—প্রতীকী চিত্র।
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ রেখে তৃণমূলের রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সম্মেলন যোগদানের অভিযোগ উঠল। শনিবার পিংলার মালিগ্রাম পঞ্চায়েতের ছোটখেলনা প্রেক্ষাগৃহে ব্লকস্তরের এই সম্মেলনের আয়োজন হয়। সম্মেলনে অন্যান্য রাজ্য সরকারি কর্মীদের পাশাপাশি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাও যোগ দেন। বিরোধীদের অভিযোগ, এ দিন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ রেখে ওই কর্মীরা সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তাঁদের দাবি, কর্মীরা অসুস্থ থাকায় কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ ছিল। তবে অধিকাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রই এ দিন খোলা ছিল। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ করার পরেই ওই কর্মীরা সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন।
বিরোধীদের অভিযোগ, পিংলার কুসুমদা ও জামনা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার অধিকাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র শনিবার বন্ধ ছিল। কুসুমদা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোগ্রাম, মুণ্ডমারি, বীরসিংহপুর, সুদচরা-সহ বহু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ ছিল। অনেকেই ওই সব কেন্দ্রে গিয়ে খালি হাতে ফিরে এসেছেন। পিংলার বাসিন্দা জেলা বিজেপি নেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “এখন তৃণমূলের কোনও অনুষ্ঠানে সাধারণ লোক যায় না। তাই স্বনির্ভর দল, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের নিয়ে গিয়ে জমায়েত করা হয়।’’
তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সম্মেলনে ব্লকের সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ করে কর্মীরা গিয়েছিলেন। ফলে শিশু ও মায়েরা খাবার পায়নি। এটা মেনে নেওয়া যায় না।”
একই অভিযোগ শোনা গিয়েছে সিপিএমের মুখেও। সিপিএমের পিংলা লোকাল কমিটির সম্পাদক তপন দাস বলেন, “বহু এলাকায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ করে কর্মীদের তৃণমূলের সম্মেলনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ওদের প্রতিটি অনুষ্ঠানে এখন গায়ের জোরে কর্মীদের নিয়ে গিয়ে ভিড় বাড়ানো হয়। এতে পরিষেবা বিঘ্নিত হয়।”
অনেক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ থাকায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারাও। এ দিন গোগ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, “সকালে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে গিয়ে দেখলাম বন্ধ রয়েছে। শুনলাম পাশাপাশি অনেকগুলি কেন্দ্রই বন্ধ।” মুণ্ডমারির বাসিন্দা মিনতি মাইতির অভিযোগ, “সকালে দেখলাম অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে দিদিরা এলেন। কিছুক্ষণ পরেই সকলে চলে গেলেন। শুনলাম চাল-ডাল নেই। তাই রান্না হবে না।”
কেন এ ভাবে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ করে কর্মীদের সম্মেলনে আনা হল?
উত্তরে তৃণমূলের পিংলা ব্লক সভাপতি শেখ সাবরাতি বলেন, “কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীদের শরীর অসুস্থ থাকায় আসতে পারেননি বলে শুনেছি। তবে অধিকাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রই খোলা ছিল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের অনুষ্ঠান তো সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ছুটির পরেই তো কর্মীরা সম্মেলনে এসেছেন।”
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ থাকায় অনেক জায়গায় উত্তেজনাও ছড়ায়। পিংলার বিডিও অনিন্দিতা রায়চৌধুরী বলেন, “আমি বিষয়টি জানতে পেরে সিডিপিও-র সঙ্গে কথা বলেছিলাম। উনি আমাকে জানিয়েছেন, প্রতিটি কেন্দ্র খোলা ছিল। এ নিয়ে আবার খোঁজ নেব।” এ দিন রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সম্মেলনে ২৬ জনের কমিটি গঠিত হয়। সম্মেলনে এ দিন অনূপ দাসকে ব্লক সভাপতি ও প্রশান্ত দাসকে ব্লক সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy