পুরভোটের প্রার্থী তালিকায় নতুন মুখ এনে রাজনৈতিক জমি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছে বামেরা। ছাত্র-যুব সংগঠন থেকে উঠে এসেছেন, এমন অনেকেই এ বার প্রার্থী হতে পারেন বলে খবর। ইতিমধ্যে এ নিয়ে দলে আলোচনা হয়েছে। বাম নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, প্রার্থী নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক যোগ্যতা এবং কর্মদক্ষতা দু’টোই দেখা হবে। তবে রাজনৈতিক বিশ্বস্ততাই অগ্রাধিকার পাবে।
সামনেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ৬টি পুরসভায় নির্বাচন। এর মধ্যে ঘাটাল মহকুমার ৫টি পুরসভা এবং খড়্গপুর পুরসভা। চলতি সপ্তাহের শেষে কিংবা আগামী সপ্তাহের গোড়ায় বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হতে পারে। বাম নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, এ বার স্থানীয়স্তরের আলোচনাকে গুরুত্ব দেওয়ায় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে একটু দেরি হচ্ছে। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক দীপক সরকার বলেন, “পুরসভা নির্বাচন নিয়ে স্থানীয়স্তরে আলোচনা চলছে। শীঘ্রই প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায়ও জানান, দলের রাজ্য সম্মেলন ছিল। স্থানীয়স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে। কোথাও কোথাও আলোচনা অনেকটাই এগিয়েছে। ছাত্র-যুব সংগঠনের নতুন মুখরাই কি এ বার প্রার্থী তালিকায় গুরুত্ব পাবেন? দীপকবাবুর জবাব, “তালিকায় নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ই থাকবে।”
একের পর এক নির্বাচনে বামেদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে। দলকে এখন ত্রিমুখী লড়াই সামলাতে হয়েছে। সেখানে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতে দেরি হওয়ায় দলের মধ্যে উষ্মাও দেখা দিয়েছে। দলের এক সূত্রের দাবি, সন্ত্রাস-অত্যাচারের মধ্যে থেকেও যাঁরা মাথা উঁচু করে দলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সাহসের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন, প্রার্থী বাছাইয়ে তাঁদেরই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। জেলার এক বাম নেতার কথায়, “সময়টা কঠিন। রাজনৈতিক বিশ্বস্ততা বড় ব্যাপার। গতবার দলের প্রতীকে জিতে পরবর্তী সময় কেউ কেউ দলছুট হয়ে গিয়েছিলেন। আমরা চাই না, এ বারও এমনটা হোক।” নির্বাচনে ধারাবাহিক রক্তক্ষরণের পর বাম নেতৃত্ব মেনে নিয়েছেন, তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে ১৮ থেকে ত্রিশ বছর বয়সীদের মধ্যে দলের কোনও আবেদনই আর অবশিষ্ট নেই। এই অবস্থায় তাই তরুণ প্রজন্মকে গুরুত্ব দিতে চাইছে বামেরা। একই সঙ্গে বৃহত্তর বাম ঐক্যের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
জেলার এই ৬টি পুরসভায় গতবার বামেদের আসন ভাগাভাগির ছবিটা ঠিক কেমন ছিল?
ঘাটালের ১৭টি আসনের মধ্যে সিপিএম প্রার্থী দিয়েছিল ৭টিতে। সিপিএম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী ছিল ৩টিতে। ঘাটাল উন্নয়ন কমিটির প্রার্থী ছিল বাকি ৭টিতে। চন্দ্রকোনার ১২টি আসনের মধ্যে সিপিএম প্রার্থী দিয়েছিল ৬টিতে। বেকার সমিতি প্রার্থী ছিল ৪টিতে। নাগরিক সমিতির প্রার্থী ছিল বাকি ২টিতে। ক্ষীরপাইয়ের ১০টি আসনের সবক’টিতেই সিপিএম প্রার্থী দিয়েছিল। রামজীবনপুরের ১১টি আসনের সবক’টিতেও সিপিএমের প্রার্থী ছিল। খড়ারের ১০টি আসনের মধ্যে সিপিএমের প্রার্থী ছিল ৯টিতে। ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী ছিল ১টিতে।
খড়্গপুরের ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে সিপিএম প্রার্থী দিয়েছিল ১৩টিতে। সিপিএম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী ছিল ৪টিতে। সিপিআই ১৪টিতে, সিপিআই সমর্থিত নির্দল ২টিতে। বাকি ২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল খড়্গপুর বিকাশ মঞ্চ। এ বার অবশ্য বিকাশ মঞ্চের সঙ্গে বামেদের আসন সমঝোতা হচ্ছে না। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ৩৫টি আসনের মধ্যে সিপিএম ১৮টিতে এবং সিপিআই ১৭টিতে প্রার্থী দেবে। ফরওয়ার্ড ব্লক আবার ২টি আসন দাবি করেছে (২৮ এবং ১৭ নম্বর ওয়ার্ড)।
৬টি পুরসভায় সব মিলিয়ে আসন রয়েছে ৯৫টি। গতবার এর মধ্যে ৫৬টিতে প্রার্থী দিয়েছিল সিপিএম। সিপিএম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী ছিল ৭টিতে। সিপিআই প্রার্থী দিয়েছিল ১৪টিতে। সিপিআই সমর্থিত নির্দল প্রার্থী ছিল ২টিতে। অন্য দিকে, ফরওয়ার্ড ব্লক একটিতে প্রার্থী দিয়েছিল। এ বার অবশ্য এই আসন ভাগাভাগির সামান্য হেরফের হতে পারে। চন্দ্রকোনায় প্রার্থী দেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছে সিপিআই। এখানে তাদের ২-৩টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা বলেন, “প্রার্থী নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা চলছে। খড়্গপুরের ক্ষেত্রে আলোচনা অনেকটাই এগিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy