অভিযুক্ত: অশোককুমার দাস
রোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে ভুয়ো সন্দেহে এক চিকিৎসককে আটক করল পুলিশ। ঘটনাস্থল পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা। এগরা মহকুমা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের উল্টো দিকের ওষুধের দোকানের চেম্বার থেকেই মঙ্গলবার অশোককুমার দাস নামে ওই চিকিৎসককে আটক করা হয়। পুলিশকে তিনি বৈধ নথিপত্র দেখাতে পারেননি বলেই জানা গিয়েছে। এগরার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সব্যসাচী সেনগুপ্ত বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। ওই চিকিৎসককে প্রয়োজনীয় নথিপত্র দেখাতে বলা হয়েছে। তিনি তা দেখতে না পারলে আমরা ওঁকে গ্রেফতার করব।’’
গত কয়েক মাসে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় একের পর এক ভুয়ো চিকিৎসকের হদিস মিলেছে। তাদের অনেকে গ্রেফতার হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরেও গত জুন মাসে আর কে মণ্ডল নামে এক ভুয়ো চিকিৎসক ধরা পড়ে। তারপর আবার এগরায় ভুয়ো চিকিৎসকের খোঁজ মেলায় আলোড়ন পড়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডলের বক্তব্য, “ওই রোগীর অভিযোগ আমাদের জেলা দফরে পাঠাতে বলেছি। আমরা তা পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলে পাঠাবো। তারাই এ ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেবে।”
প্রেসক্রিপশন: নিজস্ব চিত্র
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এগরা মহকুমা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের উল্টো দিকের চেম্বারে প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত রোগী দেখতেন মধ্যবয়সী অশোক। এগরা শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কসবার বাসিন্দা সিন্টু মান্না এ দিন সকালে ঘাড়ে ব্যথার নিয়ে ওই চিকিৎসকের কাছে আসে। ওই রোগীর দাবি, ডাক্তারের কথা শুনে তাঁর সন্দেহ হয়। প্রেসক্রিপশনে লেখা ডিগ্রি এমবিবিএস (এইচওএন এস ), এম ডি, এফআইসিএ ( ইউএসএ) লেখা দেখেও সিন্টুর সন্দেহ হয়। অশোকের কাছে রেজিস্ট্রেশন নম্বার জানতে চান সিন্টু। অশোক প্রথমে তা দিতে রাজি হননি। পরে রোগীর চাপাচাপিতে প্রেসক্রিপশনে একটা নম্বর লিখে দেন তিনি। সিন্টুর অভিযোগ, “ওই রেজিস্ট্রেশন নম্বর অনলাইনে পরীক্ষা করতেই দেখি সেখানে অন্য নাম, ঠিকানা। ডাক্তারের নাম হিসেবে গৌরীশঙ্কর মুখোপাধ্যায় আর ঠিকানায়, ২৫ অনন্তরাম মুকোপাধ্যায় লেন, রামকৃষ্ণপুর, হাওড়া লেখা ছিল।’’ এরপরই সিন্টু ওই চিকিৎসক ভুয়ো বলে এগরা থানায় অভিযোগ জানান।
অশোক অবশ্য নিজেকে ‘ভুয়ো চিকিৎসক’ বলে মানতে নারাজ। এ দিন তিনি দাবি করেন, “কটকের এস সি বি মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস করেছি। তারপর পটনা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমডি। আমেরিকা থেকে এফআইসিএ ডিগ্রিও করেছি।’’
কিন্তু প্রেসক্রিপশনে রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই কেন? অশোকের জবাব, “প্রেসক্রিশনে রেজিস্ট্রেশন নম্বর লেখা বাধ্যতামূলক নয়।’’ তাঁর রেজিস্ট্রেশন নম্বরে কেন অন্য চিকিৎসকের নাম-ঠিকানা দেখাচ্ছে, সেই প্রশ্নের সদুত্তর অবশ্য দিতে পারেননি অশোক।
এগরার মহকুমাশাসক তথা মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রজতকান্তি বিশ্বাস বলেন , ‘‘এই নিয়ে মহকুমায় দ্বিতীয় ভুয়ো চিকিৎসকের খোঁজ মিলল। এ বার মহকুমা জুড়ে সব চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পরীক্ষা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy