কর্মশালা: পুরোহিত-ইমামদের কাছে সাহায্যের আবেদন। শুক্রবার ক্ষীরপাইতে। নিজস্ব চিত্র
স্থানীয়দের মারফত খবর পেয়ে নাবালিকা বিয়ে বন্ধে প্রায়ই অভিযান চালায় প্রশাসন। আঠারোর আগে বিয়ে না দেওয়ার আবেদন জানিয়ে চলে প্রচারও। তারপরেও অনেক ক্ষেত্রেই আকছার গোপনে মন্দিরে নাবালিকা বিয়ের খবর আসায় উদ্বিগ্ন প্রশাসনিক কর্তারা। এ বার বিয়ে দেওয়ার আগে পাত্র ও পাত্রীর জন্মের শংসাপত্র দেখে নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হল ইমাম ও পুরোহিতদের কাছে।
নাবালিকা বিবাহ রুখতে বছর কয়েক ধরেই প্রচার শুরু করেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। প্রচার চালাচ্ছে পুলিশ, চাইল্ড লাইনও। কিন্তু নাবালিকা বিয়েতে দাঁড়ি পড়ছে না। উল্টে দিনে দিনে বাড়ছে নাবালিকা বিয়ে। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ঘাটাল মহকুমায় বিয়ের মরসুমে বছরে গড়ে ৮০-৯০টির মতো বিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে। তারপরেও ফি বছর ঘাটাল মহকুমায় শতাধিক নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে পাত্র-সহ নাবালিকার বাবা-মায়ের নামে মামলাও হয়েছে।
নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করতেই কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেছিল রাজ্য সরকার। তবে প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধাপ্রাপ্ত নাবালিকাদের অনেকেরও নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে নাবালিকারা বিয়ে বন্ধ করতে এগিয়ে আসছে। তবে সিংহভাগ ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের ইচ্ছেকে মান্যতা দিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসছে কন্যাশ্রী পড়ুয়ারা। তাই এ বার স্কুলে ভর্তির সময়ই মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঘাটাল মহকুমা প্রশাসন।
প্রশাসনিক আধিকারিকরা বলছেন, নাবালিকা বিবাহ বন্ধে ধারাবাহিক ভাবে শিবির করতে হবে। স্কুল-কলেজের পড়ুয়া, পুরোহিত,ইমাম, ধোপা, নাপিত-সহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে যুক্ত করে প্রচারে জোর বাড়ালে সাফল্য মিলবেই।
বিয়ে বন্ধে সকলকে পাশে পেতে ক্ষীরপাই শহরের টাউন হলে শনিবার চন্দ্রকোনা-১ ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে এক শিবির আয়োজিত হয়। উপস্থিত ছিলেন প্রায় সাড়ে তিনশো ইমাম ও পুরোহিত। কম বয়সে বিয়ে হলে কী ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে সে বিষয়ে বোঝানো হয়। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে বিয়ে হলে আইনি জটিলতার দিকগুলিও তুলে ধরা হয়। শিবিরে বিডিও অভিষেক মিশ্র ও যুগ্ম বিডিও সন্দীপ সিংহরায়েরা বিয়ের আগে জন্মের শংসাপত্র দেখে নেওয়ার আবেদন জানান।
ইমাম ও পুরোহিতেরাও এই সামাজিক সমস্যায় রাশ টানতে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন। প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত ঘণ্টা দু’য়েকের সভায় হাজির ছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান-সহ জনপ্রতিনিধিরাও। এ বার থেকে নিয়ম করেই গ্রামগঞ্জে যৌথ প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত হয়। আলোচনা হয় প্রচারে স্থানীয় ইমাম ও পুরোহিতদের থাকার বিষয়েও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy