍্য অংশে জুড়ে যাবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Qutub Minar Jammu and Kashmir Delhi

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}