—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আজ, শুক্রবার থেকে ফের শুরু হচ্ছে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বার বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে জনজাতি অধ্যুষিত গ্রামে। এই গ্রামগুলিতে ভ্রাম্যমাণ শিবির হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরে জনজাতি অধ্যুষিত গ্রামের সংখ্যা এক হাজারের বেশিই। জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, ‘‘ওই সব গ্রামে ভ্রাম্যমাণ শিবির হবে। প্রস্তুতি সারা হয়েছে।’’
এ জেলায় গ্রাম রয়েছে ৪,৯১৪টি। এর মধ্যে জনজাতি অধ্যুষিত গ্রাম ১,৩১৬টি। প্রশাসনের পর্যবেক্ষণ, এই সংখ্যক গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ৩০ শতাংশের বেশি বাসিন্দা জনজাতিভুক্ত। জনজাতি অধ্যুষিত সব গ্রামেই ভ্রাম্যমাণ শিবির হবে, নিশ্চিত করছে জেলা প্রশাসন। অর্থাৎ, প্রশাসনের কর্মীরাই পৌঁছে যাবেন এই সব গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে। সরকারি প্রকল্পের আবেদনপত্র দেবেন। জমাও নেবেন। যাঁর যে প্রকল্পের আবেদনপত্র প্রয়োজন, তাঁকে সেই প্রকল্পের আবেদনপত্র দেওয়া হবে। আবেদনপত্র পূরণে সাহায্যও করা হবে। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ওই সব গ্রামের কতজনের জাতিগত শংসাপত্র রয়েছে, কতজনের পাওয়া উচিত, কতজন পেয়েছেন, ইতিমধ্যে এ সব খতিয়ে দেখা হয়েছে। যাঁদের কাছে ওই শংসাপত্র থাকা উচিত, কিন্তু এখনও নেই, তাঁদের ওই শংসাপত্রের ব্যবস্থা করা হবে।
বছর ঘুরলে লোকসভা ভোট। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, লোকসভা ভোটের আগে ‘পিছিয়ে পড়া’ গ্রামের মানুষের অভাব- অভিযোগ দূর করতে চাইছে তৃণমূল সরকার। তাঁদের কাছে যাবতীয় সরকারি সুযোগ পৌঁছে দিতে চাইছে তারা। যা তাঁদের প্রাপ্য। রাজনৈতিক মহল মনে করাচ্ছে, গত লোকসভা, বিধানসভা, এমনকি পঞ্চায়েত ভোটেও জেলায় জনজাতিদের একটা অংশ ঝুঁকেছিল বিজেপির দিকে। জমি হারিয়েছিল তৃণমূল। ফের ক্ষোভ দানা বাঁধছে। সেই অনুন্নয়ন ঘিরেই অসন্তোষ দানা বাঁধছে বলে অনুযোগ। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, প্রান্তিক মানুষের ‘দুয়ারে’ পৌঁছে সেই ক্ষোভে মলম দেওয়ারই চেষ্টা চলছে। সেই কারণেই এ বার ভ্রাম্যমাণ শিবির আগের থেকে বেশি হবে।
প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আবেদনপত্র নিয়ে টোটোর মতো যানে করে প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে যাবেন সরকারি কর্মীরা। এ বার ১৫ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিবির হবে। আবেদনকারীদের ২ থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে পরিষেবা প্রদান করতে হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার সবমিলিয়ে প্রায় ৫,৭০০টি শিবির হওয়ার কথা। এর মধ্যে ভ্রাম্যমাণ শিবির প্রায় ১,৬০০টি। সবমিলিয়ে ৩৬টি পরিষেবা পাওয়ার আবেদন জানানোর সুযোগ থাকছে। জেলার প্রতিটি অঞ্চলে, প্রতিটি ওয়ার্ডে শিবির হবে। কোথায়, কেমন শিবির হচ্ছে, তা দেখতে জেলা থেকে নজরদারিও চালানো হবে। পরিদর্শনে যাবেন এডিএম, এসডিও, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট প্রমুখ। জেলায় ২১টি ব্লক এবং ৭টি শহর রয়েছে। কোন ব্লকে, কোন শহরে, কে পরিদর্শনে যাবেন জেলা থেকে, সে সংক্রান্ত এক নির্দেশিকা জারি করেছেন জেলাশাসক। জেলায় ৬ জন এডিএম রয়েছে। তিনটি মহকুমা রয়েছে। প্রতিটি মহকুমায় নজরদারির দায়িত্বে দু’জন এডিএম থাকছেন। পাশাপাশি, এসডিও, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সহ ১৯ জন আধিকারিককে নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এঁদের কেউ একটি ব্লক কিংবা একটি শহরের দায়িত্বে থাকছেন। কেউ আবার একাধিক ব্লক কিংবা শহরের দায়িত্বে থাকছেন। জেলাশাসকের নির্দেশ, কোথায় কোন প্রকল্পে, কতগুলি আবেদন এল, শিবির শেষে রোজ তার পর্যালোচনা করতে হবে। পরিদর্শন রিপোর্টও জেলায় জমা করতে হবে। জানা গিয়েছে, গত বার জেলায় ৫,৪৬৫টি শিবির হয়েছিল। এর মধ্যে ভ্রাম্যমাণ শিবির ১,৪২২টি। সে বার সবমিলিয়ে জেলায় ৪ লক্ষ ২৬ হাজার ১৮৭টি আবেদন এসেছিল। এর মধ্যে ৩ লক্ষ ৮৩ হাজার ৯১৫ জনকে ইতিমধ্যে পরিষেবা প্রদান করা হয়েছে।
একই ছবি ঝাড়গ্রামেও। লোধা-শবর অধ্যুষিত এলাকায় এবার বেশি করে হবে দুয়ারে সরকারের শিবির। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলাশাসক সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, গতবার জেলায় ২১৯৩টি জায়গায় শিবির হয়েছিল। এ বার দুয়ারে সরকারের ২৩৬৫টি শিবির করা হচ্ছে। ২২৬টি এলাকায় বাড়তি শিবির করা হচ্ছে। বিশেষ করে জনজাতি এলাকায় বেশি করে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ৪৭০টি ভ্রাম্যমাণ শিবির হবে। শিবিরে ১৮টি দফতরের ৩৬টি পরিষেবা দেওয়া হবে। ৩৬টির মধ্যে এবার উদ্যানপালন দফতর ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতর পরিষেবা বাড়ছে। কয়েকটি জায়গায় স্বাস্থ্য শিবির হবে। কয়েকটি শিবিরে রক্তদান শিবির হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy