আহত পুলিশ কর্মী। নিজস্ব চিত্র
‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে দিতে পুলিশের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। বেধড়ক মারধর করা হল পুলিশ কর্মীদের। জখম তিন পুলিশকর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।
বিজেপির বিজয় মিছিল ঘিরে সোমবার এই কাণ্ড ঘটেছে কেশপুরের এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিশ্বনাথপুরে। এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যালয়টি রয়েছে বিশ্বনাথপুরে। সেখানে ভোটের ফলপ্রকাশের পরে পুলিশ ক্যাম্প করা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন দুপুরে পুলিশ ক্যাম্পে চড়াও হয় বিজেপির একদল লোক। ক্যাম্পের সামনে ছিলেন সরিফ আলি খান, উকিল মুর্মু, নিশিকান্ত রায়। সরিফ পুলিশের এসআই। উকিল, নিশিকান্ত এনভিএফ। এই তিনজনই বিজেপির লোকেদের হাতে প্রহৃত হয়েছেন বলে অভিযোগ। প্রথমে তাঁদের কেশপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘পুলিশ কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। কেশপুরের এই ঘটনায় জড়িদের খোঁজ চলছে।’’
ঘাটাল লোকসভার অন্তর্গত কেশপুর বিধানসভায় এ বারও লিড পেয়েছে তৃণমূল। ঘাটালে ফের জিতে সাংসদ হয়েছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেব। তবে ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকেই কেশপুরের নানা এলাকায় বিজেপির পতাকা দেখা যাচ্ছে, বাধছে সংঘাতও। লোকসভায় দেশব্যাপী জয় উদ্যাপনে এ দিন বিশ্বনাথপুরে বিজয় মিছিল বের করে বিজেপি। সেই মিছিলে ঘন ঘন ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান ওঠে। স্লোগান দিতে দিতেই পুলিশকর্মীদের মারধর করা হয়, তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল কার্যালয় ভাঙচুর হয় বলে অভিযোগ।
তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান বলেন, ‘‘বিজেপির লোকেরা হামলা করেছে। শুরুতে ওরা পুলিশ ক্যাম্পে হামলা করে। পুলিশ কর্মীদের মারধর করে। পরে আমাদের দলের অঞ্চল কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায়।’’ হামলায় দলীয় যোগ অবশ্য মানতে নারাজ বিজেপি। তারা জনরোষের তত্ত্ব দিচ্ছে। কেশপুরের বিজেপি নেতা তপন মাঝি বলেন, ‘‘আমাদের কেউ হামলা করেনি। তৃণমূল এলাকার মানুষের উপরে অনেক অত্যাচার করেছে। সেই ক্ষোভে স্থানীয়রা কিছু করে থাকতে পারে।’’ তপন আরও জানান, এ দিনের মিছিলের অনুমতি দেয়নি পুলিশ।
এ বার লোকসভা ভোটের প্রচারপর্ব থেকেই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে বাংলায়। পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেই যাত্রাপথে জয় শ্রীরাম শুনে শুনে মেজাজ হারাতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ভোটের পরে একই ছবি ফিরেছে উত্তর ২৪ পরগনায়। এ বার বিজেপির ‘জয় শ্রীরাম’কে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার ডাক দিয়েছেন মমতা। কেশপুরের বিশ্বনাথপুরে অবশ্য ‘প্রতিরোধ’ করার জায়গায় নেই তৃণমূল। দলের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী এলাকাছাড়া। সেই ‘সুযোগেই’ এ দিন বিজয় মিছিলকে সামনে রেখে এলাকায় ‘দাপিয়ে’ বেড়িয়েছে বিজেপির লোকজন।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘হামলা, মারধরে যারা যুক্ত তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থাই নেবে।’’ হামলায় জড়িত বিজেপির লোকেদের খোঁজে এদিন সন্ধ্যায় কেশপুরের একাধিক এলাকায় হানা দিয়েছে পুলিশ। অবশ্য রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy