নিসর্গ: খাঁদারানির এই সৌন্দর্যেই মুগ্ধ হন পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র
প্রকৃতিকে হাতের কাছে পাওয়া যায়, ছুঁয়ে দেখা যায় এখানে। কিন্তু তেমন ভাবে উপভোগ করার সুযোগ কই? বেলপাহাড়ি জঙ্গলের মাঝে থাকার জন্য এত দিন কোনও থাকার ব্যবস্থা ছিল না। এ বার বেলপাহাড়িতে হোম স্টে ট্যুরিজম চালু করতে উদ্যোগী হল ব্লক প্রশাসন ও বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতি।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, কলকাতার এক বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় খাঁদারানি জলাধারের নিকটবর্তী বারিঘাটি গ্রামের স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দার বাড়িতে হোম স্টে-র ব্যবস্থা করা হবে। শীতের মরসুমে পর্যটকদের ঢল দেখে উৎসাহিত হয়ে বেসরকারি সংস্থাটি হোম স্টে-র ব্যাপারে আগ্রহী হয়েছে। বেলপাহাড়ির বিডিও সন্তু তরফদারের সঙ্গে ওই সংস্থার কথাবার্তা অনেকটা এগিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই প্রকল্পের ফলে স্থানীয় আদিবাসী-মূলবাসী মানুষদের বিকল্প আয়ের সুযোগ রয়েছে। পর্যটকরাও স্থানীয়দের বাড়িতে থেকে প্রকৃতি উপভোগ করতে পারবেন। পাশাপাশি স্থানীয় খাবার এবং লোকসংস্কৃতির সম্পর্কে জানতে পারবেন ভ্রমণপিপাসু মানুষ। পর্যটক ও স্থানীয়, উভয়ের স্বার্থেই বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে একযোগে প্রকল্পের রূপায়ন করতে চলেছে বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতি। সূত্রের খবর, চলতি মাসেই এ ব্যাপারে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন সংস্থার প্রতিনিধিরা।
আগে বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোরে প্রকৃতির মাঝে সরকারি বন বাংলোয় থাকার সুযোগ ছিল পর্যটকদের। সেই বাংলো তৈরি হয়েছিল ছয়ের দশকে। এক সময়ে বাংলা চলচ্চিত্রের শ্যুটিংও হয়েছিল সেখানে। কিন্তু ২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ল্যান্ডমাইন ফাটিয়ে বাংলোটি ধূলিসাৎ করে দেয় মাওবাদীরা। তার পর আ বেলপাহাড়িতে প্রকৃতির মাঝে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা ছিল না। বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে ২০১২ সালে বেলপাহাড়িতে হোম স্টে ট্যুরিজমের ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু করে বন দফতর। সে সময় কাঁকড়াঝোর গ্রামে কয়েকটি বাড়িও চিহ্নিত করা হয়েছিল। তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি। সম্প্রতি কাঁকড়াঝোরের এক গ্রামবাসীর মাটির দোতলা বাড়িতে বেসরকারি হোম স্টে চালু হয়েছে।
প্রশাসন অবশ্য নির্দিষ্ট কোনও গ্রামে নয়, বরং প্রাকৃতিক বৈচিত্রপূর্ণ একাধিক গ্রামেই হোম স্টে চালু করতে চায় তারা। সন্তুবাবু বলেন, “স্থানীয়দের বাড়িতে পরিকাঠামো গড়ে দেবে বেসরকারি সংস্থা। প্রথমে বারিঘাটি গ্রামে হোম স্টে চালু হবে। প্রকল্পের সাফল্যের হার দেখে অন্য গ্রামেও হোম স্টে চালু করা হবে।” পর্যটকদের থাকা-খাওয়া বাবদ যা আয় হবে, তার একটি অংশ সংশ্লিষ্ট বাড়ির মালিক ও গ্রামবাসী পাবেন বলে জানান বিডিও। তিনি আরও জানান, হোম স্টে চালুর আগে স্থানীয়দের গাইডদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এখন পর্যটকদের অপেক্ষা একটাই— গ্রামের বাড়িতে বসে জোৎস্না রাতে পাহাড় ঘেরা খাঁদারানি হ্রদের সৌন্দর্য উপভোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy