Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

লতাগুল্ম দিয়েই স্বচ্ছল হওয়ার স্বপ্ন 

আনাদরে প্রকৃতির কোলে বেড়ে উঠে, যাদের দিকে ফিরেও তাকায় না মানুষ, সেই রকম লতা গুল্ম দিয়ে শৌখিনতার প্রসার ঘটাচ্ছে মোহনপুরের বাসিন্দারা। বন-জঙ্গল থেকে সংগ্রহীত হরেক গাছগাছালি, লতাগুল্ম দিয়ে ওই এলাকার গড়ে উঠেছে কুটির শিল্প।

লতা-গুল্ম দিয়ে তৈরি শিল্প সামগ্রী। নিজস্ব চিত্র

লতা-গুল্ম দিয়ে তৈরি শিল্প সামগ্রী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
এগরা শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

আনাদরে প্রকৃতির কোলে বেড়ে উঠে, যাদের দিকে ফিরেও তাকায় না মানুষ, সেই রকম লতা গুল্ম দিয়ে শৌখিনতার প্রসার ঘটাচ্ছে মোহনপুরের বাসিন্দারা। বন-জঙ্গল থেকে সংগ্রহীত হরেক গাছগাছালি, লতাগুল্ম দিয়ে ওই এলাকার গড়ে উঠেছে কুটির শিল্প।

দুই মেদিনীপুরের সীমানা লাগোয়া মোহনপুর থানার কুশুন্দা গ্রামের বাসিন্দারা ওই কুটির শিল্পের মাধ্যমে আর্থিকভাবেও স্বচ্ছল হচ্ছেন। তাঁদের তৈরি জিনিস মণ্ডপসজ্জা থেকে বাড়ির ভিতরের সাজসজ্জাতেও ঠাঁই পাচ্ছে। ওই সব শৌখিন সামগ্রীর মধ্যে জনপ্রিয় হল কমলির বল বা ডেকরেশান বল।

কুশুন্দা গ্রামের বাসিন্দা বাদল গিরি ওই সব শৌখিন সামগ্রীর পাইকারি ব্যবসায়ী। গ্রামের মহিলা এবং ছেলেদের দিয়ে তিনি ওই সব সামগ্রী বানান। এবং পরে তাঁদের কাছ থেকে মজুরি দিয়ে তা কিনে নেন। বাদলবাবু বলেন, ‘‘মূলত ১০০ প্রকার প্রাকৃতিক সামগ্রী থেকেই শৌখিন জিনিসগুলি তৈরি হয়। ওডিশা থেকে কাঁচামাল আমদানি করা হয়। বেলের খোল, ডাবের খোল, জঙ্গলের কমলি, কাঠের ছত্রাক, আমড়ার বিচি, কাঠ বাদাম, খেজুর কাঠি-সহ নানা অপরিচিত সামগ্রী দিয়ে ওই শৌখিন সামগ্রী তৈরি করা হয়।’’

গ্রামের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘গ্রামের মানুষের হাতে সারা বছর কাজ থাকে না। ওই কুটির শিল্প এখন বাড়তি রোজকারের সুযোগ করে দিয়েছে।’’ ওই শিল্পের সঙ্গে জড়িত দেবযানী সাহু এবং জয়ন্তী সাহু বলেন, ‘‘বাড়িত রোজগার হয় ঠিকই। তবে তা তেমন বেশি কিছু নয়। তবে অবসর সময়ে কিছুটা সংসার খরচ বাঁচাতে এই কাজ করা। নিজেদের হাতের খরচটা তো অন্তত উঠে আসে।’’ শুধু কুশুন্দা গ্রাম নয়, পাশ্ববর্তী বৈতা, ধৌড়ি, জামুয়া, কুশমদা, চৈতা, আরগড়া চক গ্রামের মানুষেও ওই শিল্পের সঙ্গে জড়িত।

তবে এই শিল্পে ফড়েদের বাড়াবাড়ি নিয়েও চিন্তিত শিল্পীরা। তাঁদের বক্তব্য, শৌখিন সামগ্রী একত্রিত করে পাড়ি দেয় কলকাতা, চেন্নাই, দিল্লি, বেঙ্গালুরুর মতো একাধিক বড় শহরে। আর জন্য জিনিস ফড়েদের কাছে বিক্রি করেন স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ, অনেক সময় মাল পাঠিয়েও টাকা মেলে না। এতে শিল্পীরা লোকসানের মুখে পড়েন।

ওই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কারিগরদের তাই রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন, যদিও কোনওভাবে আর্থিক সহায়তা করা যায়। এ ব্যাপারে মোহনপুর পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি তপনকুমার প্রধান বলেন, ‘‘এই শিল্পের উপর এলাকার বহু মানুষ নির্ভর করেন। আগামী দিনে রাজ্য সরকারের কাছে এই কুটির শিল্পের উপর একটি প্রজেক্ট পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে অজানা শিল্প যেমন অন্যদের কাছে জনপ্রিয় হবে, তেমন এলাকার মানুষেরা আর্থিভাবে স্বচ্ছল হবেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Cottage industry Natural Elements Fancy Products
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE