প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের সব কৃষককে ফসল বিমার সুবিধা দিতে ভরসা প্রযুক্তি। এ বার থেকে শুধু কৃষকবন্ধু প্রকল্পে নথিভুক্ত চাষিরাই নন, প্রকল্পের বাইরে থাকা কৃষকদের নামও অনলাইনে ফসল বিমায় নথিভুক্ত করা হবে। আর কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাপ করা হবে উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে।
চলতি খরিফ মরসুম থেকেই নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে চলেছে রাজ্য সরকার। কৃষি দফতর ও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের (ইসরো) মধ্যে এই নিয়ে চুক্তিও হয়েছে। নবান্নে এই সংক্রান্ত একটি কন্ট্রোল রুমও থাকবে বলে কৃষি দফতর সূত্রে খবর। মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘সব কৃষককে ফসল বিমার আওতায় আনতে এ বার থেকে কৃষি দফতর কৃষকের নাম ফসল বিমায় নথিভুক্ত করবে। আমরা এই মরসুম থেকে ইসরোর উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে কৃষি ক্ষেত্রে নজরদারি চালাব। নবান্নে এর জন্য কন্ট্রোল রুম থাকবে। আশা করছি নতুন প্রযুক্তিগত পদ্ধতির প্রয়োগে সব কৃষক উপকৃত হবেন।’’
এতদিন প্রতি বছর খরিফ ও রবি মরসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে সরকার ঘোষিত নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কৃষকদের ফসল বিমায় নাম নথিভুক্ত করতে হত। যে সব কৃষক ব্যাঙ্ক ও সমবায় থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেন, সেই ব্যাঙ্ক বা সমবায়কে ওই কৃষকের নাম ফসল বিমায় নথিভুক্ত করতে হত। যাঁরা ঋণ নিতেন না, তাঁদের বিমায় আবেদন করতে গেলে প্রথমে কৃষি দফতর থেকে নিতে হত ‘ক্রপ সোন’ বা ফসল রোপণের শংসাপত্র। কৃষক কতটা জমিতে চাষ করেছেন তা কৃষি আধিকারিকরা তদন্ত করে ওই শংসাপত্র দিতেন। কৃষককে ওই শংসাপত্রর সঙ্গে নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি ও আধার কার্ডের প্রতিলিপি-সহ আবেদন করতে হত দায়িত্বপ্রাপ্ত বিমা সংস্থার কাছে। গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক অফিসের মাধ্যমে ওই কাজ হত।
করোনা সংক্রমণ এড়াতে এই পদ্ধতিতে বদল এনেছে সরকার। রাজ্যের অধিকাংশ কৃষকই ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। সেই তথ্যকেই ফসল বিমার জন্য নথিভুক্তির কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় থাকা কৃষকদের নামের নথি বিমা সংস্থার পোর্টালে আপলোড করবে কৃষি দফতরই। যদি কোনও কৃষকের নাম প্রকল্পে না থাকে, সে ক্ষেত্রে গত খরিফ মরসুমে ফসল বিমার আবেদনে তাঁর নাম থাকলেও তিনি বিমার অনলাইন নথিভুক্তির আওতায় চলে যাবেন। এর বাইরে যে সব কৃষক থাকবেন তাঁরা অনলাইন অথবা পঞ্চায়েতের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিমা এজেন্টের মাধ্যমে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। নতুন এই পদ্ধতিতে লাগবে না ‘ক্রপ সোন’ শংসাপত্র। ইতিমধ্যেই কৃষকদের যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখে বিমা সংস্থার পোর্টালে আপলোড করতে সব জেলাকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য কৃষি দফতর।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে বিমা কোম্পানি ও কৃষকদের মধ্যে দড়ি টানাটানি থাকেই। সেই বিতর্কে রাশ টানতেই পাশাপাশি সাহায্য নেওয়া হবে উপগ্রহ চিত্রের। জমিতে কত পরিমাণ জল আছে, ফসলের স্বাস্থ্য কেমন, এলাকাভিত্তিক আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর কত পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হয়েছে সব তথ্যই জানাবে উপগ্রহ। বিষয়টি মেনে নিয়েছে কৃষি দফতর ও বিমা সংস্থাগুলিও।
সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে কৃষক সংগ্রাম পরিষদ। সংগঠনের সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘খুবই ভাল উদ্যোগ। এর ফলে কৃষকদের অনেক সময় বাঁচবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy