Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

পঞ্চায়েতে হামলা, নিরাপত্তা দাবি প্রধানের

যখন তখন পঞ্চায়েত অফিসে চড়াও হয়ে হামলা-নিগ্রহ করা হচ্ছে পঞ্চায়েত কর্মীদের। পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার ফতোয়া দিয়ে চলছে হুমকি। স্থানীয় তৃণমূলের একাংশের এমন আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে শেষপর্যন্ত পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ করে দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছেন পঞ্চায়েত কর্মীরা।

তালাবন্ধ পঞ্চায়েত অফিস। শুক্রবার নিজস্ব চিত্র

তালাবন্ধ পঞ্চায়েত অফিস। শুক্রবার নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৫২
Share: Save:

যখন তখন পঞ্চায়েত অফিসে চড়াও হয়ে হামলা-নিগ্রহ করা হচ্ছে পঞ্চায়েত কর্মীদের। পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার ফতোয়া দিয়ে চলছে হুমকি। স্থানীয় তৃণমূলের একাংশের এমন আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে শেষপর্যন্ত পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ করে দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছেন পঞ্চায়েত কর্মীরা। ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম ব্লকের জামিরাপাল পঞ্চায়েতে এই ঘটনায় অস্বস্তিতে শাসক দলের সস্থানীয় নেতৃত্ব।

প্রতিকার চেয়ে ওই পঞ্চায়েতের কর্মীরা শুক্রবার নয়াগ্রামের বিডিওকে অভিযোগপত্র দিয়েছেন। স্থানীয় তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতা ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে নয়াগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের প্রধান অপর্ণা পৈড়া। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত প্রধান অপর্ণাদেবী নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি উজ্জ্বল দত্তের অনুগামী। সেই কারণে পঞ্চায়েতে উজ্জ্বলবাবুর অনুগামীদের প্রভাব বেশি। অন্যদিকে, তৃণমূলের জামিরাপাল অঞ্চল কমিটির কার্যকরী সহ-সভাপতি সঞ্জীব দাস মহাপাত্র হলেন তৃণমূলের নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি তথা নয়াগ্রামের বিধায়ক দুলাল মুর্মুর অনুগামী। অভিযোগ উঠেছে, বিরুদ্ধে গোষ্ঠীর লোক হওয়ায় সঞ্জীববাবুর লোকজন পঞ্চায়েতের কাজের বরাত পাচ্ছেন না। এ নিয়ে কয়েকমাস আগে পঞ্চায়েত অফিসে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে সঞ্জীববাবুর গোষ্ঠীর এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েতের নির্বাহী সহায়ক মলয় মণ্ডলকে মারধরের অভিযোগে গ্রেফতার হন দুর্গাচরণ গোস্বামী নামে ওই ঠিকাদার। এর পর তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। ফলে তিনি আর কাজের বরাত পাচ্ছেন না। তারপর থেকেই সঞ্জীববাবু ও তাঁর দলবল প্রায়ই পঞ্চায়েতের কমীদের হেনস্থা করছেন বলে অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চায়েত অফিশে সঞ্জীববাবু দলবল নিয়ে চড়াও হন বলে অভিযোগ। প্রধান সেই সময় ছিলেন না। পঞ্চায়েতের নির্বাহী সহায়ক মলয় মণ্ডল ও অন্যান্য পঞ্চায়েত কর্মীদের অফিসের একটি ঘরে দীর্ঘক্ষণ তালাবন্ধ করে রাখা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।

শুক্রবার প্রধান ও পঞ্চায়েত কর্মীরা বিডিওর সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানান। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন উজ্জ্বলবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত জামিরাপাল অঞ্চল যুব তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্র মাহাতো। পরে নয়াগ্রাম থানাতেও অভিযোগ দায়ের করেন অপর্ণাদেবী। তিনি বলেন, “উপযুক্ত নিরাপত্তা না পেলে পঞ্চায়েত অফিস খোলা রাখার ঝুঁকি নেওয়া যাচ্ছে না।” সঞ্জীববাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বিধায়ক দুলাল মুর্মু বলেন, “আমার কাছে কেউ কোনও অভিযোগ করেননি। দলীয় স্তরে খোঁজ নেব। এখানে কোনও গোষ্ঠী নেই।” বিডিও বিজয় সরকার বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। পঞ্চায়েত অফিস চলাকালীন কর্মীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে। টেন্ডার নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখা হবে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE