সত্যবান নায়েক। নিজস্ব চিত্র
নেহাতই সন্দেহ। আর তার জেরে এ বার গণপিটুনির শিকার খোদ এক পুলিশকর্মী!
সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর তমলুকে। আক্রান্ত পুলিশকর্মী আবার জেলা আদালতের এক বিচারকের নিরাপত্তারক্ষী। অভিযোগ, সত্যবান নায়েক নামে পুলিশের ওই কনস্টেবল দাঁড় করিয়ে রাখা একটি মোটরবাইকে কেন চাবি লাগানো নেই তা দেখতে যেতেই কিছু লোক তাঁকে ঘিরে ধরে। সাদা পোশাকে থাকা সত্যবানকে বাইক চোর বলে শুরু হয় হয় মারধর। কিল, চড়, ঘুষি, থাপ্পড়— বাদ ছিল না কিছুই। পুলিশকর্মী পরিচয় দেওয়ার পরেও মার থামেনি। উল্টে লাঠি দিয়ে মারধর শুরু হয় বলে অভিযোগ।
ক’দিন আগেই ছেলেধরা সন্দেহে তমলুক লাগোয়া মথুরী গ্রামে গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে শহরের যুবক সঞ্জয় চন্দ্রের। তারপর থেকে গুজবের জেরে গণপিটুনির মতো ঘটনা ঠেকাতে প্রচারে নেমেছে পুলিশ। তারপরেও একেবারে তমলুক শহরের ব্যস্ত এলাকায় এক পুলিশকর্মীকে গণধোলাইয়ের ঘটনায় আলোড়ন পড়েছে।
পদুমবসান এলাকায় হলদিয়া–মেচেদা রাজ্য সড়কের পাশে এক বেসরকারি হাসপাতালের চত্বরে ঘটনাটি ঘটে। আহত সত্যবানকে উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর বাঁ চোখ, বাঁ কান ও ডান পায়ে চোট রয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি।
আদতে ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা সত্যবান নায়েক ২০০৮ সাল থেকে পূর্ব মেদিনীপুরে কর্মরত। বিচারকের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে তিনি কাজ করছেন বছর দুয়েক। বছর উনচল্লিশের সত্যবান স্ত্রী রেশমা এবং ১৩ বছরের ছেলেকে নিয়ে তমলুক শহরের পদুমবসানে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। এ দিন হাসপাতালে কান্নায় ভেঙে পড়েন সত্যবান। তাঁর কথায়, ‘‘১০ বছর তমলুকে রয়েছি। এলাকায় অনেকে পরিচিত। তা-ও এমন ঘটনা মানতে পারছি না। স্ত্রী ও ছেলে ছুটে না এলে ওরা আমাকে মেরেই ফেলত।’’
যে বেসরকারি হাসপাতালের সামনে এই ঘটনা, তার কর্তা দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই ওষুধের দোকানের সামনে থেকে মাঝেমধ্যে সাইকেল, বাইক চুরি হয়। তাই সন্দেহের বশে এমনটা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে এটা মোটেই কাম্য নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy