Advertisement
২৯ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

ঠোঙা বানিয়ে, সেলাই করে বৃদ্ধাশ্রমে অবসরযাপন

দূরদর্শনের পর্দায় বিভিন্ন সিরিয়াল দেখতে দেখতে নিজের ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনির কথা মনে পড়ে যায় ওঁদের। তাঁদের দেখা পাওয়ার, কাছে যাওয়ার আকুলতায় কেঁদে ওঠে মন।

কাঁথির বৃদ্ধাশ্রমে। নিজস্ব চিত্র

কাঁথির বৃদ্ধাশ্রমে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২০ ০১:৫৫
Share: Save:

লকডাউনে ঘরবন্দি সকলেই। করোনা পরিস্থিতিতে বাড়ির লোকেদের কথা মনে পড়লেও চার দেওয়ালের মধ্যেই আটকে রাখতে হচ্ছে সেই আবেগকে। চোখের জল শুকোচ্ছে চোখেই। জেলার বৃদ্ধাশ্রমগুলির আবাসিকদের এখন দিন কাটছে এ ভাবেই।

দীর্ঘদিন বাড়িমুখো হননি রমা গিরি (নাম পরিবর্তিত)। ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধার দাবি, ‘‘আশ্রমে অন্য আবাসিকদের সঙ্গেই কাটিয়ে দিচ্ছেন সময়। তবে একেঘেয়েমি কাটাতে কেউ কাগজের ঠোঙা বানিয়ে, কেউ কাপড় সেলাই করে অবসর কাটাচ্ছেন।’’ এঁরা সকলেই কাঁথি-১ ব্লকের ফরিদপুর লোকশিক্ষানিকেতন পরিচালিত বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিক।

দূরদর্শনের পর্দায় বিভিন্ন সিরিয়াল দেখতে দেখতে নিজের ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনির কথা মনে পড়ে যায় ওঁদের। তাঁদের দেখা পাওয়ার, কাছে যাওয়ার আকুলতায় কেঁদে ওঠে মন। কিন্তু উপায় তো নেই! লকডাউনের কারণে তাই আশ্রমের চার দেওয়ালই এখন তাঁদের ঠিকানা। আশ্রম কর্তৃপক্ষ জানান, সেখানে ২৫ জন আবাসিক রয়েছেন। এর মধ্যে ৯ জন আবাসিককে বাড়ির লোকেরা নিয়ে গিয়েছিলেন। লকডাউন চলায় তাঁরা আশ্রমে ফিরতে পারেননি। বাকিরা আশ্রমেই রয়েছেন।’’

রোজ দু’বেলা খাবার জুটছে ঠিক। কিন্তু করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে পরিবার এবং নিকটজনের কথা ভেবে ঘুম ছুটেছে। এই বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছেন এমন এক আবাসিকের দাবি, ‘‘ছেলে-বৌমা সকলের কথা ভেবে ব্যাকুল হই। দুর্দিনে কেমন আছে ওঁরা, কী করছে কিছুই জানতে পারছি না।’’ কারও কারও মোবাইল ফোন থাকায় তাতেই খোঁজ নিয়ে মনকে প্রবোধ দিচ্ছেন ওঁরা। আর নয়তো অন্যদের সঙ্গে স্মৃতি রোমন্থন করেই সময় কাটিয়ে দিচ্ছেন। তবে কাজ করতে ইচ্ছুক এমন অনেক আবাসিক ঠোঙা বানানো থেকে সেলাই মেশিনে পুরনো কাপড় সেলাইয়ের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন। তাঁদের তৈরি ঠোঙা বাজারে বিক্রিও হয়।

আশ্রম পরিচালন কমিটির তরফে গৌতম কুমার শাসমল বলেন, ‘‘আবাসিকদের ভরণপোষণে তেমন অসুবিধা হচ্ছে না ঠিকই, তবে লকডাউন পরিস্থিতিতে অনেকেই বাড়ির লোকেদের কথা ভেবে ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন। তাঁদের নানাভাবে সান্ত্বনা দিয়ে মানসিকভাবে স্বতঃস্ফূর্ত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। যাঁরা হাতের কাজ করে অবসর সময় কাটান, তাঁদের তৈরি সামগ্রী বাজারে বিক্রি করে সেই টাকা তাঁদের হাতেই তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy