পুর প্রশাসকের পদে বসছেন দীনেন রায় (হলুদ উত্তরীয়)। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য সরকারের এক নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা ঠুকেছেন মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রণব বসু। ঘটনাচক্রে, ঠিক তার পরের দিন, বুধবারই পুরসভায় এসে নিজের দায়িত্ব বুঝে নিলেন দীনেন রায়। দীনেনকে নতুন পুর- প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন করা হয়েছে। এ দিন বিকেলে দীনেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য। সরকারি নির্দেশে মহকুমাশাসকই এতদিন মেদিনীপুর পুর- প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান ছিলেন।
প্রাক্তন পুরপ্রধানের মামলা এবং পরের দিনই দীনেনের দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার মধ্যে যোগসূত্র খুঁজছেন অনেকে। দীনেন-ঘনিষ্ঠদের অবশ্য দাবি, এরমধ্যে কোনও যোগসূত্রই নেই। বুধবার যে দায়িত্ব হস্তান্তর হবে তা পূর্ব নির্ধারিতই ছিল।
মেদিনীপুরে পুরসভা নির্বাচন বকেয়া রয়েছে। তাই বছর দুয়েক ধরে পুরসভা পরিচালনা করছে প্রশাসকমণ্ডলী। মহকুমাশাসক ছাড়াও চার সদস্যের সেই প্রশাসকমণ্ডলীতে ছিলেন মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন্দ্রনাথ মাইতি, প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রণব বসু, প্রাক্তন কাউন্সিলর নির্মাল্য চক্রবর্তী। সম্প্রতি সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় প্রণবকে।
দলের অন্দরে গুঞ্জন, পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সূত্রেই পদ খোয়াতে হয়েছে প্রাক্তন পুরপ্রধানকে। সম্প্রতি মেদিনীপুরে এক অরাজনৈতিক মঞ্চে শুভেন্দুর উপস্থিতিতেই তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন প্রণব। ঘটনাচক্রে তারপরেই এই অপসারণ। ওই পদক্ষেপের পরে জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে প্রণবকে পাশে রেখে তাঁর পাশে থাকার বার্তাও দেন শুভেন্দু।
এই আবহে রাজ্য সরকারের পুর- প্রশাসকমণ্ডলী গঠন সংক্রান্ত সাম্প্রতিক নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রণব। সেখানে ওই নির্দেশের যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, নির্দেশ যুক্তিসঙ্গত নয়। আজ, বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।
গত সপ্তাহে নতুন পুর-প্রশাসকমণ্ডলী গঠনের নির্দেশ বেরোলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত পুরসভায় আসেননি খড়্গপুরের (গ্রামীণ) বিধায়ক দীনেন। দলের এক সূত্রে খবর, পুরসভার এই দায়িত্ব নিতে না কি নিমরাজি ছিলেন তিনি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অবশ্য আর দেরি করেননি। বুধবার পুরসভায় এসে নিজের দায়িত্ব বুঝে নেন। রোজকার কাজ চালাতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমি সম্মিলিত সহযোগিতা চাই। আশা করি, সহযোগিতা পাব।’’
এ দিন বিকেলে পুরসভায় এসে দীনেনের সঙ্গে দেখা করে যান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি, নারায়ণগড়ের বিধায়ক প্রদ্যোৎ ঘোষ, খড়্গপুরের বিধায়ক প্রদীপ সরকার প্রমুখরা। পুরসভায় দেখা গিয়েছে সৌমেন খান, শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ প্রাক্তন কংগ্রেস কাউন্সিলরকেও।
প্রণবের মামলা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, ‘‘উনি একটা পিটিশন করেছেন বলে শুনেছি। ব্যক্তিগত ধ্যানধারণা থেকে উনি ওই পিটিশন করে থাকতে পারেন। আমরা মনে করি, পুর- দফতর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটাই সঠিক। এ দিন পুরসভায় দায়িত্ব হস্তান্তরের সময়ে অনেক কাউন্সিলরও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা পুর- দফতরের সিদ্ধান্তকেই সমর্থন করেছেন।’’ প্রাক্তন পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে কি দল কোনও ব্যবস্থা নেবে? অজিতের জবাব, ‘‘রাজ্য নেতৃত্ব যেমন নির্দেশ দেবেন সেই মতো পদক্ষেপ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy