নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের জেরে ভিন্ রাজ্যে কাজ হারিয়ে ফিরে আসা শ্রমিকদের জন্য ‘সমর্থন’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তাতে বিশেষ সাড়া না মিললেও জেলায় জেলায় টাকা বরাদ্দ হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত শিকে ছেঁড়েনি পশ্চিম মেদিনীপুরের। আট মাস কেটে গেলেও জঙ্গলমহলের এই জেলার জন্য সমর্থন প্রকল্পে কোনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি। ফলে, হতাশ কাজহারা শ্রমিকেরা।
সমর্থন প্রকল্পে আবেদনকারীদের মধ্যে আছেন সুশান্ত আদক, অসিত দোলুইরা। মেদিনীপুর গ্রামীণের বেড়াপালের বাসিন্দা সুশান্ত চেন্নাইতে সোনার কাজ করতেন। নোট বাতিলের পরে তৈরি সঙ্কটের সময় কাজ ছেড়ে গ্রামে ফেরেন। সুশান্ত বলছিলেন, “প্রকল্পের টাকাটা পেলে একটা দোকানঘর করতাম। জানি না করবে টাকা পাব।’’ মুম্বইতে সোনার কাজ ছেড়ে ফিরে আসা মাদারবনির বাসিন্দা অসিতও বলছিলেন, ‘‘অনেক দিন আগে আবেদন করেছি। এখনও কোনও টাকা পাইনি।’’
পশ্চিম মেদিনীপুরে এই প্রকল্পের তিন সদস্যের কমিটি করে দিয়েছে রাজ্য। কমিটির সদস্য তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি মানছেন, “সমর্থন প্রকল্পে এখনও জেলার জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি।’’ তবে তিনি জানান, ইতিমধ্যে ৩ হাজার শ্রমিকের নাম রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়েছে। আরও ৫ হাজার নাম পাঠানো হবে। কিন্তু আবেদনকারীরা টাকা পাবেন কবে? অজিতবাবুর জবাব, ‘‘জেলায় টাকা এলেই উপভোক্তাদের দিয়ে দেওয়া হবে।’’ পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, বর্ধমান, বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার, হাওড়া রাজ্যের এই ১০টি জেলায় সমর্থন প্রকল্প চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই মতো বাজেটে প্রকল্পটির জন্য ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। ঠিক হয়, ৫০ হাজার কাজ হারানো শ্রমিককে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।
সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, এই প্রকল্পে কাজহারা শ্রমিকেরা ব্লকে আবেদন করবেন। তা খতিয়ে দেখবেন সংশ্লিষ্ট থানার আইসি কিংবা ওসি। তাঁরা বিডিওকে সবুজ সঙ্কেত দিলে তবেই ওই শ্রমিকের আবেদন জেলায় পাঠানো যাবে। জেলাস্তরের কমিটি তারপর আবেদন খতিয়ে দেখবে। তারপর শ্রমিকের নাম রাজ্যের কাছে প্রস্তাব করা হবে।
জেলায় সেই ভাবে কাজ এগোলেও টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় কাজহারা শ্রমিকেরা বঞ্চিতই থেকে গিয়েছেন। সমস্যায় পড়েছেন ঘাটাল, দাসপুর, মেদিনীপুর গ্রামীণ, খড়্গপুর গ্রামীণ প্রভৃতি এলাকার বহু শ্রমিক যাঁরা ভিন্ রাজ্যে কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরে এসেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy