—প্রতীকী ছবি।
পূর্ব মেদিনীপুরে এক মাসের শিশুর শরীরে মিলল করোনা ভাইরাস। পরিবারের কেউ করোনা আক্রান্ত না হলেও এত কম বয়সীর শরীরে করোনার ভাইরাস মেলায় চিন্তিত চিকিৎসকেরা।
করোনা কালে শিশুদের ‘টিপিক্যাল কাওয়াসাকি’ বা ‘পেডিয়াট্রিক মাল্টিসিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোম’ (পিআইএমএস) রোগে আক্রান্ত হতে দেখা গিয়েছে। ‘কাওয়াসাকি’ রোগের উপসর্গযুক্ত ওই নতুন রোগকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় ‘লুক্কায়িত করোনা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের করোনা পরীক্ষা রিপোর্ট ছিল অমীমাংসিত। কিন্তু এবার পূর্ব মেদিনীপুরে এক মাসের ওই শিশুর শরীরে সরাসরি মিলেছে করানো ভাইরাস।
গত ১৭ নভেম্বর রামনগর থানা এলাকার এক দম্পতির এক মাস একদিনের শিশুকন্যা জ্বরে আক্রান্ত হয়। ১৭ নভেম্বর থেকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করিয়েও জ্বর না কমায় ওই দম্পতি ৩০ নভেম্বর শিশুটিকে কোলাঘাটে একটি বেসরকারি শিশু হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই হাসপাতাল সূত্রের খবর, জ্বরের পাশাপাশি শিশুটির মাল্টি অর্গ্যান ফ্যালিওর হয়ে যায়। বুকে, শিরায় জল জমে যাওয়া, রক্তাল্পতা-সহ নানা সমস্যা দেখা দেয় শিশুটির। ৩০ নভেম্বরই শিশুটির করানা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। এর পরে শিশুটিকে রক্ত দেওয়ার পাশাপাশি চলে প্লাজমা থেরাপি। আপাতত শিশুটি বিপদমুক্ত।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এর আগে রাজ্যে এক করোনা আক্রান্ত প্রসূতির সদ্যোজাত সন্তানের শরীরে মিলেছিল করোনা ভাইরাস। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুরের এই শিশুটির পরিবারের কেউই করোনা আক্রান্ত ছিলেন না। তার পরেও শিশু যেভাবে করোনার বাহক হয়েছে, তা দেখে চিন্তিত চিকিৎসক মহল। ‘পিআইএমএস’ রোগে আক্রান্ত শিশুর ক্ষেত্রে কাওয়াসাকি রোগের উপসর্গ দেখা যায়। কিন্তু এই শিশুটির ক্ষেত্রে কাওয়াসাকি রোগেরও কোন রকম লক্ষ্মণ ছিল না বলে জানান কোলাঘাটের ওই বেসরকারি শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক প্রবীর ভৌমিক। তিনি বলেন, ‘‘করোনা কালে পিআইএমএস আক্রান্ত অন্তত ১৫ জন শিশুর চিকিৎসা করেছি। সাধারণত দু’থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুরা পিআইএমএস আক্রান্ত হয়। কিন্তু এক মাসের শিশু সংক্রমিত, আমার কাছে একেবারে প্রথম।’’
প্রবীরের অনুমান, ‘‘‘সম্ভবত ওই শিশুটির পরিবারের কেউ উপসর্গহীন করোনার বাহক ছিলেন। সেখান থেকেই শিশুটি আক্রান্ত হয়েছে। চিকিৎসার পর শিশু সুস্থ রয়েছে। ওর কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।’’ শিশুটির দাদু বলেন, ‘‘নভেম্বর থেকে নাতনি জ্বরে ভুগছিল। করোনা পরীক্ষা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা করানোর পর আপাতত ও ভাল রয়েছে।’’
কম বয়সী শিশুর শরীরে ভাইরাসের হদিস সম্পর্কে ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের প্রফেসর ডিরেক্টর অপূর্ব ঘোষ বলছেন, ‘‘এর আগেও ৫০ দিনের একটি শিশুর শরীরে করোনা ভাইরাস মিলেছিল। যত দিন যাচ্ছে করোনা সংক্রমণের নতুন নতুন দিক সামনে আসছে। এটা আমাদের কাছে সত্যিই একটা চ্যালেঞ্জ। অভিভাবকদের বলি, সবাই খুব সচেতন ও সতর্ক থাকুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy