Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Dam

বাঁধ ভেঙে কোটালের জল গ্রামে

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরের পর থেকে নিম্নচাপের জেরে উপকূলবর্তী এলাকায় নাগাড়ে বৃষ্টি চলে। একই সঙ্গে পূর্ণিমার কোটাল থাকায় সমুদ্র যথেষ্ট উত্তাল ছিল।

ভাঙন: ভেঙে গিয়েছে চাঁদপুরের সামুদ্রিক বাঁধ। ছবি: কেশব মান্না

ভাঙন: ভেঙে গিয়েছে চাঁদপুরের সামুদ্রিক বাঁধ। ছবি: কেশব মান্না

নিজস্ব সংবাদদাতা
শঙ্করপুর শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২০ ০১:২১
Share: Save:

আশঙ্কাই সত্যি হল। একে নিম্নচাপ, তার উপর পূর্ণিমার কোটালে অশান্ত বঙ্গোপসাগর। বুধবার রাত থেকে রামনগর-১ ব্লকের চাঁদপুর এবং জামড়ার কাছে পৃথক দু'টি জায়গায় ভেঙে গিয়েছে সমুদ্রের বাঁধ। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সমুদ্রের জল হু হু করে ঢুকেছে জনবসতি এলাকায়। জল ঢুকেছে তিনটি গ্রামে। বুধবার রাত থেকেই সমুদ্রতীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা ঘর ছেড়েছেন। অল্প কিছু লোককে সরকারি উদ্যোগে বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরের পর থেকে নিম্নচাপের জেরে উপকূলবর্তী এলাকায় নাগাড়ে বৃষ্টি চলে। একই সঙ্গে পূর্ণিমার কোটাল থাকায় সমুদ্র যথেষ্ট উত্তাল ছিল। ফলে বিশাল বিশাল ঢেউয়ের ধাক্কায় সমুদ্রের দুর্বল বাঁধ অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয় ক্ষীরপাল গ্রামের এক বাসিন্দার দাবি, লাগাতার বড় বড় ঢেউয়ের ধাক্কায় সমুদ্রের বাঁধ একটু একটু করে আলগা হচ্ছে। পাথর এবং মাটি জোয়ারের ধাক্কায় খসে পড়ছে যা সমুদ্রের গর্ভে চলে যাচ্ছে।’’

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শঙ্করপুর থেকে তাজপুর পর্যন্ত সমুদ্রবাঁধ গত বছর নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের পর থেকেই নড়বড়ে। গত মে মাসে আমপানে আরও ক্ষতিগগ্রস্ত হয় সেই বাঁধ। চাঁদপুর এবং জামড়ার কাছে দু'জায়গায় বাঁধের বেশ কিছু অংশ ভেঙে বুধবার রাত থেকে জল ঢুকতে শুরু করে। চাঁদপুর, লছিমপুর, ক্ষীরপাল, জামড়া প্রভৃতি গ্রাম জলমগ্ন হয়। অনেকে ঘর ছেড়ে অন্যত্র সরে গেলেও যাঁদের পাকা ঘর রয়েছে তাঁরা অবশ্য এ দিনও বাড়িতে ছিলেন। চাঁদপুর আয়লা কেন্দ্রে ২৪ জনকে রাখা হয়েছে বলে রামনগর-১ ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর।

এদিন সকালে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পরিদর্শনে এলাকায় গিয়েছিল কাঁথির মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল। সমুদ্রে ভাটা শুরু হতেই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে বোল্ডার ফেলে মেরামতির কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। যদিও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সেচ দফতরের কোনও আধিকারিককে দেখা যায়নি। তবে এদিন রাতে ফের জোয়ারে বিপদ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। তাই বাসিন্দাদের স্থানীয় স্কুল এবং দুটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানান বিডিও বিষ্ণুপদ রায়। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘দুটি জায়গায় সমুদ্রবাঁধের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে বাঁধ সংস্কার করছে সেচ দফতর। সন্ধ্যার পরে ফের জোয়ার হলে যাতে কেউ অসুবিধায় না পড়েন সে জন্য বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।’’

প্রসঙ্গত, শঙ্করপুর থেকে তাজপুর এবং জলধা পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভের রাস্তার সামনে পাকাপাকিভাবে সমুদ্র বাঁধ নির্মাণে ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই বাঁধ নির্মাণ শুরু না হওয়াযতেই এমন বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হল বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। স্থানীয় সাংসদ শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘লকডাউনের কারণে বাঁধ নির্মাণ শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে উপকূলবর্তী এলাকার লোকেদের যাতে অসুবিধা না হয় তার জন্য প্রশাসন সব রকম ব্যবস্থা নিচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Dam Kotal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy