Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
অনন্তনাগে নিহত সবংয়ের ভূমিপুত্র
Sabang

নতুন বাড়িতে ফেরা হল না, আসবে দেহ

পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের দণ্ডরা পঞ্চায়েতের সিংপুর গ্রামের এই যুবক ২০১৫ সাল থেকে শ্রীনগরে কর্মরত ছিলেন।

নিহত জওয়ানের বাবাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন সাংসদ মানস ভুঁইয়া। নিজস্ব চিত্র

নিহত জওয়ানের বাবাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন সাংসদ মানস ভুঁইয়া। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সবং শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২০ ০২:১৩
Share: Save:

বাড়ির ছেলের আধাসেনায় চাকরি অভাবের সংসারে আলো জ্বেলেছিল। সবংয়ের গ্রাম থেকে ছেলেকে যেতে হয়েছিল সুদূর শ্রীনগরে। তাঁর বেতনের টাকাতেই তিল-তিল করে তৈরি হয়েছে পাকা বাড়ি। কথা ছিল, মে মাসে গ্রামে ফিরে নতুন বাড়িতে উঠবেন তিনি। তবে লকডাউনে আসতে পারেননি। আর এ বার একেবারে কফিনবন্দি হয়ে গ্রামে ফিরবে শ্যামলকুমার দে (২৭)-র দেহ।

শুক্রবার জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার বিজবেহারায় জঙ্গি হানায় প্রাণ গিয়েছে সিআরপি জওয়ান শ্যামলের। পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের দণ্ডরা পঞ্চায়েতের সিংপুর গ্রামের এই যুবক ২০১৫ সাল থেকে শ্রীনগরে কর্মরত ছিলেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিজবেহারা হাইওয়েতে পাহারায় ছিলেন তিনি। তখনই পিস্তল নিয়ে হামলা চালায় এক জঙ্গি। এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত হন শ্যামল ও ৬ বছরের এক শিশু। শ্যামলের মৃত্যুসংবাদ পৌঁছনোর পরে পরিবার থেকে গ্রাম শোকাচ্ছন্ন। এ দিন মৃত জওয়ানের বাড়িতে এসে তাঁর বাবা-মাকে আশ্বস্ত করেন সাংসদ মানস ভুঁইয়া ও বিধায়ক গীতা ভুঁইয়া। আসে বিডিও, ওসি-সহ পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমাদের কাছে ওই সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যুর খবর এসেছে। জঙ্গিদের চালানো দু’টি গুলিতে নিহত হয়েছেন তিনি। আমরা নিয়ম মেনে ‘গার্ড অফ অনারে’ ওঁর শেষকৃত্যের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

পেশায় চাষি বাদলকুমার দে ও গৃহবধূ শিবানী দে-র একমাত্র সন্তান ছিলেন শ্যামল। বছর পাঁচেক আগে সিআরপি-তে যোগ দেন তিনি। গত কয়েক মাস ধরে তাঁর রোজগারের টাকাতেই গ্রামে তৈরি হচ্ছিল দোতলা পাকা বাড়ি। গত ডিসেম্বরে এসে বাড়ির কাজ তদারক করে গিয়েছিলেন শ্যামল। কথা ছিল, গত মে মাসে এসে নতুন বাড়িতে উঠবেন। তবে লকডাউন বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এ বার সেই নতুন বাড়িতে শ্যামলের কফিনবন্দি দেহ আসার কথা ভাবতেই চোখ ছলছল করছে পরিজনেদের। পঞ্চায়েত অফিসের কর্মী শ্যামলের জেঠতুতো দাদা শান্তনু দে বলেন, “ওঁর টাকাতেই বাড়ি হচ্ছিল। এ বার এলে বিয়ের দেখাশোনা হবে বলে ঠিক হয়েছিল। সকালে কাকুর সঙ্গে ভাইয়ের হোয়াটস অ্যাপ কলে কথা হয়। বলেছিল, কাজে বেরোবে। দুপুরে কাকু বারবার ফোন করলে একজন কমান্ড্যান্ট পরিচয় দিয়ে জানান, শ্যামল আর নেই।”

একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে কথা বলার অবস্থায় নেই শিবানী। বাবা বাদলকুমার দে-র হাহাকার, “আমার সব শেষ হয়ে গেল।” শোকার্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সাংসদ মানস ভুঁইয়া বলেন, “দেশের জন্য ওঁর এই আত্মবলিদানে গোটা সবং গর্বিত।”

অন্য বিষয়গুলি:

Sabang CRPF Terrorist Attack Kashmir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy