Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

রেলশহরের তরুণী এ বার করোনা কোপে

শুক্রবার রাতে খড়্গপুরের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের আয়মার ওই তরুণীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে।

আক্রান্তের বাড়ির এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

আক্রান্তের বাড়ির এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২০ ০০:৫৬
Share: Save:

খুলেছে বাজার। উপচে পড়ছে ভিড়। আসছে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন। বহু ক্ষেত্রেই শিকেয় উঠেছে করোনা বিধি। এই আবহেই ফের রেলশহরে করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলল। এবার কোপে এক তরুণী।

শুক্রবার রাতে খড়্গপুরের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের আয়মার ওই তরুণীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। বছর উনিশের তরুণী গত ১৮.মে থেকে জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের উপসর্গে ভুগছিলেন। গত ২০মে তাঁকে খড়্গপুর রেলের প্রধান হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। উপসর্গ থাকায় করোনা পরীক্ষার জন্য ২১মে নেওয়া হয় লালারসের নমুনা। সেই রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। শনিবার ওই তরুণীকে পাঁশকুড়ার করোনার লেভেল-৩ বড়মা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাঁর বাবা রেল কারখানায় কর্মরত হলেও থাকেন পুর এলাকায়।

এই ঘটনার পরে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে রেল ও রাজ্য প্রশাসনে। তরুণীর বাবা, মা, ভাই, পিসির পরিবার, ভাড়া বাড়ির মালিকের পরিবারের সদস্য-সহ প্রায় ২৬জনকে নিভৃতবাস কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি তরুণীর পাড়ার ৩৭টি পরিবারের ১২০জন বাসিন্দাকে গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকতে বলা হয়েছে। এলাকাটি গণ্ডিবদ্ধ হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে। খড়্গপুরের মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “ওই তরুণী কী ভাবে আক্রান্ত হলেন সেই সূত্রের খোঁজ চলছে। আপাতত ওঁর পরিজন-সহ সংস্পর্শে আসা সকলকে নিভৃতবাস কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এলাকাটি কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে।”

শহরে এর আগে ৬জন আরপিএফ করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখন বিভিন্ন এলাকা ঘিরে দিয়ে গণ্ডিবদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এরপর ক্রমে পরিস্থিতি বদলেছে। লকডাউন শিথিল হয়েছে৷ এসেছে একের পর এক শ্রমিক স্পেশাল ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন। ঘূর্ণিঝড় আমপানের পরে করোনা সতর্কতা আরও শিকেয় উঠেছে। তবে এই তরুণী কীভাবে আক্রান্ত হলেন তা নিয়ে ধন্দে প্রশাসন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণীর বাড়িতে তাঁর পিসির পরিবারের সদস্যদের আনাগোনা রয়েছে। লকডাউনের আগে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ফিরেছিলেন পিসেমশাই। গত ২০ মার্চ বিশাখাপত্তনম থেকে ফেরে তরুণীর ভাই। তবে তরুণীর বাবা বলছেন, “আমার ছেলে দু’মাস আগেই এসেছে। লকডাউনের মধ্যে আমরা বাইরে কোথাও যাইনি। বাইরে থেকে কেউ বাড়িতে আসেনি। গত ২১মে আমি অফিসে গিয়েছিলাম। তার আগে থেকেই মেয়ে অসুস্থ ছিল। কীভাবে কী হয়েছে কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ এমন ঘটনায় এলাকায় আরও অনেকে করোনা আক্রান্ত বলে মনে করছে প্রশাসন। ওই তরুণীর বাবার সংস্পর্শে আসা ৮জনকেও চিহ্নিত করেছে রেল।

এর পরেও শহরে এখনও মাস্ক ছাড়াই অনেকে ঘোরাফেরা করছেন। সকাল-সন্ধ্যা দেদার আড্ডা জমছে চা দোকান থেকে ক্লাবে। নেই সামাজিক দূরত্ব বজায়ের বালাই। দোসর হয়েছে খোলা বাজার। শুক্রবার থেকেই খুলে গিয়েছে শহরের গোলবাজার, গেটবাজার-সহ বিভিন্ন বাজার এলাকা। প্রথম দিন থেকেই উপচে পড়ছে ভিড়। এমন পরিস্থিতিতে আরও এক করোনা আক্রান্তের খোঁজ মেলায় শঙ্কিত শহরবাসী। শ্রীকৃষ্ণপুরের বাসিন্দা পারমিতা ঘোষ বলেন, “মানুষ অকারণ মাস্ক ছাড়া বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই অবস্থায় প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যেতে ভয় লাগছে। এ বার আরও একজন আক্রান্তের খোঁজ মেলায় খুব উদ্বেগে রয়েছি।” শঙ্কিত ব্যবসায়ী মহলও। খড়্গপুর রেলের মার্চেন্ট অ্যাসোশিয়েশনের সভাপতি নিরজ জৈন বলেন, “প্রশাসন বলায় ইদের আগে আমরা দোকান খুলেছি। আমাদের ব্যবসায়ীরা সামাজিক দূরত্ব পালন করলেও ক্রেতাদের একাংশ অসচেতন। ফলে আমরা শঙ্কিত। প্রশাসনের উচিত ব্যবস্থা নেওয়া।’’ বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে কড়া পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Kharagpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy