Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে ঝরল রক্ত
political clash

মৃত গেরুয়া সমর্থক

ঘটনার প্রতিবাদ ও পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে বৃহস্পতিবার দাঁতন থানার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও থানা ঘেরাও করে বিজেপি। খড়্গপুর শহরের তিন ও মেদিনীপুরের দু’জায়গায় অবরোধ হয়।

মেদিনীপুর মেডিক্যালের পথে। নিজস্ব চিত্র

মেদিনীপুর মেডিক্যালের পথে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দাঁতন ও পিংলা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২০ ০২:১০
Share: Save:

করোনা পরিস্থিতিতেও রাজনৈতিক সংঘর্ষ। প্রাণ গেল এক যুবকের।

বুধবার সন্ধ্যায় দাঁতন ১ ব্লকের চকইসমাইলপুরের কুশমী এলাকায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে মৃত্যু হল পবন জানার (২৫)। মৃত যুবক তাদের সমর্থক বলে দাবি বিজেপির। তৃণমূলের দিকেই আঙুল তুলেছে তারা। যদিও তৃণমূলের বক্তব্য, এর পিছনে রয়েছে পুরনো হিংসা ও গ্রাম্য বিবাদ। ঘটনার প্রতিবাদ ও পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে বৃহস্পতিবার দাঁতন থানার সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও থানা ঘেরাও করে বিজেপি। খড়্গপুর শহরের তিন ও মেদিনীপুরের দু’জায়গায় অবরোধ হয়।

বুধবার সকালে গ্রামের বিজেপি সমর্থক রঞ্জিত দাস দলের কর্মসূচি ‘গৃহ সম্পর্ক’ অভিযানে বেরিয়েছিলেন। বিজেপির অভিযোগ, সে সময় তৃণমূলের কয়েকজন তাঁকে মারধর করে। বিকেলে বিজেপির কয়েকজন মারধরের ঘটনার জবাব চাইতে এলে ফের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। কুশমী বুথের বিজেপির সভাপতি অর্ধেন্দু দাস মহাপাত্র ছাড়াও আহত হন গুণধর জানা, রাজবিহারী মহাপাত্র, পবন জানা এবং তাঁর বাবা অজয়। মাথায় আঘাত লাগে বাবা ও ছেলের। আহতদের দাঁতন গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে অজয় ও পবনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের স্থানান্তরিত করা হয়। পরে পবনের অবস্থার অবনতি হলে বুধবার রাতে তাকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই বৃহস্পতিবার তাঁর মৃত্যু হয়।

বিজেপির অভিযোগ, লাঠি, কাঠের বাটাম, রড, ভোজালি দিয়েই মারধর করা হয়। দাঁতন ১ ব্লকের বিজেপির দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি রঞ্জিত মল্লিক বলেন, ‘‘গৃহ সম্পর্ক অভিযানের মিটিং চলছিল। তখনই অতর্কিতে মারধর করা হয়েছে।’’ দাঁতনের বিধায়ক তথা দাঁতন ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বিক্রমচন্দ্র প্রধান বলেন, ‘‘ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই। এক জায়গায় বসে মদ খাওয়ার পর এই ঘটনা ঘটেছে। তবে কোনও মৃত্যুর ঘটনাই কাম্য নয়।’’

বর্তমানে এলাকা থমথমে। পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল-পুলিশ যোগসাজশেই এই ঘটনা ঘটেছে। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘এটা তৃণমূল নয়। তৃণমূল-পুলিশের যোগসাজশে এই ঘটনা ঘটেছে এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কয়েকদিন ধরেই গোলমাল চলছিল। পুলিশকে বলেও কাজ হয়নি।’’ যোগসাজশের অভিযোগ উড়িয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’
পরিবার সূত্রের খবর, পবন মুম্বইতে থেকে একটি হোটেলে কাজ করতেন। আঠারোদিন আগে তিনি বাড়ি ফেরেন। বিজেপির কর্মসূচিতে ইদানীং যোগ দিচ্ছিলেন। গৃহ সম্পর্ক অভিযানেও বেরনোর কথা ছিল তাঁর। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি মৃত যুবকের বাবা অজয়। তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ছেলের মৃত্যুর খবর জানেন না। তিনি বলছিলেন, ‘‘দু’ভাই মুম্বইতে কাজ করত। কয়েকদিন আগে ফিরেছে। আমরা দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ করেই তৃণমূলের লোকেরা এসে মারধর করল। ছেলে কলকাতায় ভর্তি। কী যে হবে কিছুই জানি না।’’

বুধবার রাতে থেকে এ দিন সকাল পর্যন্ত তৃণমূল-বিজেপি দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে পিংলা ব্লকের ক্ষীরাই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। বুধবার রাতে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সুরজচকে তৃণমূলের কয়েকজন নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেছিলেন। সেই সময়েই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিজেপির কয়েকজন কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ। এরপর থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। যার রেশ গড়ায় এ দিন সকাল পর্যন্ত।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Political Clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy