বাঁধের রাস্তায় বসে গিয়েছে লরির চাকা। নিজস্ব চিত্র।
বেআইনি নির্মাণ আর বাঁধে ভারী যান চলাচলে দুর্বল হয়েছিল বাঁধন। যার জেরে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে কোলাঘাটের দেনানে রূপনারায়ণ নদের বাঁধে বিপজ্জনক ধস নেমেছিল। সেই অংশ প্রশাসন মেরামত করলেও হুঁশ ফেরেনি গাড়ি চালকদের। অভিযোগ, প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাতের অন্ধকারে চলছে বালি, ইট, পাথর বোঝাই ভারী পণ্যবাহী লরি। মঙ্গলবার সকালেই এমন একটি পাথর বোঝাই লরি নদীর বাঁধে বসে যায়। এতে যান চলাচলের যেমন বিঘ্ন ঘটেছে, তেমনই প্রশাসনিক নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, দেনানের ডাক বাংলোর সামনে পাথর বোঝাই ১২ চাকার একটি লরির চাকা এ দিন রূপনারায়ণের বাঁধে বসে যায়। ক্রেন এনে লরিটিকে তুলতে হয়। এর জেরে নদের বাঁধ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শাসকদলের নেতাদের একাংশ টাকার বিনিময়ে রাতে ওই ভারী গাড়িগুলি যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করছে স্থানীয়দের একাংশ এবং কংগ্রেস। কোলাঘাট ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি সমীর হোসেন বলেন, ‘‘ভারী গাড়ি যাতায়াতের কারণে কয়েক মাস আগে দেনানে রূপনারায়ণের বাঁধে বিপজ্জনক ধস নামে। বাঁধ মেরামতি হতে না হতেই ফের ভারী গাড়ি চলছে। শাসক দলের কিছু নেতা টাকার বিনিময়ে রাতে গাড়ি যেতে দিচ্ছে।’’
উল্লেখ্য, চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে কোলাঘাট রেল স্টেশন সংলগ্ন দেনান এলাকায় বাঁধের প্রায় ১৫০ মিটার এলাকা ধসে যায়। তাতে গার্ডওয়াল এবং বাঁধের পাকা রাস্তার একাংশ তলিয়ে যায় রূপনারায়ণের গর্ভে। বাঁধের উপরের রাস্তা দিয়ে কোলাঘাট থেকে সহজে তমলুকে পৌঁছনো যেত। ওই রাস্তায় ট্রেকার চলাচল করত। কিন্তু, ট্রেকারের পাশাপাশি, ইমরাতি সামগ্রীর কারবারিরা রাস্তাটি দিয়ে ১২ থেকে ১৬ চাকার লরি চালাত বলে অভিযোগ। তাতেই বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ে। দেনানে ধসের পর সেচ দফতর ও স্থানীয় পঞ্চায়েত একটি বৈঠক করে জানিয়ে দেয়, রূপনারায়ণের বাঁধের উপর দিয়ে আট টনের বেশি সামগ্রী নিয়ে কোনও গাড়ি চলাচল করতে পারবে না। কিন্তু সেচ দফতর বাঁধ মেরামতির কাজ শেষ করতেই দেখা গিয়েছে, রাতে এবং ভোরে ১২- ১৬ চাকার লরিতে করে ইট, ইট ভাটার কয়লা, বালি, পাথর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এদিন তেমনই একটি লরি রাস্তায় বসে গিয়েছিল। এ ভাবে নিয়ম ভেঙে বাঁধের উপর দিয়ে ভারী গাড়ি চলাচল করা প্রসঙ্গে সেচ দফতরের পাঁশকুড়া-১ শাখার এসডিও ললিত চৌধুরী বলেন, ‘‘রূপনারায়ণের বাঁধে ভারী গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ। তারপরও কীভাবে ভারী গাড়ি চলছে, খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy