রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
করোনা মোকাবিলায় শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের জন্য তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।
তিনি চেয়েছিলেন, তাঁর বরাদ্দ টাকায় ওই হাসপাতালের জন্য ভেন্টিলেটর এবং মনিটর কিংবা প্রয়োজনীয় অন্য কোনও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা হোক। সূত্রের খবর, ওই টাকা রূপাকে ফিরিয়ে দিচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। জেলার প্রশাসনিক স্তরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সাংসদের ওই টাকা শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালকে দেওয়া হবে না।
কেন এই সিদ্ধান্ত? পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে প্রতিবারই তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে। জবাব মেলেনি এসএমএসেরও। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের দাবি, নিয়মানুযায়ীই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ওই সূত্র জানাচ্ছে, কেন্দ্রের নির্দেশিকাতেই জানানো রয়েছে, করোনা মোকাবিলায় সাংসদ তহবিলের বরাদ্দ অর্থে পাঁচ লক্ষ কিংবা তার বেশি দামের চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা যেতে পারে। তবে সরঞ্জাম কেনা যাবে শুধুমাত্র সরকারি হাসপাতাল কিংবা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্যই। শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এখন জিন্দল গোষ্ঠীর হাতে রয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকল্পে এই হাসপাতাল পরিচালনার ভার নিয়েছে ওই গোষ্ঠী। ফলে, ওই হাসপাতাল এখন পুরোপুরি সরকারি হাসপাতাল নয়।
রূপা রাজ্যসভায় মনোনীত সাংসদ। তবে সাংসদের পাশাপাশি তিনি বিজেপি নেত্রীও বটে। ফলে টাকা ফেরানোর বিষয়টি ঘিরে স্বাভাবিক ভাবে শুরু হয়েছে রাজনীতি। রূপা অবশ্য বলেন, ‘‘এটা সরকারি হাসপাতালই।’’ একধাপ এগিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে টেলিভিশনে বলতে শোনা যাচ্ছে পাঁচ টাকা হলেও দান করুন। এই পরিস্থিতিতে ৫০ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার অর্থ বিষয়টিকে রাজনীতির রং দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ করছেন। কিন্তু বাস্তবে কী হচ্ছে তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘প্রশাসন নিয়মানুযায়ীই সঠিক পদক্ষেপ করছে। বিজেপির উচিত, এই সময়ে মানুষকে বিভ্রান্ত না করা।’’ তাঁর সংযোজন ‘‘ওরা (বিজেপি) তো মানুষের স্বার্থের কথা চিন্তা করে না। তাই এই সময়েও কুৎসা- অপপ্রচার করতে ব্যস্ত রয়েছে।’’
সূত্রের খবর, করোনা মোকাবিলায় তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে মোট ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন রূপা। ৬টি হাসপাতালের জন্য ওই অর্থ বরাদ্দ করেছেন তিনি। এর মধ্যে ৩টি এ রাজ্যের। বাকি ৩টি দিল্লির। যে ৩টি হাসপাতালের জন্য তিনি ৫০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করেছেন, তার মধ্যে রয়েছে শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালও। এই হাসপাতালে ভেন্টিলেটর নেই। অথচ এই সময়ে ভেন্টিলেটরের খুব প্রয়োজন। রূপা চেয়েছিলেন, তাঁর বরাদ্দ টাকায় ওই হাসপাতালের জন্য ভেন্টিলেটর এবং মনিটর কিংবা প্রয়োজনীয় অন্য কোনও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা হোক। তিনি জানিয়েছিলেন, অন্য কিছু করার প্রয়োজন থাকলে, নির্দেশিকা মেনে তা-ও করা হোক। তবে আপাতত টাকা ফিরিয়ে দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। বুধবার শালবনি হাসপাতালের ম্যানেজার রূপেশ মল্লিক বলেন, ‘‘সাংসদ তহবিল থেকে হাসপাতালের খাতে এখনও কোনও বরাদ্দ আসেনি। এ সংক্রান্ত কোনও চিঠিও আসেনি।’’
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই হাসপাতালের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘টাকাটা পেলে অন্তত ভেন্টিলেটরটা কেনা যেত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy