সাইকেলে সওয়ার মণিশঙ্কর সাহু। নিজস্ব চিত্র
কনুই থেকে বাঁ-হাতটা নেই। আশৈশব তাই নানা অবহেলা সইতে হয়েছে। কিন্তু সেই সব বাধা জয় করেই পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। বাণিজ্যে স্নাতকোত্তর হয়ে এখন শিক্ষকতাও করছেন।
দীর্ঘ ২১ বছরের শিক্ষক জীবনে রোজ এক হাতে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করা সেই মণিশঙ্কর সাহুকেই কুর্নিশ জানানো হবে আজ, রবিবার আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসে। খড়্গপুর মহকুমার দাঁতন-২ ব্লকের খণ্ডরুই জুনিয়র বেসিক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বছর পঁয়তাল্লিশের মণিশঙ্করবাবু এ বার প্রতিবন্ধকতা জয়ে রাজ্যস্তরের পুরস্কার পাচ্ছেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাঘরে ওই শিক্ষকের হাতে রাজ্যস্তরের ওই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
জন্ম থেকে ডান হাত দিয়েই যাবতীয় কাজ করেন মণিশঙ্করবাবু। তাও কখনও প্রতিবন্ধকতার কাছে হার মানেননি। শিক্ষক জীবনেও বরাবর নিজের কর্তব্যে অবিচল থেকেছন। এমন একজন মানুষ লড়াইয়ের স্বীকৃতি পাওয়ায় খুশি তাঁর স্কুলের সকলেই। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মান্না বলেন, “একটি হাত নিয়ে মণিশঙ্করবাবু যে ভাবে এতবছর ধরে লড়াই করছেন তা আমাদের কাছে গর্বের। উনি বরাবর নিজের কর্তব্যে অনড়। তাই যোগ্য ব্যক্তি প্রতিবন্ধকতায় রাজ্যস্তরের পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হওয়ায় আমরা খুশি। উনি অন্যদের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন-২ ব্লকের নারায়ণচক গ্রামের বাসিন্দা মণিশঙ্করবাবু। এক সময় পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির প্রভাতকুমার কলেজে পড়াশোনা করেছেন তিনি। পরে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতকোত্তর হয়েছেন। তারপর থেকে প্রাথমিকের খুদেদের শিক্ষাদানে মন দিয়েছেন। জন্ম থেকে এক হাতে জীবন সংগ্রাম চালানোর পথে অনেক অবহেলার শিকার হয়েছেন। তবে কখনও ভেঙে পড়েননি। সেই লড়াইয়ের স্বীকৃতি পেতে চলা। শিক্ষক মণিশঙ্করবাবু খুশি। তিনি বলেন, “শিক্ষাজীবনে অনেক অবহেলার শিকার হয়েছি। তবে পড়াশুনো চালিয়ে গিয়েছি। কর্মজীবনেও অবহেলা পিছু ছাড়েনি। তবে গত ২১ বছর ধরে সহকর্মী শিক্ষকদের উৎসাহ আমার অনেক কাজে লেগেছে। আমি নিজের সাধ্য অনুযায়ী যতটুকু সম্ভব কাজ করি।’’ তাঁর এই পুরস্কার সব অবহেলিত প্রতিবন্ধীদের উৎসর্গ করতে চান মণিশঙ্করবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy