বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ও বিরবাহা হাঁসদা। মঙ্গলবার। ঝাড়গ্রামে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
মন্ত্রীকে বললেন, প্রতি মাসে ব্লকে-ব্লকে গিয়ে জেলার উন্নয়ন নিয়ে পর্যালোচনা করতে হবে। জেলা সভাপতিকে বললেন, কর্মীদের নিয়ে ব্লকে ব্লকে গিয়ে মানুষের দরজায় পৌঁছতে হবে। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম দেবেন্দ্রমোহন হলে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের রাজ্যস্তরীয় অনুষ্ঠান মঞ্চে এই ভাবে কার্যত অভিভাবকের ভূমিকা পালন করলেন রাজ্যের জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন এবং পরিবেশ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, এদিন সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চে মানস কার্যত পঞ্চায়েত ভোটকে মাথায় রেখেই বক্তৃতা করেছেন। তাহলে কি পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলায় দলের সংগঠন দেখবেন মানস? এই নিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে।
গত বছর ৯ অগস্ট ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের রাজ্য স্তরীয় অনুষ্ঠান হয়েছিল। জাঁকজমকের সেই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে আদিবাসী প্রথার পাঞ্চি শাড়ি পরিয়ে দিয়েছিলেন মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন বিরবাহা। তবে তারপরে ধীরে ধীরে নিজেকে পার্থের থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব এখন জেলে থাকলেও মন্ত্রী বিরবাহার দায়িত্ব বেড়েছে। এদিকে মানসও ঝাড়গ্রামে আসা বাড়িয়েছেন। অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ঝাড়গ্রাম পুরভোটের দলীয় দায়িত্বে পার্থ থাকলেও ফল প্রকাশের পর আর জেলায় আসেননি তিনি। বরং মানসই এসেছেন বার কয়েক। গত মে মাসে মুখ্যমন্ত্রীর দলীয় সভার আগে প্রস্তুতি বৈঠকও করেন মানস। পরে অবশ্য মমতার নির্দেশে বৈঠক করতে আসেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তন্ময় ঘোষ। এই আবহে এদিন মানসের বক্তৃতায় তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছেন বিরবাহা।
এবার ঝাড়গ্রাম শহরের দেবেন্দ্রমোহন মঞ্চে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের রাজ্যস্তরীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল অনেকটাই সাদামাঠা। সেই অনুষ্ঠানের মুখ্য অতিথি ও উদ্বোধক ছিলেন মানস। আমন্ত্রণপত্রে প্রথমে ছিল তাঁর নাম। সেখানে আদিবাসী উন্নয়নে মমতা-সরকারের ফিরিস্তি দিয়ে জনজাতিদের প্রতি মানসের আবেদন, ‘‘হাত জোড় করে বলছি, এগিয়ে চলুন, মুখ্যমন্ত্রীর পাশে থাকুন, তাঁকে সাহস দিন, আশীর্বাদ করুন।’’ তিনি বলেন, ‘‘আদিবাসীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদকে একযোগে কাজ করতে হবে। বিরবাহাকে বলছি, প্রত্যেক মাসে জেলার ভাল করে রিভিউ করবে। প্রত্যেক মাসে ব্লকে-ব্লকে যাও। দেখো। মুখ্যমন্ত্রী বিরবাহাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দফতরের স্বাধীন দায়িত্ব দিয়েছেন।’’ অনুষ্ঠান শেষে আবার দেখা যায়, জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মুকে ব্লকে ব্লকে মানুষের কাছে পৌঁছনোর কথা বলছেন তিনি। যা দেখে জেলা তৃণমূলের একাংশ মনে করছেন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মুর পাশাপাশি, দলের কাজ করবেন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহাও। এদিন কার্যত এমনই বার্তা দিতে চেয়েছেন মানস।
পরে মানস বলেন, ‘‘আদিবাসী ভাইবোনেদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরকারের কর্মসূচি তুলে ধরতে বলেছি। নতুন সভাপতি হয়েছেন দুলাল। তিনি তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে একসঙ্গে মানুষের কাছে যাবেন।’’ পঞ্চায়েত ভোটকে পাখির চোখ করেই এমন বার্তা? মানসের জবাব, ‘‘আজকের দিনে এমন প্রশ্ন না করাই ভাল।’’ তিনিই কি পঞ্চায়েত ভোটের আগে ঝাড়গ্রামে দলের সংগঠন দেখছেন? মানস বলেন, ‘‘তেমন কিছু নয়। নেত্রীর নির্দেশ মতো কর্মসূচিতে আসি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy