Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ট্রলার উল্টে জলে মাছ প্রশ্নে নাব্যতা

এই প্রথম নয়। পর পর তিন বছর মাছ ধরার মরসুমে তিনটি ট্রলার এ ভাবে উল্টে গেল দিঘা মোহনায়। সব ক্ষেত্রেই একই অভিযোগ— নাব্যতা কমছে দিঘা মৎস্য বন্দরের। ট্রলার তো দূরের কথা, ছোট ছোট নৌকাও বন্দরে ভিড়তে সমস্যার মুখে পড়ে।

উল্টে: তীরের কাছেই চরায় আটকে ট্রলার। নিজস্ব চিত্র

উল্টে: তীরের কাছেই চরায় আটকে ট্রলার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:১০
Share: Save:

ফের ডুবল ট্রলার। নষ্ট হল প্রায় সাড়ে পাঁচ টন মাছ, যার মধ্যে ইলিশও রয়েছে বেশ কয়েক টন। সোমবার ভোরে দিঘা মোহনা থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে উল্টে যায় ‘সওদাগর’ নামে একটি ট্রলার। মালিক শেখ মমরেজের দাবি, মাছ ধরে ফেরার সময় চরায় ধাক্কা লেগেই উল্টেছে ট্রলার। নষ্ট হয়েছে প্রায় ৮ লক্ষ টাকার মাছ। ১০ জন মৎস্যজীবী সাঁতরে পাড়ে ফিরেছেন। ট্রলারটিকেও ভেঙে পাড়ে নিয়ে আসা হয়েছে।

এই প্রথম নয়। পর পর তিন বছর মাছ ধরার মরসুমে তিনটি ট্রলার এ ভাবে উল্টে গেল দিঘা মোহনায়। সব ক্ষেত্রেই একই অভিযোগ— নাব্যতা কমছে দিঘা মৎস্য বন্দরের। ট্রলার তো দূরের কথা, ছোট ছোট নৌকাও বন্দরে ভিড়তে সমস্যার মুখে পড়ে।

সঙ্গতি সম্পন্ন ট্রলার মালিকরা অনেক সময়ই মাঝ সমুদ্রে ট্রলার দাঁড় করিয়ে ছোট ছোট নৌকায় মাছ পাড়ে নিয়ে আসেন। তবে বেশির ভাগ ট্রলারই ঝুঁকি নিয়ে বন্দরে ঢোকে বলে দাবি ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের। কারণ ছোট নৌকায় করে মাছ নিয়ে আসতে গেলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। বেশির ভাগ মৎস্যজীবীই সে খরচ করতে পারেন না।

সংগঠনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, “দ্রুত নাব্যতা সঙ্কটের সমাধান না হলে দু’এক বছরের মধ্যে বন্ধ হয়ে যেতে পারে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর।’’

২০১২ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিঘা সফরে এসে মৎস্য বন্দর পরিদর্শনে করেছিলেন। তখনই মৎস্যজীবীরা তাঁকে নাব্যতা সঙ্কট ও ড্রেজিংয়ের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছিলেন। তারপর বিধানসভার মৎস্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি মোহনা পরিদর্শনও করেছে। কিন্তু মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, লাভ হয়নি শেষ পর্যন্ত।

দীর্ঘদিন ধরে পলি জমতে জমতে নাব্যতা সঙ্কট দেখা দিয়েছে দিঘা মোহনায়। বাম আমলেও মৎস্যজীবীরা জোরালো দাবি তুলছিলেন ড্রেজিং নিয়ে। টাকাও বরাদ্দ করেছিল মৎস্য দফতর। কাজও হয়েছিল খানিকটা। কিন্তু কাজ সম্পূর্ণ হয়নি বলে দাবি মৎস্যজীবীদের।

দিঘা মৎস্য বন্দরের উপর প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৪০ হাজার এবং পরোক্ষে প্রায় ২০ হাজার মৎস্যজীবী নির্ভরশীল। তাঁদের আশঙ্কা এ ভাবে ক্রমশ নাব্যতা কমতে থাকলে টান পড়বে তাঁদের রুজি রোজগারে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE