Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

আশাদিদি অন্য কাজে, ব্যাহত স্বাস্থ্য পরিষেবা

গত মাসে পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন পূজা রায়। ঘাটালের সুলতানপুরের বাসিন্দা পূজা এখন আতান্তরে। ছেলেকে কী কী টিকা দিতে হবে, কে দেবে সে সব— কিছুই বুঝতে পারছেন না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৭ ০২:১৯
Share: Save:

গত মাসে পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন পূজা রায়। ঘাটালের সুলতানপুরের বাসিন্দা পূজা এখন আতান্তরে। ছেলেকে কী কী টিকা দিতে হবে, কে দেবে সে সব— কিছুই বুঝতে পারছেন না।

পূজার কথায়, ‘‘গত এক-দেড় মাস আশা দিদিমণির দেখা পাইনি। এতদিন সব উনিই করিয়ে দিচ্ছিলেন। এখন কী করতে হবে, বুঝতে পারছি না।’’ প্রায় একই কথা চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বসনছড়া পঞ্চায়েতর মালবিকা দাসের। তাঁর আক্ষেপ, “আমাকে আশা দিদিমণি মাতৃযানের গাড়ির কাগজ করে দেবেন বলেছিলেন। কিন্তু এখনও তো উনি বাড়িতে এলেন না। সামনের মাসেই আমি হাসপাতালে ভর্তি হব। কী হবে?”

কিন্তু কোথায় গেলেন আশাকর্মীরা?

প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সরকারি নানা প্রকল্পের প্রচারে যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে আশা কর্মীদের। ফলে আসল কাজই করতে পারছেন না আশাকর্মীরা।

২০০৫ সালে রাজ্য সরকার আশাকর্মীদের নিয়োগ করেছিল। মূল উদ্দেশ্যই ছিল, সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগ সুদৃঢ় করা। অন্তঃসত্ত্বা মহিলার নাম নথিভুক্ত করা, তাঁদের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা, মাতৃযান, সরকারি হাসপাতালে প্রসবে উৎসাহ দেওয়া এবং শিশুর জন্মের পরই তার জন্মের সংশাপত্র, মা ও পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকাকরণের ব্যবস্থা— সবই করেন আশাকর্মীরা। কিন্তু সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে সহায়ক মূল্য ধান কেনার জন্য প্রচার, ‘সবুজশ্রী’র চারা গাছ বিলি, কোন কোন বাড়িতে শৌচাগার নেই তার তালিকা তৈরি, ভোটার কার্ড সংশোধন, আধার কার্ড তৈরির প্রচার। আশাকর্মীদের দাবি, এর ফলে আসল কাজের সময় পাচ্ছেন না তাঁরা।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রতি ২০০-২৫০ পরিবার পিছু একজন আশাকর্মী রয়েছেন দুই জেলায়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বর্তমানে ৩০৮৭ জন আশাকর্মী কাজ করেন। সেখানে থাকার কথা ৪৫৭৫জনের।

আশাকর্মীরা জানান, তাঁদের বেতন নেই। সামান্য ভাতাই ভরসা। আর কিছু উৎসাহ ভাতা। তার বিনিময়ে যা কাজ করতে হয়, তাতে হিমসিম খান তাঁরা। আশা কর্মীদের অভিযোগ, “পঞ্চায়েত ও ব্লক থেকেই বাড়তি কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়— সবই মৌখিক। বিএমওএইচ বা দফতরের আধিকারিকদের কাছে অভিযোগ জানালেও তাঁরা আমল দেন না।’’

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “আশাকর্মীরা তাঁদের কাজ ঠিকই করছেন। কোনও সমস্যা নেই।” তবে তাঁর দফতরেরই এক আধিকারিক সমস্যার কথা মানছেন। তিনি বলেন, “আশাকর্মীদের অন্য কাজে যুক্ত করায় স্বাস্থ্য দফতরের উদ্দেশ্যই বাস্তবায়িত হচ্ছে না। আমরাও অসহায়।”

অন্য বিষয়গুলি:

Nurse Medical Centre
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy