Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Awas Yojana

আবাস তালিকায় গরমিল ধরলেন জেলাশাসক

কই পরিবারে দু’জন উপভোক্তার নাম দেখতে পান জেলাশাসক। সঙ্গে থাকা ভিআরপি কর্মী অবশ্য জানান, বাড়ি একটি হলেও দু’টি পরিবার আলাদা।

আবাস যোজনা।

আবাস যোজনা। —প্রতীকী ছবি।

রঞ্জন পাল
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪ ০৬:৪৬
Share: Save:

‘‘এ স্যার আমার নামটা লিখি দে, যাতে আমার একটা পাকা বাড়ি হয়। আমার ঘর নাই...’’ হাতের কাছে সরকারি আধিকারিককে পেয়ে কষ্টের কথা জানালেন সাপধরা গ্রাম পঞ্চায়েতের পুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা সোহাগি হাঁসদা। তিনি অবশ্য জানেন না ওই আধিকারিক কে? তিনি হলেন জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল। আধিকারিকদের সোহাগির নাম লেখার নির্দেশ দেন জেলাশাসক। কয়েকটি বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে গরমিল খুঁজে পেলেন জেলাশাসক। সঙ্গে সঙ্গে তা বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের সাপধরা পঞ্চায়েতের রাজপাড়া গ্রামে যান জেলাশাসক। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) দিলীপ মিশ্র, ঝাড়গ্রামের যুগ্ম বিডিও স্নেহাশিস মণ্ডল ও সাপধ পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক। প্রথমে এক আদিবাসী বৃদ্ধের বাড়িতে গিয়ে জেলাশাসক জিজ্ঞাসা করেন, কেউ সমীক্ষা করতে এসেছিলেন? ওই বৃদ্ধ জানান, মাটির বাড়িতে ফাটল ধরেছে। একই পরিবারে দু’জন উপভোক্তার নাম দেখতে পান জেলাশাসক। সঙ্গে থাকা ভিআরপি কর্মী অবশ্য জানান, বাড়ি একটি হলেও দু’টি পরিবার আলাদা। তবে জেলাশাসক দু’জনের জবকার্ড দেখতে চাইলে উপভোক্তারা জানান, ট্যাঙ্কে তালা লাগানো রয়েছে। বাড়িতে লোকজন নেই। জেলাশাসক ক্ষুণ্ণ হন। পরে জেলাশাসক পুকুরিয়া গ্রামে দুলা মুর্মু নামে এক উপভোক্তার বাড়িতে যান। দুলারও মাটির বাড়ি। চালার একপাশ ভেঙে পড়েছে। জেলাশাসক দুলার সঙ্গে কথা বলার সময় এগিয়ে আসেন সোহাগি।

জেলাশাসক পুকুরিয়া গ্রামে অন্য পাড়াতেও গিয়েছিলেন। সেখানে এক উপভোক্তার বাড়িতে গিয়ে দেখেন ইটের দেওয়াল দেওয়া বাড়িতে তালা লাগানো রয়েছে। তাঁরও নাম তালিকায় রয়েছে। জেলাশাসক জানতে চান, এটা কি বাড়ি? উত্তরে বাড়ির এক মহিলা বলেন, ‘‘গরু, ছাগল ও মুরগি থাকে।’’ পরে জেলাশাসক সেই বাড়ির তালা খোলার কথা বলেন। তালা খোলার পর মহিলা বলেন, ‘‘স্যার এখানে রান্না করি, আমরাও থাকি।’’ কথার অসঙ্গতি ধরে ফেলেন প্রশাসনের আধিকারিক। তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ওই মহিলা আগের সমীক্ষায় পাশের মাটির বাড়ি দেখিয়েছিলেন। ইতিমধ্যে আবাসের প্রথম পর্যায়ের গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে সমীক্ষা হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ব্লক স্তরের ১৫ শতাংশ সমীক্ষা শেষের মুখে। তৃতীয় পর্যায়ের ৭ শতাংশ ‘সুপার চেকিং’ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা গ্রামে গিয়ে গিয়ে ‘সুপার চেকিং’ করছেন। তার পরও জেলাশাসক নিজে পর্যবেক্ষণে গিয়ে খুঁজে পেলেন গরমিল।

সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রাম জেলায় ৫২ হাজার ১৯ জনের নাম রয়েছে তালিকায়। এর পর পুলিশ আধিকারিকেরা আবার সমীক্ষা করবেন। তার পর তৈরি হবে চূড়ান্ত তালিকা। এ দিন জেলাশাসক জেলা কালেক্টেরেটে প্রশাসনের সমস্ত দফতরের যে সব আধিকারিকরা সমীক্ষা করছেন তাঁদের নিয়ে বৈঠক করেন। ভিডিয়ো কনফারেন্সে জেলার বিডিওরা ছিলেন। জেলাশাসক। বলেন, ‘‘যোগ্যরা (শর্ত অনুযায়ী বৈধ প্রাপক) অবশ্যই পাবেন। যোগ্যরা বঞ্চিত হবেন না। অযোগ্যরা যেন না পান।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Awas Yojana DM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE