টেরাকোটা শিল্পের কর্মশালা গড়বেতা কলেজে। নিজস্ব চিত্র।
স্বনির্ভরতার দিশা দেখাতে ছাত্রছাত্রীদের টেরাকোটা শিল্পের কাজ শেখাচ্ছে গড়বেতা কলেজ। শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী কর্মশালা। সেখানে হাতেকলমে টেরাকোটার শিল্পকর্ম শেখাচ্ছেন শান্তিনিকেতনের কলাভবনের প্রাক্তনী ঝাড়খণ্ডের এক ভাস্কর। বীরভূম থেকে আনা হয়েছে মাটিও।
গত ১৪ মার্চ থেকে গড়বেতা কলেজে শুরু হয়েছে টেরাকোটা শিল্পের এই কর্মশালা। চলবে ২০ তারিখ পর্যন্ত। কর্মশালা পরিচালনা করছে কলেজের ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস (আইপিআর) সেল। প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ২৭ জনকে, তার মধ্যে ১৯ জন এই কলেজের ছাত্রছাত্রী, বাকিরা স্থানীয় বেকার যুবক। আইপিআর সেলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক পোখরাজ গুহ, রীতা শীল বলেন, ‘‘প্রথম পর্যায়ে কলেজের ও বাইরের মিলিয়ে ২৭ জনকে নিয়ে কর্মশালা হচ্ছে। তাঁদের মূলত সেরামিকের উপর প্রয়োজনীয় ও শোভাবর্ধক সামগ্রী তৈরিই শেখানো হচ্ছে।’’
কর্মশালার প্রধান প্রশিক্ষক ভাস্কর কুমার কৃষ্ণ শান্তিনিকেতনের কলাভবনের প্রাক্তনী। তিনি প্রতিদিন দু’দফায় শিক্ষার্থীদের হাতেকলমে টেরাকোটার কাজ শেখাচ্ছেন।
প্রথমে সাদা কাগজে শিল্পের বিষয়বস্তু আঁকা, তারপর বীরভূম থেকে আনা বিশেষ মাটিকে কাজে লাগিয়ে তার উপর সেই বিষয়বস্তু ফুটিয়ে তোলার কাজ শেখাচ্ছেন তিনি। কুমার কৃষ্ণ বলেন, ‘‘সেরামিকের (পোড়ামাটি) উপর কাজই প্রাথমিকভাবে শেখানো হচ্ছে। এখন মূলত টেরাকোটার বিষ্ণুপুর ঘরানার কাজই বেশি হয়। তাই সেটাকে মাথায় রেখেই টেরাকোটা টাইপের ক্লে মডেলিং-সহ এই শিল্পের বিভিন্ন ক্রিয়াকর্ম শেখানো হচ্ছে তাঁদের।’’ তিনি জুড়ছেন, টেরাকোটার কাজে এখনকার প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের আগ্রহ বাড়ছে।
কর্মশালায় টেরাকোটার কাজ শিখছেন গড়বেতা কলেজের স্নাতকোত্তরের ছাত্রী শিউলি দত্ত, বিপিএডের ছাত্রী মৌমিতা হেমব্রমরা। তাঁরা বলেন, ‘‘টেরাকোটা কী আগে অতটা জানতাম না। কলেজ থেকে এ নিয়ে কর্মশালা করায় আগ্রহ বাড়ে। হাতেকলমে অনেক কিছু শিখছি। পরে আমাদেরই কাজে লাগবে।’’ গড়বেতার বাসিন্দা জয়দেব পাণ্ডা, সাগ্নিক ঘোষ, রামালা দে-রা ছবি আঁকেন। তাঁরা টেরাকোটা শিল্পের কাজ শিখতে আগ্রহী। কলেজের কর্মশালায় এঁদের মতো অনেকেই যোগ দিয়েছেন। তাঁরাও বললেন, ‘‘এখন টেরাকোটা শিল্পের কাজ বাড়ছে। তাই এই কর্মশালায় যোগ দিয়ে হাতেকলমে শিখছি। ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।’’
এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে গড়বেতা কলেজের অধ্যক্ষ হরিপ্রসাদ সরকারের বক্তব্য, ‘‘ছাত্রছাত্রী-সহ অন্যদের টেরাকোটা শিল্পকর্ম শেখানোর উদ্দেশ্যই হচ্ছে তাঁদের স্বনির্ভর হওয়ার দিশা দেওয়া। শেখার পরে ছাত্রছাত্রীরা প্রথমে আমাদের কলেজের সৌন্দর্যায়ন বৃদ্ধিতে কাজ করবে। পরে নিজেদের বাড়িতে বা অন্যত্রও কাজে লাগাতে পারে। আয়ের সংস্থানও হতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy