এত্তা-জঞ্জাল: এভাবেই হাসপাতাল চত্বরে পড়ে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র
নির্মল বাংলা গড়ার ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে সরকারি অনুদানে উপভোক্তাদের বাড়ি-বাড়ি শৌচাগার বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মাঠে প্রাতঃকৃত্য সারতে যাওয়ার অভ্যাস বদলানোর জন্য সরকারি স্তরে প্রচার চলছে। কিন্তু পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম স্বাস্থ্যজেলার গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালের ছবি একেবারে উল্টো! অভিযোগ, পর্যাপ্ত সাফাই কর্মীর অভাবে অধিকাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরই শৌচাগার অপরিচ্ছন্ন।
ঝাড়গ্রাম স্বাস্থ্য জেলায় ৮টি ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালের প্রতিটিতে কমপক্ষে ৯ জন করে সাফাই কর্মী থাকার কথা। এ ছাড়া ৮টি ব্লকের ২৫টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিটিতে ৩ থেকে ৪ জন করে সাফাই কর্মীর পদ রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ সাফাই কর্মীর পদ খালি। পাশাপাশি, ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত হলেও সাফাই কর্মীর সংখ্যা বাড়েনি।
যেমন, বেলপাহাড়ি ব্লকের গ্রামীণ হাসপাতালে ৯টি সাফাই কর্মীর পদের মধ্যে ৮টি পদ খালি। হাসপাতালের মোট ওয়ার্ড ৫টি। এক জন কর্মীর পক্ষে গোটা হাসপাতাল চত্বর ও পাঁচটি শৌচাগার পরিষ্কার রাখা অসম্ভব। উপযুক্ত সাফাই কর্মীর অভাবে নিয়মিত শৌচাগার পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না। দুর্গন্ধে ওয়ার্ডে থাকা দায়। হাসপাতাল চত্বরও আবর্জনায় ভর্তি। ঝাড়গ্রাম ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও স্থায়ী সাফাই কর্মী নেই। বেশির ভাগ প্রাথমিক ও ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল গুলিতে এক দু’জন করে অস্থায়ী কর্মীদের দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর স্বাস্থ্যজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতেও সাফাই কর্মীর সংখ্যা বাড়ন্ত। পশ্চিম মেদিনীপুরের দু’টি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ১৯টি গ্রামীণ হাসপাতাল এবং ৫৫টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মোট ২২০টি সাফাই কর্মী পদের মধ্যে ১২২টি পদ খালি।
স্বাস্থ্যবিধি সচেতন করতে গ্রামাঞ্চলে শৌচাগার ব্যবহারের জন্য প্রচার চালাচ্ছে পঞ্চায়েত-প্রশাসন। কিন্তু সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও গ্রামীণ হাসপাতালের নোংরা শৌচাগার দেখে ব্যবহার করতে চান না রোগীরা। গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের অনেকেই শৌচাগারের পরিবর্তে মাঠে ঘাটে প্রাতঃকৃত্য সারতে ছোটেন। একান্ত যাঁরা হাঁটাচলা করতে পারেন না, তাঁরাই বাধ্য হয়ে হাসপাতালের শৌচাগারে যান। বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, শৌচাগারের মেঝে নোংরা হয়ে পড়ে রয়েছে। শৌচাগারের প্যানগুলির ভয়াবহ চিত্র। হাত-মুখ ধোয়ায় বেসিনও ততোধিক নোংরা।
পশ্চিম মেদিনীপুরের সিএমওএইচ গিরীশচন্দ্র বেরা এবং ঝাড়গ্রামের সিএমওএইচ অশ্বিনীকুমার মাঝির একযোগে দাবি, “সাফাই কর্মীর পদ শূন্য। তবে সংশ্লিষ্ট রোগী কল্যাণ সমিতি থেকে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে অস্থায়ী সাফাই কর্মীদের দিয়ে শৌচাগার ও চত্বর নিয়মিত পরিষ্কার করানো হয়।” কিন্তু কথার সঙ্গে ছবিটা যে মিলছে না কিছুতেই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy