Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪

ডাক্তার সেজে প্রতারণা! শুনে তাজ্জব পান্না গ্রাম

বিজ্ঞাপন দেখে ফোন নম্বরে বহু ফোন আসত। অভিযোগ, কম সময়ের মধ্যে একাধিক পরিবারের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করে সে টাকা আদায় করে।

প্রতারক: সঞ্জয় সিংহ।

প্রতারক: সঞ্জয় সিংহ।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০১:৪৫
Share: Save:

সরকারি চাকরি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে টাকা আদায় থেকে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে নতুন নতুন লোকেদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা— ছোট থেকেই একের পর এক প্রতারণার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এমনই এক প্রতারণার অভিযোগে সম্প্রতি দাসপুরের সুজানগরের যুবককে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ।

আদতে বিহারে বাড়ি সঞ্জয় সিংহের। ছোট বেলায় মায়ের সঙ্গে সে ঘাটাল থানার পান্না গ্রামে মামা বাড়িতে চলে আসে। বছর কয়েক আগে পান্না ছেড়ে পাকাপাকি ভাবে বাড়ি ভাড়া নিয়ে দাসপুরের সুজানগর গ্রামে চলে আসে সে। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে সেখানেই থাকতে শুরু করে।

আগেও তার বিরুদ্ধে নানা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি সে নতুন প্রতারণার ফাঁদ পাতে। বিয়ে করার জন্য উপযুক্ত পাত্রীর সন্ধান চেয়ে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে সে জানায়, তার নাম দিব্যেন্দু রায়। সে পেশায় নিউরো সার্জন। বিদেশে বাড়ি রয়েছে। দু’টি চা বাগানও আছে। এখন কলকাতায় থাকে। দেওয়া হয়েছিল মোবাইল নম্বরও। বিজ্ঞাপন দেখে ফোন নম্বরে বহু ফোন আসত। অভিযোগ, কম সময়ের মধ্যে একাধিক পরিবারের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করে সে টাকা আদায় করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকমাস আগে বেলেঘাটা থানা এলাকার এক তরুণীর সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। বিয়ের কথাবার্তাও চলছিল। একসময় মায়ের অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সে ওই তরুণীর পরিজনেদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে এক লক্ষ টাকা চায়। বেলেঘাটা থানার এক আধিকারিক বলেন, “ওই তরুণীর পরিবার সঞ্জয়কে ৭৭ হাজার টাকা দিয়েছিল। ওই টাকা পেয়েই সে ফোন বন্ধ করে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।” ওই আধিকারিক জানান,“প্রায় ৮০-৯০ জন মহিলার কাছে ও এমন ভাবে টাকা আদায় করেছিল। তবে বেশি টাকা চাইত না। ২০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকার মধ্যেই টাকা দাবি করত। জেরায় সঞ্জয় এ সব স্বীকার করেছে। তার কাছ থেকে একাধিক সিম কার্ডও উদ্ধার হয়েছে।”

এলাকার এক ছেলের এমন কাণ্ড শুনে তাজ্জব পান্না গ্রামের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক অজিত পাল। তিনি আক্ষেপের সুরে বললেন, “ওর পড়াশোনায় তেমন মন ছিল না। ছোট থেকে সঞ্জয় নানা অন্যায় কাজ করে বেড়াত। আমি ওকে বাড়িতে নিয়ে এসে পড়াতাম। একদিন আমার ধান ভাঙানোর কলে ঢুকে চুরি করে বেপাত্তা হয়েছিল। মাকেও দেখে না ছেলেটা।”

পান্না গ্রামে বাপের বাড়িতেই থাকেন সঞ্জয়ের মা আরতি সিংহ। তিনি বললেন, “ছেলের সঙ্গে বহুদিন যোগাযোগ নেই। আমার গতর খেটে পেট ভরে। সঞ্জু এমন কাজ করলে পুলিশ ওকে শাস্তি দিক।”

অন্য বিষয়গুলি:

Fraud Doctor Matrimony Money
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE