মেদিনীপুর শহরের জেলা পরিষদের সামনে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
শহর মেদিনীপুরের জনপদ সেজে উঠেছে বাহারি আলোয়। উপলক্ষ্য, জগদ্ধাত্রী পুজো। রয়েছে থিমের মণ্ডপ, সাবেকি প্রতিমা, চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা- সবকিছুই। বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে পুজোর উদ্বোধন। এ দিন শহর, শহরতলির একাধিক পুজোর উদ্বোধন করেছেন মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া। শহরের কয়েকটি পুজো পারিবারিক এবং অনেকগুলি পুজো সর্বজনীন পুজো হয়। এ বার সর্বজনীন পুজোর সংখ্যা বেড়েছে। মেদিনীপুরের পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলছেন, ‘‘মেদিনীপুর শহরও জগদ্ধাত্রী পুজোয় মেতেছে। সেজে উঠছে নানা রঙের আলোয়।’’
মেদিনীপুর ও তার আশেপাশের প্রচুর মানুষ প্রতি বছর জগদ্ধাত্রী পুজো দেখতে ভিড় জমান এই শহরে। এক সময়ে নবমীর দিনেই পুজো হত। এখন অবশ্য অনেক পুজো ষষ্ঠী থেকেই হয়। জেলা পরিষদ রোডের ‘আবির্ভাব’এর পুজোর এ বার দ্বাদশ বর্ষ। বুধবার সন্ধ্যায় পুজোর উদ্বোধন হয়েছে। পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক অরুণ ঘোষ ও কল্লোল পাল বলছিলেন, ‘‘আমাদের পুজোও সর্বজনীন। আনন্দময়।’’ দুঃস্থদের শীতবস্ত্র প্রদান করা হয়েছে। অরুণ বলছেন, ‘‘আমাদের সীমিত ক্ষমতা। সীমিত ক্ষমতার সীমারেখা আরও প্রসারিত করার চেষ্টা করি।’’ রাস্তার দু’ধারে আলোর সাজ। জেলা পরিষদ রোডের রাস্তাঘাট ঝলমলে হয়ে উঠেছে। রবীন্দ্রনগরের ‘বঙ্গজননী’র পুজোর এ বার তৃতীয় বর্ষ। পুজো কমিটির চেয়ারম্যান সুব্রত সরকার বলছেন, ‘‘আমাদের এখানেও আলোকসজ্জা রয়েছে। রাস্তার ধারে আলো লাগানো হয়েছে।’’ বুধবার সন্ধ্যায় পুজোর উদ্বোধন হয়েছে।
শহরের পঞ্চুরচকের ‘অগ্নিকন্যা’ এ বারও চমক দিয়েছে। মণ্ডপ বানানো হয়েছে যোধপুরের রাজপ্রাসাদের আদলে। রয়েছে নানা রকম কারুকাজ। টেরাকোটার ধাঁচের। পুজোর উদ্যোক্তা প্রসেনজিৎ চক্রবর্তীর আশা, ‘‘শহর-শহরতলি থেকে অনেক মানুষ আসবেন এই প্রাসাদ ও প্রতিমা দেখতে।’’ যোধপুরের অন্যতম আকর্ষণ উম্মেদ প্রাসাদ। তারই অনুকরণে মণ্ডপ হয়েছে। পুজোর উদ্যোক্তা বুদ্ধ মণ্ডল মনে করাচ্ছেন, ‘‘বিশ্বের বৃহত্তম ব্যক্তিগত বাসভবনের মধ্যে যোধপুরের এই প্রাসাদ অন্যতম। বলা হয়, পৃথিবীতে এই একটি প্রাসাদই তৈরি হয়েছিল বিংশ শতাব্দীতে। বাকি সব প্রাসাদ তার থেকে প্রাচীন। উম্মেদ প্রাসাদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ১৯২৯ সালে। শেষ হয়েছিল ১৯৪৩ সালে।’’ এই সময়ে তো ভিড় উচিত নয়?
উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, করোনার সুরক্ষা বিধি মেনেই সব আয়োজন করা হয়েছে। মণ্ডপের ভিতরের পরিসর বড় রাখার চেষ্টা হয়েছে।
পুজোয় মেতেছে শহরতলির খয়েরুল্লাচকও। এখানে দুর্গাপুজোর চেয়েও জগদ্ধাত্রী পুজোয় আনন্দ বেশি। ‘নবোদয় দীপ্তি সঙ্ঘে’র পুজোর এ বার ১৯তম বর্ষ। বুধবার পুজোর উদ্বোধন হয়েছে। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সঞ্জীব দাস শোনাচ্ছেন, ‘‘মণ্ডপ চত্বর খোলামেলা রয়েছে। দর্শকেরা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখছেন কি না, সে দিকে নজর রাখা হবে।’’ ‘নেতাজি স্পোটিং ক্লাবে’র পুজোর এ বার ২১ তম বর্ষ। আজ, বৃহস্পতিবার পুজোর উদ্বোধন হবে। করোনা পরিস্থিতিতে ভিড় হলে?
পুজোর উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ কর্মকার শোনাচ্ছেন, ‘‘ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’ সব বিধিনিষেধ সামলেই পুজো হচ্ছে, জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। আলোর জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে খয়েরুল্লাচকও। পুজো ঘিরে পুলিশ, প্রশাসন সতর্ক। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক আশাবাদী, ‘‘সকলের সহযোগিতায় নির্বিঘ্নেই পুজো হবে সর্বত্র।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy