প্যান্ডেলেই পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সমস্যার সমাধান হবে দ্রুত। প্যান্ডেলে বসে যারা জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিচ্ছে তাদের যত দ্রুত সম্ভব অন্য পরীক্ষাকেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু বুধবারও পরিস্থিতি বদলায়নি। এ দিনও পাঁচগেড়িয়া হাইস্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রে দুই ভবনের মাঝে একফালি জায়গায় প্যান্ডেলে বসেই ইংরেজি পরীক্ষা দিলেন ৯৭জন পরীক্ষার্থী।
শিক্ষকদের একাংশ বলছেন, সাধারণ ভাবে ইংরেজি এবং অঙ্ক এই দু’টি বিষয়েই ভয় থাকে পড়ুয়াদের। একে অন্য স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা। তাই একটু ভয় থাকেই। তার উপর যদি এ ভাবে প্যান্ডেলে বসে পরীক্ষা দিতে হয় তা হলে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এদিন ওই পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়েছিলেন আলোককেন্দ্র হাইস্কুলের ইংরেজি শিক্ষক কৌশিক মিশ্র। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে আমাকে আটকানোর চেষ্টা হয়েছিল। পরে ভিতরে গিয়ে দেখলাম প্যান্ডেলে যেভাবে পড়ুয়ারা পরীক্ষা দিচ্ছে তাতে ওদের অভিজ্ঞতা খুব খারাপ। এতে মনোবল ভেঙে গিয়েছে। তার ওপরে ইংরেজি নিয়ে পড়ুয়াদের ভীতি কাজ করে। সেখানে এমন পরিবেশে পরীক্ষায় ফল খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে গেল।’’
প্যান্ডেলে বসে পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে দেখে মঙ্গলবার প্রতিবাদ করেছিলেন অভিভাবক প্রশান্ত পাল। তাঁর ছেলে রাজা পাল পটনা বিবেকানন্দ হাইস্কুলের পরীক্ষার্থী। এ দিন অবশ্য তাঁকে ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। প্রশান্ত বলেন, “মঙ্গলবার আমরা স্কুলে ঢুকে ওই প্যান্ডেলে বসার ঘটনা দেখে ক্ষোভ জানিয়েছিলাম। তাই দ্বিতীয় দিনে আর আমাদের পরীক্ষাকেন্দ্রের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। কখনও ভাবিনি ছেলেকে এভাবে প্যান্ডেলে বসে বিয়েবাড়ির ভোজ খাওয়ার মতো পরিবেশে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে হবে।” হতাশ বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরাও। ডেবরা হরিমতির প্রধান শিক্ষক তমাল বসু বলেন, “সব মহলে অভিযোগ জানিয়েছি। তার পরেও দ্বিতীয়দিনে একইভাবে পরীক্ষা হচ্ছে। আর কী করব! হতাশ লাগছে।” আবার আলোকেন্দ্র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নিখিল মণ্ডল বলেন, “এই প্যান্ডেলে পরীক্ষার ব্যবস্থা কখনও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ হতে পারে না। অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি।”
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও প্রথম দিন থেকেই ঘটনাটি অবশ্য চাপা দেওয়ায় চেষ্টা করেছেন প্রধান শিক্ষক জহরলাল বারিক। প্রথমদিন কথা বলতে রাজি হননি তিনি। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের তিনি স্কুল থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ দিনও তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। ফোন করা হলে পাঁচগেড়িয়ার প্রধান শিক্ষক বলেছেন, “আমি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলব না।” পরে ফোন করলে ওই ফোন ধরেছেন এক মহিলা। তিনি নিজেকে পরীক্ষাকেন্দ্রের ইন-চার্জ দীপান্বিতা দাস বলে দাবি করে বলেছেন, “প্যান্ডেলে খুব সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা হচ্ছে। কারও কোনও অভিযোগ নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy