কলেজে মাইক বাজিয়ে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র।
স্নাতকস্তরে পরীক্ষা চলাকালীন কলেজের ভিতরে মাইক বাজিয়ে চলল ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। শুক্রবার এমন ছবি দেখা গেল কাঁথি দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয়ে।
পরীক্ষা এবং ফর্ম ফিলাপ চলাকালীন সরকারি অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা। পরীক্ষার খাতা জমা দেওয়ার পরে কলেজের অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান পরীক্ষার্থীরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয়ে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে গোটা এলাকার বহু মানুষ সরকারি প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার জন্য জড়ো হয়। যদিও, গত ১ ডিসেম্বর থেকে কলেজের দ্বিতীয় এবং চতুর্থ সিমেস্টারের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন পরীক্ষা চলছে। প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার পরীক্ষার্থীদের নিজস্ব অনলাইন পরিষেবা না থাকায় কলেজের সামনে একটি সহায়তা শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে এদিন প্রায় দু’শতাধিক পরীক্ষার্থী মাটিতে বসে পরীক্ষা দেন। পরীক্ষার খাতা ওই সহায়তা শিবিরের মাধ্যমে অনলাইন পদ্ধতিতে জমা দেন তাঁরা। একই সঙ্গে এদিন কলেজের স্নাতক স্তরের পাট ওয়ান এবং পার্ট টু দ্বিতীয় এবং চতুর্থ সিমেস্টারের ফর্ম ফিলাপ চলছিল।
বেশ কয়েকজন পড়ুয়ার অভিযোগ, গোটা কলেজ এলাকার বাসিন্দাদের দখলে চলে যায়। তাঁরা কোথায় বসে পরীক্ষা দেবেন, কিংবা ফর্ম ফিলাপ করবেন, জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তা ছাড়া মাইক বাজিয়ে সরকারি কর্মসূচি হওয়ায় কলেজের সামনে বসে যাঁরা পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তাঁদের যথেষ্ট অসুবিধা হয়েছে। দ্বিতীয় সিমেস্টারের একাধিক পড়ুয়ার দাবি, ফর্ম ফিলাপের জন্য দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। কলেজে গিয়ে বসার মতো সুযোগ মেলেনি। এক সময় ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা কলেজের অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে সরকারি কর্মসূচির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মীরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এমন ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। কাঁথি-৩ ব্লকের সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক কালীপদ শিট বলেন, ‘‘অনলাইন পদ্ধতিতে পরীক্ষা হলেও দূর-দূরান্তের ছেলেমেয়েরা কলেজের বাইরে বসে কয়েকদিন ধরে পরীক্ষা দিচ্ছেন। অথচ সেখানে মাইক বাজিয়ে সরকারি কর্মসূচি চলছে। পরীক্ষার্থীদের কথা না ভেবে এটা করা একেবারেই অনুচিত হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে পরীক্ষার্থী এবং যাঁরা ফর্ম ফিলাপ করতে এসেছিলেন তাঁদের জন্য বসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা উচিত ছিল কলেজ কর্তৃপক্ষের।’’
যদিও কলেজের অধ্যক্ষ সুবিকাশ জানার দাবি, ‘‘বাড়িতে বসেই পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আগেই নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল। তবে কলেজের ভিতরে কাউকে পরীক্ষা দিতে দেখা যায়নি। তা ছাড়া সরকারি অনুষ্ঠানে কলেজের ছেলেমেয়েদের তেমন অসুবিধাও হয়নি।’’
মাইক বাজানো নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে কাঁথি-৩ এর বিডিও নেহাল আহমেদ বলেন, ‘‘ধারাবাহিকভাবে মাইক ব্যবহার করা হয়নি। তা ছাড়া কলেজের ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধা হবে কিনা সে ব্যাপারেও কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তাঁরা অনুমতি দেওয়ার পরে তবেই সেখানে ‘দুয়ারে দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি করা হয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy