গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালের বহির্বিভাগে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র
আন্দোলন-বিক্ষোভ-কর্মবিরতি। রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে স্বাস্থ্য-সঙ্কট। তারই মাঝে ভিন্ন চিত্র গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে। আন্দোলনের উত্তাপহীন এই হাসপাতালের সব বিভাগই সচল রয়েছে। রোগীদের ভিড় উপচে পড়ছে বহির্বিভাগে। পুরুষ-মহিলা দুই ওয়ার্ডেই ঠাসাঠাসি রোগীদের পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসক থেকে নার্স— সকলেই।
পাশের ব্লক গোয়ালতোড়ের কেওয়াকোল গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরাপত্তার দাবিতে কালো ব্যাজ পরে গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে মিছিল করেছেন। চন্দ্রকোনা রোডের দ্বারিগেড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও নিরাপত্তার দাবিতে সরব হয়েছেন। গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে ছবিটা একেবারে ব্যতিক্রমী। এখানে দাবিদাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ নেই, মিছিল নেই, এমনকি হাসপাতাল ঘুরে চোখে পড়ল না একটা পোস্টারও।
অথচ ৬০ শয্যার এই হাসপাতালও পরিকাঠামো রুগ্ণ। নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সুরক্ষার জন্য নেই নিরাপত্তারক্ষীও। ৮ জন চিকিৎসক থাকার কথা, কিন্তু আছেন মাত্র ৩ জন। নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও অন্য কর্মী যেখানে থাকার কথা ১৫৬ জন, সেখানে আছেন মাত্র ৮৬ জন। প্রতিদিন এই হাসপাতালে অন্তর্বিভাগে রোগী ভর্তি হয় ৭০-৮০ জন। আর দিনে বহির্বিভাগে রোগী আসেন তিনশোরও বেশি। এই হাসপাতালেও চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত মাসেই রোগীর বাড়ির লোকের হাতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে দু’টি।
খড়কুশমা থেকে ছেলেকে নিয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন আতিয়ার খান। তিনি বলেন, ‘‘চার দিকে শুনছি হাসপাতালগুলিতে আন্দোলন হচ্ছে, কাজ হচ্ছে না। এখানে এসে তো দেখছি উল্টো, আন্দোলন বিক্ষোভ কিছুই হচ্ছে না, ডাক্তারবাবুরা দিব্যি রোগী দেখছেন।’’ সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে নিয়ে বহির্বিভাগের মেডিসিন বিভাগে এসেছিলেন পিয়াশালার আদিত্য রায়। স্ত্রীকে বেঞ্চে বসিয়ে নিজে দাঁড়িয়েছিলেন লাইনে। আদিত্যও বললেন, ‘‘ভেবেছিলাম ঘুরে যেতে হবে।এসে দেখছি আউটডোরে লম্বা লাইন। ডাক্তারবাবুরা তো রোগী দেখছেন।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরাও জানালেন, গড়বেতা-সহ জেলার গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে স্বাভাবিক কাজকর্মই চলছে।
গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সরা বলছেন, ‘‘এখানে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী কম। পরিকাঠামোও ঠিকঠাক নেই। প্রতিদিন প্রচুর রোগী আসেন। তাঁদের কথা ভেবেই আমরা পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছি। চিকিৎসা ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটুক, এটা তো আমরা চাই না।’’ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস মিদ্যার বক্তব্য, ‘‘নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও যেটুকু আছে তা দিয়েই পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে এই হাসপাতাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy