E-Paper

অবৈধ নির্মাণের ফাঁসে শিকেয় পরিবেশ

পরিবেশবীদ এবং এলাকার মৎস্যজীবীদের একাংশ জানতে চাইছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজনীতি এবং বিনিয়োগ রক্ষা পেলেও সৈকতের পরিবেশের কী হবে! সেই জবাব অবশ্য নেই কারও কাছে।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৫১
Share
Save

জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ। সেই নির্দেশ কার্যকর করতে সৈকতের বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দিতে উদ্যোগী হয়েছিল জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের সেই পদক্ষেপে ‘বেড়ি’ পরাল রাজ্য সরকার। এতে বেআইনি নির্মাণ রুখতে প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তেমনই পরিবেশবীদ এবং এলাকার মৎস্যজীবীদের একাংশ জানতে চাইছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজনীতি এবং বিনিয়োগ রক্ষা পেলেও সৈকতের পরিবেশের কী হবে! সেই জবাব অবশ্য নেই কারও কাছে।

‘কোস্টাল রেগুলেটেড জ়োন’ (সিআরজ়েড) আইন না মানায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুসারে মন্দারমণির শতাধিক হোটেল-লজ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক। তারই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকেলে মন্দারমণির হোটেল মালিকদের সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং মুখ্যমন্ত্রীর ফোনে কথা হয়েছে। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী হোটেল মালিকদের আশ্বস্ত করেছেন যে সেখানে কোনও বুলডোজ়ার চলবে না। এই সিদ্ধান্তে খুশি স্থানীয় ক্ষুদ্র এবং বড় হোটেল ব্যবসায়ীরা।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত লোকসভা ভোটের আগে পুরসভা এলাকাগুলিতে বেআইনি দখলদারি হঠাতে সক্রিয় হয়েছিলেন। তিনি নিজে ২০১৯ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সফরে এসে সৈকতের বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। এখন তাঁর এই ‘বুলডোজার না চালার’ বার্তায় ধন্দে জেলার বুদ্ধিজীবী এবং রাজনৈতিক মহল। উপকূলে বেলাগাম উন্নয়নের গেরোয় পরিবেশ আর মৎস্যজীবীদের জীবন জীবিকা নিয়ে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন নানা পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সুভাষ দত্ত। এই পরিবেশ কর্মী বলছেন, ‘‘এরকম নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী দিতে পারেন না। ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ আদালত। মুখ্যমন্ত্রী চাইলে আদালতে গিয়ে ওঁর বক্তব্য জানাতে পারেন। দু-আড়াই দশকের মধ্যে দিঘা আর মন্দারমণি সমুদ্র গর্ভে তলিয়ে যাবে।’’

পূর্ব মেদিনীপুর মৎস্যজীবী ফোরামের সম্পাদক দেবাশিস শ্যামল বলছেন, ‘‘মন্দারমণিতে বেআইনি নির্মাণ হওয়ার কারণে পার্শ্ববর্তী দাদনপাত্র বাড়, শৌলার মত কয়েকটি খটি এলাকায় ভূমি ধস চলছে। মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার জায়গা ধীরে ধীরে অবলুপ্ত হচ্ছে। সমুদ্র ক্রমশ জনবসতীর দিকে এগিয়ে আসছে। ’’

সমালোচনা করছে রাজনৈতিক দলগুলিও। তারা মনে করাচ্ছে, রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর দিঘার পাশাপাশি, মন্দারমণিতে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ এসেছে হোটেল শিল্পে। বিরোধীদের অভিযোগ, অধিকাংশ বিনিয়োগ রয়েছে শাসকদলের নেতাদের। এখন জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সেই সব হোটেল ভেঙে ফেলা হলে একদিকে যেমন দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠতে পারে, তেমনই আগামী বিধানসভা ভোটের আগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলায় মমতার ভাবমূর্তি খারাপ হত। সঙ্গত কারণে রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্ত্রী হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী আগে ভাগে হোটেল মালিকদের আশ্বস্ত করলেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এ বিষয়ে কাঁথির বিজেপি সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘দলে বা প্রশাসনে কোনও পরিস্থিতির কারণে উনি যদি দেখেন ওঁর ভাবমূর্তি নষ্ট হতে চলেছে, তখনই মুখ্যমন্ত্রী বারবার জানান যে, তিনি কিছু জানেন না। মুখ্যমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Illegal Constructions Mandarmani

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।