তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ সম্প্রসারণ হোক বা ভাঙড়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টাওয়ার বসানো— জমি জটে বারবার উন্নয়ন প্রকল্প থমকে যাওয়ার নজির রয়েছে রাজ্যে। বারবার আলোচনা করেও অনেক ক্ষেত্রে রফাসূত্র অধরাই। পশ্চিম মেদিনীপুরে অবশ্য ছবিটা উল্টো। সেতু, রাস্তার মতো জেলার ৯টি উন্নয়নমূলক প্রকল্পে কোনও সমস্যা ছাড়াই জমি অধিগ্রহণ করল প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে জমিদাতাদের সঙ্গে আলোচনাই যে সাফল্যের মন্ত্র তা মানছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, গত এক-দেড় বছরে জেলায় অন্তত ৯টি প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি। জমিদাতাদের বোঝাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বারেবারে ছুটে গিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা। আর তাতেই মিলেছে সাফল্য। জেলার এক প্রশাসনিক কর্তা মানছেন, “সেতু, রাস্তা তৈরির মতো কাজে জমি অধিগ্রহণে সমস্ত রাজনৈতিক দল সহযোগিতাই করছে। কখনও কখনও জট যে সামনে আসেনি তা নয়। দফায় দফায় আলোচনার ফলে সেই জট কেটে গিয়েছে।” জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনাও বলছেন, “সকলে সহযোগিতা করছেন। তাই কাজ এগোনো সম্ভব হচ্ছে।’’
সাম্প্রতিক কালে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে নয়াগ্রামে সেতুর জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়। ভসরাঘাট সেতুর সংযোগকারী রাস্তার জন্য ১.৬৮ একর জমি প্রয়োজন ছিল। জমিদাতাদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার মাধ্যমে সহজেই এখানে জমি অধিগ্রহণ হয়। দ্রুত তৈরি হয় সংযোগকারী রাস্তা। চালু হয় ভসরাঘাটের নবনির্মিত ‘জঙ্গলকন্যা সেতু’। আর কোন কোন প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ হয়েছে জেলায়? জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, গোপীবল্লভপুর-হাতিবাড়ি রাস্তা, গড়বেতার মাইতা সেতু, লালগড়ের আমকলা সেতু, কল্যাণচক-শ্রীনগর রাস্তা, সন্ধিপুর সেতু, বাড়জীবনপুরের রাস্তার জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আগামী দিনে কাঁটাখালি সেতুর জন্য ৭.৪২ একর, বিষ্ণুপুর-লোয়াদা রাস্তার জন্য ২.৬১ একর জমি অধিগ্রহণ শুরু হবে বলে প্রশাসনের এক সূত্রে খবর।
জমি জট না থাকায় কাজ শেষের পর দ্রুত চালুও হয়ে গিয়েছে গড়বেতার মাইতা সেতু। শিলাবতীর উপর নতুন এই সেতু চালু হওয়ায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারাও। জমি অধিগ্রহণের পর যেখানে মসৃণভাবে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলছে, সেখানে প্রশাসনের গলায় কাঁটা ডেবরার লোয়াদা সেতু। জমি জটে আটকে এই সেতুর সংযোগকারী রাস্তা তৈরির কাজ। রাস্তা না হওয়ায় তৈরি হয়েও পড়ে রয়েছে সেতু। জেলার পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরির আশ্বাস, “জমিদাতাদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। জট কাটাতে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার বৈঠক হয়েছে। ফের বৈঠক হবে। আশা করি, শীঘ্রই জট কেটে যাবে। সংযোগকারী রাস্তার কাজ শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy