বৃহস্পতিবার রাতে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা। —নিজস্ব চিত্র।
স্যালাইন-কাণ্ডে ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তার মধ্যে রয়েছেন ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার (পিজিটি)। ওই ছয় জুনিয়র ডাক্তারকে নিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই স্ত্রী রোগ এবং অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের ২২ জন জুনিয়র ডাক্তার কর্মবিরতি শুরু করেছেন হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগে। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে হাসপাতালের বাকি সব বিভাগেও জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি শুরু হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। ছয় জুনিয়র ডাক্তারকে নিলম্বিত করার নির্দেশ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তারেরা।
বৃহস্পতিবার বিকেলেই স্যালাইন-কাণ্ডের জেরে ১২ জন চিকিৎসককে নিলম্বিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই তালিকায় ছ’জন পিজিটি চিকিৎসক পড়ুয়া মৌমিতা মণ্ডল, পূজা সাহা, জাগৃতি ঘোষ, ভাগ্যশ্রী কুন্ডু, মণীশ কুমার এবং সুশান্ত মণ্ডল। এ ছাড়া হাসপাতালের সুপার, আরএমও-সহ অন্য চিকিৎসকেরাও রয়েছেন। নিলম্বিত করার নির্দেশের পরই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা বৈঠকে বসেন। বিকেল ৪টে থেকে শুরু হয় বৈঠক। শেষে রাত প্রায় সাড়ে ৯টা নাগাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দীকে ইমেল করে কর্মবিরতির সিদ্ধান্তের কথা জানান তাঁরা। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ অধ্যক্ষের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যান মৌসুমী। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, অধ্যক্ষের ঘরে কেউ না থাকার কারণে ইমেল করে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন তাঁরা।
জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, সিনিয়র ডাক্তার এবং প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সরাসরি তত্ত্বাবধানেই কাজ করেন জুনিয়রেরা। এই অবস্থায় তাঁদের উপর দায় ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে মনে করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ‘দুর্নীতি’কে ঢাকতে গিয়ে তাঁদের উপর দায় চাপানোর চেষ্টা চলছে বলে দাবি মেদিনীপুর মেডিক্যালের পিজিটি ডাক্তারদের। তাঁরা বলেন, “যেখানে আমরা মানুষের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করি, সেখানে আমাদের সমাজের শত্রু বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।” এর প্রতিবাদেই অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের দাবি, আগে যথাযথ তদন্ত করে দেখা হোক। তার পর যদি কারও বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হয়, তখন সংশ্লিষ্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক প্রশাসন।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ১২ জনকে নিলম্বিত করার সিদ্ধান্তের পরই তাঁদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য দফতর থেকে অভিযোগ জানানো হয়েছে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায়। জেলা উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক থানায় গিয়ে অভিযোগ জমা দিয়ে আসেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআরও দায়ের করেছে পুলিশ। এ দিকে অসুস্থ প্রসূতি রেখা সাউয়ের সন্তানের দেহ ময়নাতদন্তের পর বৃহস্পতিবার রাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে পরিবারের হাতে। রেখার স্বামী সন্তোষ সাউ এবং শাশুড়ি পুষ্প সাউ সদ্যোজাতের দেহ নিয়ে যান হাসপাতাল থেকে।
স্বাস্থ্য ভবন থেকে বৃহস্পতিবারই নির্দেশিকা জারি করে মেদিনীপুর মেডিক্যালের নতুন সুপার হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় সাগর দত্ত মেডিক্যালের অধ্যাপক ইন্দ্রনীল সেনকে। এ দিন রাতেই দায়িত্ব গ্রহণের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যালে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy