প্রতীকী ছবি।
অগভীর সেচ পাম্প দিয়ে মাত্রারিক্ত জল তোলায় দ্রতগতিতে কমছে ভূগর্ভস্থ জলস্তর। তার জেরে এগরা ও পটাশপুরকে ‘ব্ল্যাক জ়োন’ ঘোষণা করল রাজ্য ভূগর্ভস্থ জলসম্পদ বিভাগ। ২০০৫ সালে এই এলাকাই ছিল গ্রিন জ়োনের তালিকায়।
তিন ফসলি জমিতে সেচের প্রয়োজনে অগভীর সেচপাম্প দিয়ে জল তোলার ব্যবস্থা রয়েছে রাজ্যে। ২০০৫ সালে তদানীন্তন বাম সরকার পশ্চিমবঙ্গ ভূগর্ভস্থ জল নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করে। যেখানে আবেদনকারীকে অগভীর সেচ পাম্প বসানোর জন্য আগে বিদ্যুৎ দফতরে আবেদন করতে হত। আবেদন খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে রাজ্য জলতদন্ত অধিদফতর (SWID) সেচপাম্প বসানোর অনুমতি দিত। বিদ্যুৎ দফতর সেচ পাম্পগুলিকে আলাদা বিদ্যুৎ সংযোগ দিত। ২০১২ সালে এপ্রিল মাস থেকে রাজ্য সরকার এই আইন শিথিল করে। বিদ্যুত চালিত অগভীর সেচ পাম্প বসানোর জন্য সরকারি ভর্তুকি ঘোষণা করে। পাঁচ হর্স পাওয়ার ক্ষমতার অগভীর সেচ পাম্প বসানোর জন্য সরাসরি বিদ্যুৎ দফতরকে অনুমতি দেওয়ার অধিকার দেওয়া হল।
রাজ্য সরকারের ৬০ কোটি টাকা ভর্তুকিতে প্রায় ৬০ হাজার অতিরিক্ত অগভীর সেচ পাম্প বসানো হয়। কিন্তু দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেচ পাম্পগুলি ভূগর্ভস্থ জলসম্পদ বিভাগের নিয়ম মেনে চলেনি। পটাশপুর ও এগরা থানায় সেই অব্যবস্থা আরও বেশি। অভিযোগ, অগভীর সেচ পাম্পগুলি অনুমতি নেওয়ার পরে বেআইনি ভাবে পাঁচ হর্স পাওয়ারের পরিবর্তে দ্বিগুণ ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প বসিয়েছে। বেআইনি ভাবে মাটির নীচ থেকে যথেচ্ছ ভাবে জল তুলে নেওয়া হচ্ছে।
অত্যাধিক জল তোলার কারনে শীতের শেষ দিক থেকে গ্রামের পানীয় জলের নলকূপ বন্ধ হয়ে পড়ে। শুকিয়ে যায় পুকুর ও ঝিল। গ্রীষ্মকালে পানীয় জলের সঙ্কট চরমে ওঠে। জেলায় পানীয় জলের সঙ্কটের কারণে গত জানুয়ারি মাস থেকে জেলা প্রশাসন নতুন করে সেচ পাম্প বসানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পটাশপুর ও এগরার ভূগর্ভস্থ জলস্তর স্বাভাবিকের থেকে নীচে নামায় জল সঙ্কটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় পানীয় জলের জোগান সুনিশ্চিত করার চিন্তায় প্রশাসন।
২০০৫ সালে যেখানে পটাশপুর ও এগরা ভূগর্ভস্থ জলের স্তরের তথ্য অনুযায়ী রাজ্য জল পর্ষদের তালিকায় ‘গ্রিন জোন’-এ ছিল। সেখানে ২০২০ সালে পটাশপুর ও এগরাকে ‘ব্ল্যাক জোন’ ঘোষণা করেছে রাজ্য ভূগর্ভস্থ জলসম্পদ বিভাগ। ব্ল্যাক জোন অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলে নতুন করে সেচ পাম্প বসানো যাবে না। যে সকল সেচ পাম্প রয়েছে সেগুলো থেকে পরিমিত জল ব্যবহার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পানীয় জলের প্রয়োজন মেটাতে জল অপচয় বন্ধের আর্জি জানানো হয়েছে।
তমলুক বিদ্যুৎ দফতরের রিজিওনাল ম্যানেজার শ্যামল কুমার হাজরা বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে নতুন করে সেচ পাম্পের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না। ‘ব্ল্যাক জোন’ গুলিতে ভূগর্ভস্থ জলস্তরের বেশ অবনতি হয়েছে। তাই মানুষকে জলের ব্যবহার এবং অপচয় বন্ধে আরও সতর্ক হতে হবে।’’ এগরা মহকুমা কৃষি আধিকারিক প্রশান্ত মান্না বলেন, ‘‘ ব্ল্যাক জোন-এর বিষয়টি আমার জানা নেই। এই বিষয়ে আমাদের কাছে কোনও নির্দেশিকাও আসেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy