অধ্যক্ষ, ওয়ার্ডেন এবং কিছু শিক্ষিকার নামে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে তাঁদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন হলদিয়া নার্সিং কলেজ (আই কেয়ার)-এর ৪৮ জন ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকেরা।
তাঁদের অভিযোগ, কোনও কারণ ছাড়া হলদিয়া টাউনশিপের এই নার্সিং কলেজটির দ্বিতীয় বর্ষের ৬ ছাত্রীকে কার্যত ঘাড় ধাক্কা দিয়ে হস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ওই ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও ভাবা হয়নি।
কিন্তু কেন এই বহিষ্কার? ছাত্রীরা জানায়, এক ছাত্রীর অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে দেরি হওয়ায় তা নিয়ে ওই ছাত্রীর সাথে শিক্ষিকার বিবাদ বাধে। সেই সময়ে রানীগঞ্জের সায়ন্তী মিশ্র, দুর্গাপুরের ময়না বর, আসানসোলের নিবেদিতা মুখোপাধ্যায়ের মতো পাঁচ জন ওই ছাত্রীর পক্ষ নেন।
তাতে পরে ছাত্রীরা শিক্ষিকার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেও শাস্তি দিতে হস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁদের। ছাত্রীদের অভিযোগ, ৬ই জুন রাত ৮টার সময় নিরাপত্তারক্ষীর মাধ্যমে কলেজ থেকে এক কিমি দূরে হস্টেলের ঘর খালি করার নির্দেশ দেন কর্তৃপক্ষ। এই চিঠি পেয়ে ছাত্রীরা জানান, তাঁদের বাড়ি অন্য জেলায়। রাতে কোথায় যাবেন তারা?
ছাত্রীরা সেই সময়ে হস্টেলের ওয়ার্ডেন কবিতা মাইতি ও অধ্যক্ষ নমিতা চক্রবর্তীর কাছে ক্ষমা চাইলেও তাঁরা সে সবের তোয়াক্কা না করে বিদ্যুৎ-জলের সংযোগ ছিন্ন করে হস্টেলে তালা দেওয়ার হুমকি দেন। হাতে পায়ে ধরে ছাত্রীরা সেই রাতে থাকলেও ৭ জুন সকালে তাদের বের করে দেওয়া হয়। এতে তাঁরা সমস্যায় পড়েন। বহিষ্কারের খবর পেয়ে শুক্রবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হলদিয়ায় চলে আসেন অভিভাবকরা।
এর পর এ দিন দুপুরে ক্ষুব্ধ অভিভাবকের দল ও ছাত্রীরা অধ্যক্ষ এবং ওয়ার্ডেনকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের হাত থেকে বাঁচতে অধ্যক্ষ, ওয়ার্ডেন এবং কিছু শিক্ষিকা কলেজের একটি ঘরে ঢুকে পড়েন।
ছাত্রীরা জানান, কলেজের অধ্যক্ষ একটি নামী সংস্থার প্রসাধনীর ব্যবসা করেন। তা কিনতেও বাধ্য করা হয় তাঁদের। তাঁদের অভিযোগ, কমপক্ষে পাঁচশো টাকার প্রসাধনী কিনলে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি মেলে। এর সঙ্গেই নিম্নমানের পড়াশুনো, খাওয়া ও কিছু শিক্ষিকা কুৎসিত ভাষায় মানসিক নির্যাতন করেন বলে জানান ছাত্রীরা।
অধ্যক্ষ নমিতা চক্রবর্তী অভিযোগ অস্বীকার করেন। কেন হস্টেল থেকে ছয় ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হল তার কোনও সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। ‘বিষয়টি ওয়ার্ডেনের এক্তিয়ার’ বলে এড়িয়ে যান নমিতা দেবী।
ওয়ার্ডেন কবিতা মাইতিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, ‘‘মুখ খোলা বারণ আছে।’’
কিন্তু অধ্যক্ষ কি প্রসাধনী কিনতে চাপ দিতেন? নমিতা বলেছেন, ‘‘বিক্রি করতাম ঠিকই, তবে চাপ দিয়ে নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy