Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

দুষ্কৃতীদের গৃহবন্দি করার হুঁশিয়ারি

দুষ্কৃতীদের গৃহবন্দি করে রাখার হুঁশিয়ারি দিল কংগ্রেস। পুরভোটের মুখে খড়্গপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দুষ্কৃতী তাণ্ডব নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না করলে এমন ব্যবস্থাই নেওয়া হবে বলে জানান নেতারা। বৃহস্পতিবার খড়্গপুর টাউন থানার ওসি-র সঙ্গে দেখা করে কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধিদল। শহরের রেল এলাকার তিনটি ওয়ার্ডে সমাজবিরোধীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ জানান তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৫ ০১:০৮
Share: Save:

দুষ্কৃতীদের গৃহবন্দি করে রাখার হুঁশিয়ারি দিল কংগ্রেস। পুরভোটের মুখে খড়্গপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দুষ্কৃতী তাণ্ডব নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না করলে এমন ব্যবস্থাই নেওয়া হবে বলে জানান নেতারা। বৃহস্পতিবার খড়্গপুর টাউন থানার ওসি-র সঙ্গে দেখা করে কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধিদল। শহরের রেল এলাকার তিনটি ওয়ার্ডে সমাজবিরোধীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ জানান তাঁরা। ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন শহরের বিদায়ী পুরপ্রধান তথা রাজ্য কংগ্রেসের সদস্য রবিশঙ্কর পাণ্ডে, শহর কংগ্রেস সভাপতি অমল দাস, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী বিদায়ী পুর পারিষদ ভেঙ্কট রামনা প্রমুখ। রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “শহরের রেল এলাকার তিনটি ওয়ার্ডে কিছু দুষ্কৃতী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এই ঘটনায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। অভিযোগ জানালেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাই এ বার থানায় এসে আইসি-কে জানিয়ে গেলাম। এর পরেও পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আমরাই ওই দুষ্কৃতীদের বাড়ি ঘেরাও করে গৃহবন্দি করে রাখব।”

পুরভোটের মনোনয়ন জমার সময় থেকেই শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নানা অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল বিজেপির গলায়। এমনকী শহরের মাফিয়া শ্রীনু নায়ডুর স্ত্রী বিজেপি প্রার্থী পূজা নায়ডুও ১৮নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি-বাড়ি হুমকি চলছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন। আবার গত ২৭মার্চ ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী এস মীনাক্ষির বাড়িতে ঢুকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কিছু দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। অবশ্য এর পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি।

সমাজবিরোধীরা প্রায় রোজই বাইক টহল দিচ্ছে বলে বারবার অভিযোগ উঠেছে। এমনকী পুলিশ সুপারের নাম করে হুমকি চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে শহরের বেশ কিছু এলাকায় দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের কাজ শুরু করেছে পুলিশ। সেখানেও অভিযোগ ওঠে তবে প্রকৃত দুষ্কৃতীদের ধরার বদলে বিজেপি সমর্থিত পরিবারের নিরাপরাধ যুবকদের গ্রেফতার করছে পুলিশ। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি সমর্থক গোবিন্দ আম্মার ছোট ছেলে স্কুল ছাত্র ঈশ্বর রাওকে পুলিশ মিথ্যে অভিযোগে গ্রেফতার করেছে দাবি করে গত ৩ মার্চ থানা ঘেরাও করেন মহিলারা।

শাসক বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, পুলিশ প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার না করায় হুমকি চলছে সমানে। উঠছে চাপা সন্ত্রাসের অভিযোগও। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী এস মীনাক্ষি বলেন, “এলাকায় এখনও শান্তি নেই। একদিন কোনও মহিলা আমাদের সঙ্গে প্রচারে গেলে পরের দিন তিনি যেতে চাইছেন না। বলছেন ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু কে ভয় দেখিয়েছে তা বলছেন না। পুলিশেরও দেখা পাওয়া যাচ্ছে না।”

মঙ্গলবার রাতে কলকাতা থেকে খড়্গপুর পুলিশ সিআইডি-র সহযোগিতায় গ্রেফতার করে মাফিয়া শ্রীনু নায়ডুকে। এ বার শহরের খরিদায় ২০মার্চ একটি বোমাবাজির ঘটনায় শ্রীনুর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা ও অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তবে পরিস্থিতি বদলায় নি। বুধবার রাতে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কার্যালয়ে ঢুকে কিছু যুবক আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। এর পর কংগ্রেস কার্যালয়ে প্রার্থীকে না পেয়ে তাঁর শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস প্রার্থী বিদায়ী কাউন্সিলর ভেঙ্কট রামনা। তিনি বলেন, “আমার খোঁজে এ দিন আমাদের ওয়ার্ড কমিটির কার্যালয়, আমার নিজের বাড়ি ও শ্বশুর বাড়িতে পিস্তল নিয়ে চড়াও হয়েছিল দুষ্কৃতীরা। আমি পুলিশকে মুখে জানিয়েছি। লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। আসলে এই এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপির দুষ্কৃতীরা একসঙ্গে কাজ করায় পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”

শহরের ১৩, ১৫ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে গভীর রাত পর্যন্ত দুষ্কৃতীরা মোটর বাইকে নিয়ে টহল দিচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন কংগ্রেস নেতারা। কংগ্রেস নেতা রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “ওই তিনটি রেল ওয়ার্ডে মূলত শহরের দু’জন মাফিয়ার ছত্রছায়ায় থাকায় যুবকেরা এই হুমকি দিচ্ছে। ওই মাফিয়াদের একজন তৃণমূল ও একজন বিজেপি-র হয়ে কাজ করছে বলে শহরের মানুষ জানে। এটা ভাল খবর যে শ্রীনু নায়ডুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

কিন্তু রেল মাফিয়া রামবাবু বা আমাদেরও দলের যদি কোনও মাফিয়া থাকে তবে পুলিশ গ্রেফতার করুক। তবে বোঝা যাবে পুলিশ নিরপেক্ষ।” যদিও নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে গ্রেফতার করা ও সমস্ত এলাকায় পুলিশি টহলদারি চলছে বলে দাবি করেছে টাউন পুলিশ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE