কান দেন না সচেতনতা প্রচারে! লিফলেট হাতে গুঁজে দিলেও তা ফেেল দেন এখানে সেখানে? এ সব জানে পুলিশও। তাই এ বার রংচঙে ক্যালেন্ডারে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর স্লোগান। হাতে হাতে তুলে দেবে পুলিশ।
পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পোস্টকার্ড-ক্যালেন্ডার বিলি করা হবে। পুলিশ সূত্রের খবর, দুর্ঘটনা প্রবণ জনবহুল এলাকায় বাইক আরোহীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া, শিক্ষক ও সরকারি দফতরের কর্মীদের দেওয়া হবে এই কার্ড। পোস্টকার্ড মাপের ওই ক্যালেন্ডারের একদিকে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত ইংরেজি ও বাংলায় ‘সাবধানে চালান, জীবন বাঁচান’ শ্লোগান। এ ছাড়া হিন্দিতে ট্রাফিক আইন সংক্রান্ত ১১ দফা নির্দেশিকা। উল্টোদিকে রয়েছে ২০১৭ সালের ইংরেজি ক্যালেন্ডার। ক্যালেন্ডারের হেডিংয়ের ছবিতে জঙ্গলমহলের সবুজ শালগাছের জঙ্গলরাস্তা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’-এর উপর জোর দিচ্ছেন। তারপরও পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় আইন ভেঙে বিনা হেলমেটে বাইকে সওয়ার হচ্ছেন অনেকেই। রাস্তায় ধরা পড়লে ‘স্পট ফাইন’ করছে পুলিশ। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে চলছে পুলিশি নজরদারি। তা সত্ত্বেও আমজনতার একাংশ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হেলমেট ছাড়া বাইক-স্কুটার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ। মাঝে মধ্যেই বিনা হেলমেটে বাইক চালাতে গিয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটছে। বলি হচ্ছে তাজা প্রাণ! প্রশাসনের নির্দেশে বেশির ভাগ পেট্রোল পাম্পে তেল নিতে গেলে হেলমেট পরতে হচ্ছে। অভিযোগ, শহর ও গ্রামাঞ্চলের কিছু পাম্প-এ হেলমেট-বিধি মানা হচ্ছে না।
পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, গত এক বছরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৭৬২ টি ছোটবড় সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৮ মৃত্যু হয়েছে। ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলায় ১৪৩ টি ছোটবড় সড়ক দুর্ঘটনায় ৮৪ জনের মৃত্যু হয়। বেশির ভাগ মৃত্যুর ঘটনাগুলি ঘটেছে মোটর
বাইক দুর্ঘটনায়।
পুলিশের বক্তব্য, সচেতনতা মূলক প্রচারপত্র হাতে পেয়ে ফেলে দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে অনেকের মধ্যে। তাই ‘স্মার্টলুক’-এর পোস্ট-কার্ড ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে মানুষজনকে সচেতন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আকর্ষণীয় ক্যালেন্ডারটি বাড়িতে রাখলে সব সময় সাবধানে বাইক ও গাড়ি চালানোর কথা মনে পড়বে বলে আশাবাদী পুলিশ মহল।
ঝাড়গ্রাম জেলার পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্তা বলেন, “জনবহুল রাস্তার মোড়ে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’ কর্মসূচি হচ্ছে। ওই সব কর্মসূচি থেকে এই ক্যালেন্ডার বিলি করা হবে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে মানুষজনের হাতে ওই ক্যালেন্ডার তুলে দেওয়া হবে।” এসপি জানান, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া ও সরকারি দফতরের কর্মীদেরও দেওয়া হবে এই ক্যালেন্ডার।
এ ছাড়া জেলা পুলিশের উদ্যোগে পৃথক একটি বড় প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার তৈরি করা হয়েছে। ওই ক্যালেন্ডারে বিভিন্ন থানা এলাকার স্থানীয় উৎসব-পার্বণ, স্মরণীয় ও বরণীয় ঘটনার উল্লেখ রয়েছে।
পুলিশ কর্তাদের দাবি, এর ফলে স্থানীয় উৎসব-পার্বণের দিনক্ষণ আগাম জানা থাকায় পুলিশের কাজের সুবিধা হবে। অন্যদিকে, উৎসব উপলক্ষে এলাকাবাসীর সঙ্গে জনসংযোগের বন্ধনটা আরও দৃঢ় হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy